বই বিক্রি করছেন জেলা সম্পাদক সুশান্ত ঘোষ। মেদিনীপুরে। —নিজস্ব চিত্র।
পুজো কমিটির মাথায় বা মণ্ডপের উদ্বোধনে তাঁরা থাকেন না। পুজোর আবহে জেলার বিভিন্ন এলাকায় বামপন্থী মতাদর্শমূলক বিভিন্ন বই বিক্রির দোকান দেন বামফ্রন্ট নেতৃত্ব। এবার দুর্গা পুজোয় সেই সব দোকান থেকে বই বিক্রির আয় কয়েকগুণ বড়ে গিয়েছে বলে জানাচ্ছেন তাঁরা। এ বছরের পঞ্চায়েত নির্বাচনের পরে পূর্ব মেদিনীপুরে বিরোধী বিজেপি তুলনামূলক ভাবে ভাল ফল করেছে। এমন আবহে পুজোয় বামেদের স্টল থেকে বই ভাল বিক্রির বিষয়টি দেখে আগামী বছরের লোকসভা ভোটে দলের ফলাফল নিয়ে কিছুটা হলেও আশাবাদী জেলা নেতৃত্ব।
২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে জেলায় ১৬টি আসনের মধ্যে ন’টিতে তৃণমূল এবং সাতটিতে জিতেছিল বিজেপি। একটি আসনও পায়নি বামেরা। আশানুরূপ ফল মেলেনি এবার পঞ্চায়েত নির্বাচনেও। এমন অবস্থায় পুজোয় পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বিভিন্ন পুজোর মণ্ডপের কাছে সিপিএমের ‘বুক স্টল’ থেকে বই বিক্রি করে আয় বৃদ্ধি পেয়েছে। দলীয় সূত্রের খবর, এবার তমলুক, হলদিয়া, কাঁথি ও এগরা মহকুমার বিভিন্ন এলাকা মিলিয়ে মোট ৫৮টি স্টল করেছিলেন স্থানীয় সিপিএম নেতৃত্ব। ওই সমস্ত ‘বুক স্টলে’ পুজোর পাঁচ দিনে প্রায় আড়াই লক্ষ টাকার বই বিক্রি হয়েছে। যা গত বছরের এক লক্ষ ৬০ হাজার টাকার চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ বেশি। এমনকী, নন্দীগ্রাম এবং খেজুরির মতো সিপিএমের কাছে স্পর্শকাতর এলাকাতেও এবার বই বিক্রিতে ভাল সাড়া পেয়েছে বলে দাবি করেছেন দলের জেলা নেতৃত্ব।
২০০৭ সালে জমিরক্ষা আন্দোলন ঘিরে জেলায় সিপিএম তথা বামফ্রন্টের সাংগঠনিক শক্তির বিপর্যয় ঘটে। ২০১১ সালে রাজ্যে পালাবদলের পর বামেদের আরও শক্তিক্ষয় হয়। নন্দীগ্রাম ও খেজুরিতে সিপিএমের অধিকাংশ দলীয় অফিস বন্ধ হয়ে যায়। তৃণমূলের শক্তঘাটি হিসেবে চিহ্নিত হয় নন্দীগ্রাম ও খেজুরি। তবে বর্তমানে রাজনৈতিক সমীকরণটা কিছুটা পাল্টেছে। আসন না পেলেও হারানো জমি কিছুটা ফিরে পাচ্ছে বামেরা। এমন আবহে নন্দীগ্রামের তেখালি বাজারে পুজোয় বুক স্টল দেওয়া হয়েছিল। নন্দীগ্রাম বাসস্ট্যান্ড ও রেয়াপাড়া বাজার মিলিয়ে নন্দীগ্রামে তিনটি বুক স্টল করা হয়েছিল। নন্দীগ্রামের পাশেই খেজুরির কুঞ্জপুর, কলাগেছিয়া ও হেড়িয়া বাজার মিলিয়ে তিনটি বুক স্টল করা হয়েছিল।
দলীয় সূত্রের খবর, শুধু নন্দীগ্রামের স্টলগুলি থেকেই প্রায় ১১ হাজার টাকা, খেজুরির স্টলগুলি থেকে ১৬ হাজার টাকার বই বিক্রি হয়েছে। সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলী সদস্য হিমাংশু দাস বলেন, ‘‘কমিউনিস্ট পার্টি কী এবং কেন, কমিউনিস্ট পার্টির ইস্তাহার, সাচ্চা কমিউনিস্ট কী করে হতে হয় এবং ধর্মীয় ফ্যাসিবাদ বিষয়ে বিভিন্ন বই বেশি বিক্রি হয়েছে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘আসলে তৃণমূল ও বিজেপি সরকারের কার্যকলাপ দেখে মানুষের আশা ভঙ্গ হয়েছে। তাই নতুন প্রজন্মের অনেকেই বামপন্থায় ঝুঁকছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy