বড় সভা-সমাবেশ নয়। বাড়ি বাড়ি গিয়ে, এমনকী ফোন, এসএমএসে প্রচারে জোর দিচ্ছে সিপিএম।
প্রার্থী তালিকা ঘোষণার আগে থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে প্রচার। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সিপিএমের জেলা সম্পাদক তরুণ রায় বলেন, ‘‘প্রার্থী তালিকা ঘোষণার সঙ্গে প্রচারের সম্পর্ক নেই। আমরা প্রচারের যে মূল কাজ তা অনেকদিন আগে থেকেই শুরু করে দিয়েছি। তা চলছেও।’’ আর সেখানেই গুরুত্ব পাচ্ছে নিবিড় জনসংযোগ। সিপিএমের দলীয় সূত্রে খবর, বড় সভা এড়িয়ে যাওয়ার পিছনে কিছু কারণ রয়েছে। প্রথমত, দল ক্ষমতায় না থাকায় কত লোকের জমায়েত করা যাবে তা নিয়ে সংশয় থেকেই যায়। আর বিশেষ লোক না হলে কর্মীদের মনোবলে চিড় ধরবে। দ্বিতীয়ত, সমাবেশে যাঁরা আসবেন তাঁদের চিহ্নিত করে তৃণমূল হামলা চালাতে পারে। এই পরিস্থিতিতে প্রযুক্তি-প্রচার কাজে দেবে বলেই আশা সিপিএমের। দলের এক নেতার কথায়, “কিছু গ্রামে আমরা বাড়িতেও যাচ্ছি না। ফোন করে, এসএমএসে প্রচার চালাচ্ছি। বাড়িতে গেলেই তৃণমূলের নজর সে দিকে চলে যাবে।’’
এক সময় পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা ছিল ‘লাল দুর্গ’। ২০১১ সালে পরিবর্তনের ঝড়েও এই জেলাতে তৃণমূল-কংগ্রেস জোট নিরঙ্কুশ হয়নি। এ বার তৃণমূল একা লড়ছে। উল্টে সিপিএমের জোট হচ্ছে কংগ্রেসের সঙ্গে। সেটা হলে কংগ্রেসের বরাবরের জোটসঙ্গী ঝাড়খণ্ড পার্টি (নরেন)-র সঙ্গেও বামেদের আসন বোঝাপড়া হবে। ফলে, তৃণমূলকে টক্কর দেওয়ার একটা সম্ভাবনা থাকছেও। তা ছাড়া, কেশপুর, গড়বেতা, নারায়ণগড় থেকে শুরু করে জেলার সর্বত্রই ঘরছাড়া সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের একটা বড় অংশ এলাকায় ফিরেছেন। তাই গত পঞ্চায়েত এবং লোকসভা নির্বাচনে সে ভাবে রাস্তায় না নামলেও এ বার পরিস্থিতিটা আলাদা। তা ছাড়া, শাসক তৃণমূলের কাজকর্ম নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যেও ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। সব মিলিয়ে পঞ্চায়েত ও লোকসভা নির্বাচনের কৌশল থেকে বেরিয়ে এ বার ময়দানে নামতে চলেছে সিপিএম।
সিপিএম সূত্রে খবর, বাড়ি বাড়ি প্রচার, পাড়া বৈঠক, ছোট ছোট পথসভা, মিছিলে এ বার বেশি জোর দেওয়া হচ্ছে। কোন কোন নেতা বাড়ি বাড়ি যাবেন তার উপরেও রয়েছে সতর্ক দৃষ্টি। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, যে সব নেতার নামে জনমানসে বিরূপ প্রতিক্রিয়া রয়েছে, তাঁদের যেমন প্রার্থী করা হচ্ছে না, তেমনি প্রচারেও পাঠানো হবে না। যাঁদের ভাবমূর্তি স্বচ্ছ, তাঁরাই প্রচার করবেন। তাই এবার ছাত্র ও যুব সংগঠনকে এই প্রচারের ভার দেওয়া হয়েছে একটু বেশি। তবে তরুণবাবু বলেন, “তা বলে দু’-একটা বড় সমাবেশ হবে না, এমন নয়। সমাবেশও হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy