আমপান কেড়ে নিয়েছে মাথা গোঁজার ঠাঁই। স্বামী দিনরাত ভ্যানরিকশা নিয়ে ঘুরে বেড়ান শহরের যত্রতত্র। কখনও মেলা-পার্বণে রঙিন বেলুন কাঁধে বেরিয়ে পড়েন বিক্রি করতে। জীবন সংগ্রামের এমনই এক যোদ্ধা এবার পুরভোটের ময়দানে লড়াইয়ে নেমেছেন। কাঁথি শহরের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মিন্নাহার বিবিকে এবার পুরভোটে তাদের প্রার্থী করেছে সিপিএম।
কপালকুণ্ডলা এলাকায় এক চিলতে মাটির বাড়ি। উপরে ত্রিপলের ছাউনি। মাথা গোঁজার শেষ সম্বলটুকু ভেঙে পড়েছে বছর দুয়েক আগে ২০২০ সালের আমপানে। ভাঙাচোরা ছাউনিতেই কোনওরকমে দিন গুজরান করে চলেছেন দম্পতি। শহরের অলিগলি ঘুরে ভ্যানরিকশা চালান মিন্নাহারের স্বামী শেখ শামসুন্নাহার। সারাদিন প্যাডেলে পা চালিয়ে দিনের শেষে বড়জোর ১০০ থেকে ১৫০ টাকা আয়। তা দিয়ে সংসারের চাকা চলে না। তাই সন্ধে নামলে রং-বেরঙের বেলুনের বাঁশের খাঁচা কাঁধে বাজারে-মেলায় ঘুরে বেড়ান শামসুন্নাহার। আমপানে অনেকেরই বাড়ি ভেঙেছিল। পাড়ার শ’চারেক দুঃস্থ পরিবারের লোকেদের নিয়ে ত্রাণ পাওয়ার জন্য মহকুমা শাসকের অফিসে গিয়েছিলেন। সেবার অনেকেরই ত্রাণ জুটেছিল। তবে মিন্নেহার ও শামসুন্নাহার ত্রাণ পাননি। কেন পাননি তার উত্তর আজও জানা নেই তাঁদের। গলায় আক্ষেপের সুর নিয়েই পুরভোটের মনোনয়ন তুলতে যাওয়ার আগে শামসুন্নাহার বলেন, ‘‘আমরা পাইনি তো কী হয়েছে! যারা পেয়েছে তারাও তো আমারই মতো। কী আর করা যাবে।’’
দারিদ্রসীমার নীচে বসবাসকারীদের তালিকায় নাম থেকেও আজ পর্যন্ত জোটেনি প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার বাড়ি। অভাবকে সঙ্গী করেই চলছে স্বামী-স্ত্রীর প্রতিদিনের লড়াই। তারপরেও ভোটের ময়দানে কেন?