নাম তার রামলাল। সে ফুটবল খেলে। ‘স্কিল’ দেখিয়ে তাজ্জব করে পথচলতি মানুষকে। থাকে আপন খেয়ালে। এ-হেন রামলাল হঠাৎ ‘খাপ্পা’। শালবনির জঙ্গলের পথে গাড়ি দেখে মেজাজ বিগড়ে গেল তার। একেবারে শুঁড়ের ধাক্কায় ফেলে দিল চার চাকার যান। প্রাণ বাঁচিয়ে পালালেন চালক। বুধবার সকালে শালবনি থানার পিড়াকাটা বিটের রঞ্জার রেঞ্জের ঘাঘরাশোলের জঙ্গলে ‘শান্ত’ হাতির এমন রণংদেহি মূর্তি দেখে বিস্মিত সকলে।
ঝাড়গ্রাম ও তৎসংলগ্ন জঙ্গলমহলের অত্যন্ত পরিচিত দাঁতাল হাতি রামলাল। বুধবার সকালে মেদিনীপুর বনবিভাগের পিড়াকাটা রেঞ্জের রঞ্জা বিটে হঠাৎ একটি চারচাকা গাড়িকে উল্টে দিয়েছে সে। চালক আগেই দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ায় বড়সড় বিপদ ঘটেনি। ওই চালক জানান, প্রথমে তাঁর পথ আটকে দাঁড়ায় রামলাল। সঙ্গে সঙ্গে গাড়ির ‘স্টার্ট’ বন্ধ করে দেন তিনি। হাতির ‘রকম’ দেখে সুবিধার মনে হয়নি তাঁর। ও দিকে, গাড়ি ঘোরানোর মতো সময় ছিল না। তাই চালকের আসন থেকে নেমে দৌড় দেন। রামলাল ফাঁকা গাড়িতে খানিক ক্ষণ কী যেন খুঁজছিল। তার পরেই গাড়িটিকে উল্টে দেয় সে। মনে করা হচ্ছে, খাবার না-পেয়ে ওই কাণ্ড ঘটিয়েছে দাঁতালটি।
বন দফতর সূত্রে খবর, ঘাঘরাশোল এলাকায় রামলাল ছাড়াও আরও ১৫-২০টি হাতি আছে। এলাকাবাসীকে এ নিয়ে আগেই সতর্ক করা হয়েছে। বলা হয়েছে জঙ্গলপথ এড়িয়ে যাওয়ার জন্য। তা সত্ত্বেও ওই গাড়িটি মাহাতপুর থেকে লালগেড়িয়ার দিকে যাওয়ার জন্য জঙ্গলের পথই ধরেছিল।
আরও পড়ুন:
মনে করা হচ্ছে, ঘাঘরাশোল জঙ্গল থেকে বেরিয়ে খাবারের খোঁজ করছিল রামলাল। খাবার না পেয়েই রাগ হয় তার। পিড়াকাটা রেঞ্জের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘সাধারণ মানুষকে বার বার জঙ্গলপথ এড়িয়ে যাওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে। মাহাতপুর থেকে জয়পুর, সিজুয়া রাজ্য সড়ক ধরেও লালগেড়িয়া যাওয়া যায়। কিন্তু দূরত্ব কমানোর জন্য জঙ্গলপথ ধরে যাচ্ছিল গাড়িটি। যত দূর খোঁজ নিয়েছি, গাড়িতে চালক একাই ছিলেন। রামলালকে দেখে উনি গাড়ি ফেলে দৌড়ে পালিয়ে যান। কিন্তু ওই এলাকায় আরও হাতি আছে। ফলে বিপদ হতেই পারত।’’