দীর্ঘ জটিলতার পর প্রশাসনের হস্তক্ষেপে গত বছর করোনায় মৃতদেহ সৎকারের জন্য পুরসভার জায়গায় শ্মশান তৈরি হয়। অভিযোগ, অন্ত্যেষ্টি কাজের জন্য পুরসভার কোনও কর্মী না পাওয়ায় সেখানে মৃতদেহ সৎকার হচ্ছে না। মৃতের পরিবারের অনুরোধে রেড ভলান্টিয়ার্স কর্মীদের সহযোগিতায় দু’একটি করোনা মৃতদেহ শ্মশানে সৎকার হয়েছে। ঝামেলা এড়াতে অধিকাংশ করোনা মৃতদেহ দিঘার চুল্লিতে সৎকার হচ্ছে।
এগরা পুরসভার একাধিক খাস জায়গায় শ্মশান রয়েছে। তবে করোনার মৃতের দেহ সৎকারে গত বছর পর্যন্ত কোনও নির্দিষ্ট শ্মশান ছিল না। গত বছর ডিসেম্বর মাসে এগরার বালিঘাইতে বছর তেত্রিশের এক যুবক করোনায় আক্রান্ত হয়ে এগরা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি হন। পরে সেখানে মারা যান। মৃতের পরিবার গ্রামের শ্মশানে দেহ সৎকারের আয়োজন করলেও সংক্রমণের ভয়ে স্থানীয়রা দেহ সৎকারে বাধা দেয়। প্রশাসনের হস্তক্ষেপেও কাজ হয়নি। এগরা পুরসভায় ও করোনায় মৃতদেহ পোড়ানোর জন্য কোনও শ্মশান ছিল না। ফলে এগরা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের মর্গে দু'সপ্তাহের বেশি মৃতদেহ পড়ে থাকে। পরে প্রশাসনের উদ্যোগে দিঘায় বৈদ্যুতিক চুল্লিতে মৃতদেহ সৎকার হয়।
ওই ঘটনার পর এগরা মহকুমা প্রশাসন ও এগরা পুরসভার হস্তক্ষেপে এগরা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের পিছনে করোনা মৃত দেহ সৎকারের জন্য প্রাচীর দেওয়া আলাদা শ্মশান তৈরি হয়। গত জানুয়ারি মাসে তার উদ্বোধন হয়। পুরসভার তত্ত্বাবধানে এগরা মহকুমার করোনায় মৃতদেহ এখানে সৎকারের কথা। কিন্তু অভিযোগ, আজ পর্যন্ত করোনা মৃতদেহ সৎকার কাজের জন্য কোনও কর্মী নিয়োগ করতে পারেনি পুরসভা। কর্মীর অভাবে শ্মশানে করোনা মৃতদেহ পোড়ানো হচ্ছে না। লোকজন জোগাড় করে কাঠের চুল্লিতে মৃতদেহ পোড়ানোও অনেকটা ব্যয়সাপেক্ষ। এই অবস্থায় ঝুঁকি না নিয়ে করোনায় মৃতের পরিবারের লোকেরা দিঘার বৈদ্যুতিক চুল্লিতে দেহ সৎকার করছেন। কয়েকটি ক্ষেত্রে দু’একজন মৃতের পরিবার নিরুপায় হয়ে রেড ভলান্টিয়ার্সদের সহযোগিতায় এগরা শ্মশানে দেহ সৎকার করছেন। কয়েক দিন আগে পটাশপুরে এক বৃদ্ধ করোনা আক্রান্ত হয়ে এগরা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে মারা যান। রেড ভলান্টিয়ার্সদের সহযোগিতায় এগরা শ্মশানে মৃতদেহের শেষকৃত্য হয়। করোনায় মৃতের সৎকারের জন্য নির্দিষ্ট শ্মশান থাকলেও সেখানে এমন অব্যবস্থায় বিতর্কে এগরা পুরসভা
ও প্রশাসন।
এগরার পুর প্রশাসক স্বপন নায়ক বলেন, ‘‘শ্মশানে করোনা মৃতদেহ সৎকারের জন্য চেষ্টা করেও কোনও কর্মী পাওয়া যাচ্ছে না। মৃতের পরিবারও কাঠের চুল্লিতে মৃতদেহ সৎকারে আগ্রহ দেখাচ্ছে না। তবে কর্মী খোঁজা হচ্ছে।’’