Advertisement
E-Paper

ফর্ম পিছু কুড়ি টাকা, রেশনে রোজগারের দিশা

পশ্চিমবঙ্গ সরকারের খাদ্য ও সরবরাহ দফতরের নির্দেশে রাজ্য জুড়ে ডিজিট্যাল রেশন কার্ডে ভ্রম সংশোধন এবং নতুন কার্ড তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। গত ৯ সেপ্টেম্বর থেকে ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রাথমিক পর্যায়ে সেই কাজ চলবে প্রতিটি ব্লকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:৫৩
চলছে ফর্ম পূরণ। পটাশপুর-১ বিডিও অফিস চত্বরে। নিজস্ব চিত্র

চলছে ফর্ম পূরণ। পটাশপুর-১ বিডিও অফিস চত্বরে। নিজস্ব চিত্র

পড়াশোনা স্নাতক পর্যন্ত। চাকরি পাননি। জীবিকা বলতে টিউশন। তার ফাঁকে সপ্তাহ দু’য়েক ধরে রোজ সকালে পটাশপুর-১ ব্লক অফিসের বাইরে এসে বসে থাকছেন পাঁচুড়িয়ার বাপি দাস। সেখানে ঘণ্টা দু’য়েক থেকেই উপার্জন করছেন বাড়তি টাকা। কাজটা কী!— ফর্মপূরণ।

পশ্চিমবঙ্গ সরকারের খাদ্য ও সরবরাহ দফতরের নির্দেশে রাজ্য জুড়ে ডিজিট্যাল রেশন কার্ডে ভ্রম সংশোধন এবং নতুন কার্ড তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। গত ৯ সেপ্টেম্বর থেকে ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রাথমিক পর্যায়ে সেই কাজ চলবে প্রতিটি ব্লকে। অন্য এলাকার মতো এগরা মহকুমার প্রতিটি ব্লকে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ রেশন কার্ড সংক্রান্ত কাজে জড়ো হচ্ছেন। অফিস খোলার আগেই ভোর পড়েছে লম্বা লাইন। উপভোক্তাদের মধ্যে অনেকেই রয়েছেন গ্রাম্য সহজ-সরল মানুষ। যাঁরা পড়াশোনা জানেন না। তাঁদের রেশন সংক্রান্ত ফর্ম স্বল্প মূল্যে পূরণ করে দিচ্ছেন বাপি, সায়ন ঘোড়ইয়ের মতো বেকার যুবকেরা।

বাপি, সায়নেরা জানাচ্ছেন, প্রতিটি ফর্মপূরণের জন্য ২০ টাকা করে নিচ্ছেন তাঁরা। সকাল থেকে ব্লক অফিসের সামনে অন্তত ৫০ থেকে ৬০ জন এমন বেকার যুবকেরা পলিথিন পেতে বসছেন। একজন প্রতিদিনে গড়ে ১৫ থেকে ২০টি করে ফর্মপূরণ করছেন। এভাবে তাঁদের দিনের প্রায় ৪০০ টাকা মতো উপার্জন হয়ে যাচ্ছে। ওই হিসাবে গত ১০-১২ দিনে তাঁদের বাড়তি উপার্জন হচ্ছে প্রায় চার থেকে ছ’হাজার টাকা। যা তাঁদের কাছে পুজোর মুখে বোনাস পাওয়ার সমান। বাপির কথায়, ‘‘কাজের ফাঁকে ঘণ্টা দুয়েক ফর্মপূরণ করলে মোটামুটি সারাদিনের হাতখরচ উঠে যাচ্ছে। গত ১০ দিনে ফর্মপূরণ করেই পুজোর খরচ তুলে নিয়েছি।’’

স্থানীয়েরা জানাচ্ছেন, জাতীয় নাগরিক পঞ্জির (এনআরসি) বিষয়ে অনেকের মধ্যেই ভয় জেগে গিয়েছে। তাই রেশন কার্ডের কাজ করাতে ভালই ভিড় পড়েছে। ভোগান্তি এড়াতে অনেকেই ভোর রাতে এসে অফিসের সামনে কাগজে নাম লিখে পাথর চাপা দিয়ে লাইন দিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু রেশন সংক্রান্ত ফর্ম পূরণে তাঁদের অনেকেরই সমস্যা হচ্ছে। তাই তাঁরা বাপিদের মতো লোকের দারস্থ হচ্ছেন। রেশন কার্ডের কাজ করাতে ব্লক অফিসে এসেছিলেন টোটানালা গ্রামের বাসিন্দা সুশীলা মহাপাত্র। তিনি বলেন, ‘‘পড়াশোনা জানি না। কোথায় কীভাবে ফর্ম ফিলাপ করব বুঝতে পারছি না। তাই টাকা দিয়ে ওই যুবকদের কাছে থেকে ফর্মপূরণ করালাম। নিশ্চিন্তে জমাও দিলাম।’’

এ ব্যাপারে শাসকদল তৃণমূলকে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। বিজেপির জেলা সভাপতি (কাঁথি) অনুপ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘তৃণমূলের জমানায় শিক্ষিতেরা চাকরির হাহাকার করছেন। ওঁদের বেকার করে রাস্তায় নামিয়েছে তৃণমূল। এভাবে কাজ করতে হচ্ছে ওঁদের। রাজ্যবাসী হিসাবে এটা আমাদের লজ্জা।’’

Ration Card Digital Ration Card
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy