Advertisement
E-Paper

পুকুরই জীবন, বাড়ছে অসুখ 

রাজ্য জুড়ে হইচইয়ের পর জ্বর ঠেকাতে তেড়েফুঁড়ে নেমেছে প্রশাসন। কিন্তু পেটের রোগ ঠেকাতে সেই সচেতনতা নেই বলেই অভিযোগ। স্বাস্থ্য দফতর বলছে, পুকুরের জল কোনও ভাবেই মুখে দেওয়া যাবে না। এমনকী, জলবাহিত রোগ ঠেকাতে নলকূপের জলও ফুটিয়ে খেতে হবে।

অভিজিৎ চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০১৭ ০০:০০
সাফাই: নোংরা পুকুরেই বাসন ধোয়া। ঘাটালের কৃষ্ণনগরে। নিজস্ব চিত্র

সাফাই: নোংরা পুকুরেই বাসন ধোয়া। ঘাটালের কৃষ্ণনগরে। নিজস্ব চিত্র

পুকুরের জলে ভাসছে কচুরিপানা। ঘাটে জমেছে আবর্জনার স্তূপ। পানা সরিয়েই জল ব্যবহার করছেন স্থানীয় গ্রামের বাসিন্দারা। আর এর ফলেই ঘাটাল-সহ জেলার বিভিন্ন প্রান্তে ছড়াচ্ছে পেটের রোগ।

রাজ্য জুড়ে হইচইয়ের পর জ্বর ঠেকাতে তেড়েফুঁড়ে নেমেছে প্রশাসন। কিন্তু পেটের রোগ ঠেকাতে সেই সচেতনতা নেই বলেই অভিযোগ। স্বাস্থ্য দফতর বলছে, পুকুরের জল কোনও ভাবেই মুখে দেওয়া যাবে না। এমনকী, জলবাহিত রোগ ঠেকাতে নলকূপের জলও ফুটিয়ে খেতে হবে। দফতরের সমীক্ষা জানাচ্ছে, পুকুরগুলি নিরাপদ নয়, কারণ শহরের দূষিত জল মিশছে সেখানে। অথচ ঘাটাল-সহ জেলার বিভিন্ন প্রান্তে চলছে পুকরের জলের অবাধ ব্যবহার।

পুকুরের জলে নানা প্রজাতির জীবাণু থাকে। সে কারণে তাই ওই জল ব্যবহারে শরীরে সংক্রমণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ছড়ায় ডায়েরিয়া, জন্ডিস, টাইফয়েডের মতো নানা রকম পেটের অসুখ। স্বাস্থ্য দফতরের তথ্য অনুযায়ী, পুকুর ও নানা উৎস থেকে দূষিত জল ব্যবহারের ফলে ডায়েরিয়ার প্রকোপ ক্রমশ বাড়ছে। পেটের অসুখ নিয়ে প্রতি দিনে গড়ে ৫০ থেকে ৬০ জন করে রোগী জেলার গ্রামীণ ও মহকুমাস্তরের হাসপাতালগুলিতে ভিড় করছেন। এ ছাড়াও সম্প্রতি ঘাটালের মহকুমার ষাট ভাগ পুকুরেই ঢুকেছিল বন্যার দূষিত জল। তা সত্ত্বেও পুকুরের জল ব্যবহারের প্রবণতা বন্ধ হয়নি। উল্টে পুকুরের উপর নির্ভরতা বেড়ে চলেছে। এতে সঙ্কট আরও বাড়ছে।

এ ব্যাপারে সচেতনতা তৈরি করতে স্বাস্থ্য দফতরও কোনও পদক্ষেপ করছে না বলেই অভিযোগ। যদিও দফতরের পাল্টা দাবি, মাঝেমধ্যেই লিফলেট ও মাইকের মাধ্যমে প্রচার করা হয়। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, “আমরা সতর্ক। কিন্তু মানুষকেও তো সচেতন হতে হবে।” জেলার উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রবীন্দ্রনাথ প্রধানের কথায়, “পুকুরের জল ব্যবহার বন্ধে স্থানীয় প্রশাসনকেও এগিয়ে আসতে হবে।” সমস্যার কথা স্বীকার করে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক পদস্থ আধিকারিক বলেন, “পর্যাপ্ত জলের অভাবেই মানুষকে পুকুরে যেতে হচ্ছে। তাই শুধু প্রচার করে প্রবণতা ঠেকানো যাবে না। দৈনন্দিন জলের চাহিদা বুঝে বিকল্প ব্যবস্থা করা জরুরি।” জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা জানান, বিষয়টি নিয়ে খোঁজ নেবেন।

কিন্তু এত দিন পরেও কেন পুকুর বা নালার ব্যবহার বন্ধ করা যাচ্ছে না? স্থানীয়দের দাবি, পরিস্রুত পানীয় জলের অভাবের কারণেই দৈনন্দিন কাজে পুকুর ও নালার জল ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছেন তাঁরা। স্নান করা, কাপড় কাচা, বাসন ধোওয়ার কাজে ভরসা পুকুরই। যেখানে পুকুর নেই, সেখানে নলকূপ বা নালার জল ব্যবহার করেন বাসিন্দারা।

Health Dirty Water Pond
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy