‘রেড জোন’ থেকে আর ‘অরেঞ্জ জোনে’ যাওয়া আপাতত সম্ভব হয়নি। কিন্তু জেলায় করোনা আক্রান্তের হদিস পেতে গণ্ডিবদ্ধ (কন্টেনমেন্ট) এলাকায় দ্রুত নমুনা পরীক্ষার উপরে জোর দিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। মঙ্গলবার জেলাশাসক পার্থ ঘোষ হলদিয়ায় করোনা আক্রান্ত এলাকা ঘুরেও দেখেন।
কেন্দ্রীয় সরকারের ‘হটস্পট’ তালিকায় রয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর। রাজ্য সরকারের তরফেও ‘রেড জোন’ হিসেবে রয়েছে জেলা। সোমবার রাজ্য সরকার জেলার গণ্ডিবন্ধ এলাকার তালিকা প্রকাশ করেছে। তাতে এগরা পুরসভা, হলদিয়া পুরসভা, হলদিয়া ব্লক, সুতাহাটা ব্লক, শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লক, পাঁশকুড়া পুরসভার মতো আটটি এলাকা রয়েছে। ওই সব এলাকায় যাতে নতুন করে করোনার সংক্রমণ না ছড়ায়, সে জন্য যেমন প্রশাসনিক নজারদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে, তেমনই করোনার উপসর্গ থাকা বাসিন্দাদের চিহ্নিত করে দ্রুত নমুনা পরীক্ষার উপরেও জোর দেওয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, গণ্ডিবদ্ধ এলাকার বাসিন্দাদের নমুনা পরীক্ষায় জোর দিতে তমলুক জেলা হাসপাতাল, হলদিয়া মহকুমা, পাঁশকুড়া ও এগরা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের সঙ্গে জেলায় আরও পাঁচটি হাসপাতালে নমুনা সংগ্রহ কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। প্রথম দফায় গণ্ডিবদ্ধ এলাকায় তিন কিলোমিটারের মধ্যে থাকা বাড়ি বাড়ি ঘুরে বাসিন্দাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করছেন স্বাস্থ্য কর্মীরা। করোনা উপসর্গ থাকা বাসিন্দাদের চিহ্নিত করে তাঁদের নমুনা পরীক্ষা করার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত পূর্ব মেদিনীপুর স্বাস্থ্য জেলা এলাকায় করোনা উপসর্গ থাকা ৮০৩ জন বাসিন্দার নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। অর্থাৎ প্রতি এক লক্ষে ২৩ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। যা রাজ্যের গড় হিসাবের চেয়ে অনেকটাই বেশি বলে জানাচ্ছেন স্বাস্থ্য কর্তারা। একই ভাবে, নন্দীগ্রাম স্বাস্থ্য জেলা এলাকার ১৬২ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘গণ্ডিবদ্ধ এলাকায় নজরদারি বৃদ্ধি ও নমুনা পরীক্ষার পাশাপাশি জেলার সর্বত্র করোনা উপসর্গ থাকা ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে নমুনা পরীক্ষায় জোর দেওয়া হয়েছে।’’
লালারসের নমুনা পরীক্ষার পাশাপাশি, গণ্ডিবদ্ধ এলাকার বাসিন্দাদের বাইরে যাওয়ায় ও বহিরাগতের প্রবেশ বন্ধ করতে এলাকাগুলি ‘সিল’ করে নজরদারি চালানো হচ্ছে। এলাকার প্রত্যেক বাসিন্দাদের মাস্ক ব্যবহার করতে বোঝানো হচ্ছে। ইতিমধ্যে শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লক এলাকার দু’টি গ্রামের সমস্ত বাসিন্দাদের সরকারিভাবে মাস্ক দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া, স্থানীয় জনবহুল বাজারগুলিতে ভিড় এড়াতে দোকানপাট খোলা রাখার সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এজন্য পুলিশ ও প্রশাসনের তরফে নিয়মিত নজরদারি করা হচ্ছে।