কল্যাণী চন্দ। নিজস্ব চিত্র
ডেঙ্গিতে আগেই শহরের দুই বাসিন্দার মৃত্যু হয়েছে। এ বার জ্বরে ভুগে মারা গেলেন খড়্গপুরের বাসিন্দা এক স্কুল শিক্ষিকা। মঙ্গলবার কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে কল্যাণী চন্দ (৪৯) নামে ওই মহিলার। ডেঙ্গির প্রকোপ বাড়ছে জেলার অন্যত্রও। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যাও ১৭৬। ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়েও হাসপাতালে ভর্তি আরও অনেকে।
খড়্গপুরের আরাসেনী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা কল্যাণীদেবী দীর্ঘদিন ধরে কিডনির রোগে ভুগছিলেন। চলছিল ডায়ালিসিস। গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে জ্বর, মাথাব্যাথার মতো ডেঙ্গির উপসর্গ দেখা দেয় তাঁর। রক্তে প্লেটলেটের পরিমাণও কমতে শুরু করে। তাঁকে প্রথমে মেদিনীপুরের একটি নার্সিংহোমে ও পরে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মৃতের পরিজনেদের দাবি, কল্যাণীদেবীর রক্তের ‘এনএসওয়ান’ পরীক্ষা করা হলে পজিটিভ ফল মেলে। তাঁর ডেথ সার্টিফিকেটেও ‘এনএসওয়ান পজিটিভ’ কথাটি লেখা আছে। সাধারণত, কারও ‘এনএসওয়ান’ পরীক্ষার ফল পজিটিভ এলে প্রাথমিকভাবে ধরে নেওয়া হয়, তিনি ডেঙ্গি আক্রান্ত। যদিও ডেঙ্গি হয়েছে কি না নিশ্চিতভাবে জানতে তাঁর রক্তের ‘ম্যাক অ্যালাইজা’ পরীক্ষা করা হয়। যদিও এ ক্ষেত্রে কল্যাণীদেবীর ‘ম্যাক অ্যালাইজা’ পরীক্ষা করানো হয়েছিল কি না, তা নিয়ে কিছু বলতে পারেননি ওই শিক্ষিকার পরিজনেরা।
এ নিয়ে জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, “ওই শিক্ষিকা কিডনির রোগে আক্রান্ত ছিলেন। আমি শুনেছি ওঁর ডায়ালিসিসও চলছিল। কিডনির সমস্যা থেকেই ওঁর মৃত্যু হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর নিচ্ছি।” চাঙ্গুয়ালের কসবা এলাকার বাসিন্দা কল্যাণীদেবীর স্বামী গৌতম চন্দ বলছেন, “আমার স্ত্রী কিডনির রোগে আক্রান্ত ছিলেন। ডায়ালিসিসও চলত। তবে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হওয়ার দরুণ ওঁর মৃত্যু হল বলেই মনে হচ্ছে।”
ডেঙ্গির প্রকোপ রোধে শহর খড়্গপুরে সাফাই অভিযানে নেমেছে পুরসভা। যদিও গ্রামীণ এলাকার অবস্থা তথৈবচ। নারায়ণগড়, পিংলা, মোহনপুরের মতো এলাকাতেও ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। মোহনপুরের নয়গাঁ এলাকায় বেশ কয়েকজন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত। ওই এলাকার ৬ জন ডেঙ্গি আক্রান্তকে এখনও পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এরপরেও মশা নিধনে প্রশাসন উদাসীন বলে অভিযোগ।
মোহনপুরের বাসিন্দা অমিত দাসের অভিযোগ, “নয়াগাঁতে বহু মানুষ ডেঙ্গিতে আক্রান্ত। তারপরেও এখনও পর্যন্ত এলাকায় ব্লিচিং পাউডার ছড়ানো, মশা মারার তেল স্প্রে করার কাজ কিছুই হয়নি।” জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্রবাবুও মানছেন, “এটা ঠিক যে এলাকায় ওই শিক্ষিকার বাড়ি সেখানে অনেকেই ডেঙ্গি ও জ্বরে আক্রান্ত। বিভিন্ন ব্লকেও ডেঙ্গি আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘যে সব এলাকা থেকে ডেঙ্গি ছড়ানোর খবর আসছে, সেখানে স্বাস্থ্য কর্মীরা যাচ্ছেন। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপও করা হচ্ছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy