মার্কশিট হাতে পেয়ে। হলদিয়ার একটি স্কুলে। নিজস্ব চিত্র।
এক দশক পার করে টানা ১১ বছর মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাশের হারে রাজ্যে প্রথম স্থান অক্ষুণ্ণ রাখল পূর্ব মেদিনীপুর।
করোনা কালে অনলাইনে পরীক্ষার পরে এ বছরই অফলাইনে হয়েছিল মাধ্যমিক পরীক্ষা। শুক্রবার তার ফলাফল প্রকাশ হতে দেখা গিয়েছে ফের পাশের হারে রাজ্যে শীর্ষে রয়েছে এই জেলা। এ বছর পূ্র্ব মেদিনীপুরে পাশের হার ৯৭.৬৩ শতাংশ। পাশাপাশি, মেধা তালিকায় এ জেলার ১৬ জন ছাত্রছাত্রী স্থান পেয়েছে। যাদের মধ্যে রয়েছে তৃতীয় স্থানাধিকারী এগরা-১ ব্লকের চোরপালিয়া এলাকার দেবশিখা প্রধান। করোনা পরবর্তী সময়ে অফলাইন পরীক্ষায় জেলার এই সাফল্যে উচ্ছ্বসিত শিক্ষক মহল।
জেলা শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাশের হারে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা রাজ্যের মধ্যে প্রথমবার সেরার স্থান দখল করেছিল ২০১২ সালে। এরপর ২০২০ সাল পর্যন্ত এক টানা ৯ বার প্রথম স্থান দখল করে রাখে এই জেলার ছাত্রছাত্রীরা। করোনা কালে লকডাউনের সময় ২০২১ সালে মাধ্যমিকের লিখিত পরীক্ষা হয়নি। তবে ওই বছরের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের আগের পরীক্ষার প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছিল। তাতেও পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা ছিল ১০০ শতাংশ সফল। এবারই সাফল্যের ধারা বজায় থেকেছে জেলায়।
তৃতীয় ছাড়াও জেলা থেকে পঞ্চম, ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম এবং দশম স্থানেও রয়েছে পড়ুয়ারা। এগরা রামকৃষ্ণ শিক্ষা মন্দিরের ছাত্রী পৌলমী বেরা পঞ্চম হয়েছে। জেলায় যুগ্মভাবে ষষ্ঠ হয়েছে কাঁথির প্রতীক মাইতি এবং সমতা কুইল্যা। সপ্তম হয়েছে কাঁথিরই সায়ন্তন মাইতি, অষ্টম হয়েছে চণ্ডীপুরের হাঁসচড়া এলাকার সারস্বত গায়েন, কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র উপনগরীর ঈশিতা সামন্ত এবং হলদিয়ার চৈতন্যপুরের অনীশ ঘোড়াই। দশম স্থানে রয়েছে জেলার আট পড়ুয়া। তমলুকের সৌনক প্রামাণিক, আলেখ্য বর, তন্নিষ্ঠা দাস, চণ্ডীপুরের সৌম্যদীপ শেঠ, কাঁথির অর্ঘদীপ মাইতি, অনুষ্কা পাহাড়ি, প্রত্যুষা মিশ্র এবং এগরার সৌম্যদীপ গিরি।
মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফলে খুশি জেলার শিক্ষক-শিক্ষিকা থেকে জেলা শিক্ষা দফতরের আধিকারিকেরা। তমলুকের হ্যামিল্টন হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মধুসূদন জানা বলেন, ‘‘মাধ্যমিক পরীক্ষায় আমাদের জেলার ছাত্রছাত্রীরা ফের সাফল্যের নজির রেখেছে। এই স্কুলের ছাত্রও দশম হয়েছে। এটা আমাদের কাছে খুবই গর্বের।’’ করোনা পরবর্তী সময়ে স্কুল খুললেও সেখানে এবার বেশি দিন পঠনপাঠনের সুযোগ পায়নি পরীক্ষার্থীরা। এরই এসেছে এমন সাফল্য। ময়নার বিবেকানন্দ কন্যা বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষিকা দীপিকা সামন্ত বলেন, ‘‘করোনায় অনলাইনে পড়ানোর ব্যবস্থা করা হলেও অনেক সাধারণ পড়ুয়ার পড়াশোনা ব্যহত হয়েছিল। তা সত্ত্বেও আমাদের জেলার ছাত্রছাত্রীরা যেভাবে সাফল্য পেয়েছে, তা উৎসাহজনক।’’ মাধ্যমিক পরীক্ষায় জেলার সাফল্যে উচ্ছ্বসিত জেলা মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিদর্শক শুভাশিস মিত্রও তিনি বলেন, ‘‘ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও অভিভাবকদের সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফলেই এমন সাফল্য এসেছে।’’
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy