Advertisement
E-Paper

Blood Donation: দিদিমণির ডাকে কাজ ফেলে রক্তদান শিবিরে

বছর সাতেক আগে সুস্মিতারই স্কুলের থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত এক খুদে পড়ুয়ার রক্ত পেতে সমস্যায় পড়েছিলেন তার অভিভাবক।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০২১ ০৮:১১
রক্তদান করছেন অর্ক। রয়েছেন সুস্মিতা।

রক্তদান করছেন অর্ক। রয়েছেন সুস্মিতা। নিজস্ব চিত্র।

শিক্ষিকার ডাক ফেরাতে পারলেন না প্রাক্তন ছাত্র। মাঝপথে গাড়ি ঘুরিয়ে দেড়শো কিমি উজিয়ে ফিরে এসে প্রাথমিক স্কুলে আয়োজিত শিবিরে রক্ত দিলেন ঝাড়গ্রাম শহরের অর্ক প্রামানিক।

বছর তিরিশের অর্ক পেশায় ভাড়ার গাড়ির চালক। শহরের বলরামডিহি এলাকার অশোক বিদ্যাপীঠ নিম্ন বুনিয়াদি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৯৯৮ সালে অর্ক যখন পড়তেন, তার এক বছর আগে সরকারি স্কুলটির সহ-শিক্ষিকা পদে যোগ দেন সুস্মিতা ঘোষ মণ্ডল। রক্তদান আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত সুস্মিতা দীর্ঘদিন ধরেই পড়ুয়া, অভিভাবক, প্রাক্তন পড়ুয়া ও এলাকাবাসীকে সচেতন করে চলেছেন।

বছর সাতেক আগে সুস্মিতারই স্কুলের থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত এক খুদে পড়ুয়ার রক্ত পেতে সমস্যায় পড়েছিলেন তার অভিভাবক। এরপরই রক্তের সঙ্কট মেটাতে ২০১৪ সাল থেকেই একটি বেসরকারি সংস্থার সহযোগিতায় নিয়মিত স্কুলে বার্ষিক রক্তদান শিবির করেন সুস্মিতা।

করোনা আবহে গত বছর শিবির করা যায়নি। তবে সোমবার স্কুলে ফের শিবিরের আয়োজন করেছিলেন সুস্মিতা। পাশে ছিলেন স্কুলের অন্য শিক্ষকরাও। ভোর থেকেই বৃষ্টি শুরু হওয়ায় চিন্তায় পড়েন সুস্মিতা। বিভিন্ন জনকে ফোন করে আসার অনুরোধ করেন। অর্ক সকালে কলকাতায় গাড়ির কিছু প্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনতে রওনা দিয়েছিলেন। ন'টা নাগাদ সুস্মিতা যখন ফোন করেন, অর্ক তখন ধূলাগড় টোল প্লাজ়ার কাছাকাছি। ঝাড়গ্রাম থেকে ধূলাগড়ের দূরত্ব দেড়শো কিমি। অর্ক কলকাতা যাওয়ার সিদ্ধান্ত বদল করেন। সঙ্গে সঙ্গে গাড়ি ঘুরিয়ে ঝাড়গ্রামে ফেরেন দুপুর দেড়টা নাগাদ। তারপর স্কুলে গিয়ে রক্ত দেন।

শিক্ষিকা সুস্মিতা বলছেন, ‘‘প্রতিবার প্রাক্তনী ও পরিচিতজনদের মেসেজ করে দিই। রবিবার অর্ককে মেসেজ করতে ভুলে গিয়েছিলাম। তাই সোমবার সকালে ফোন করি। ও যে ওত দূরে আছে সেটা বলেনি। দুপুরে রক্ত দেওয়ার পরে জানায়। এটাই আমার প্রাপ্তি।’’ অর্কের কথায়, ‘‘আমার ব্যক্তিগত লাভের তুলনায় আমার রক্ত অন্যের কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তাই ফিরে এসেছি।’’ অর্ক জানালেন, স্কুলে পড়ার সময় দিদিমণি রক্তদানের গুরুত্ব বোঝাতেন। তাই প্রতি বছর স্কুলের শিবিরে রক্ত দেন তিনি। অন্যত্রও রক্তদান করেন। এ পর্যন্ত ২৭ বার রক্ত দিয়েছেন অর্ক।

ঝাড়গ্রাম ব্লাড ব্যাঙ্কের সহযোগিতায় এ দিন শিক্ষক, প্রাক্তন পড়ুয়া, অভিভাবক, পুলিশ কর্মী, সিআরপি জওয়ান মিলিয়ে ৩৬ জনের রক্তদান করেছেন। শিবিরে গিয়েছিলেন ঝাড়গ্রামের মহকুমাশাসক (সদর) বাবুলাল মাহাতো। তিনি বলছেন, ‘‘সুস্মিতাদেবীর মত মানুষরা আছেন বলেই আরও কত অর্ক রক্তদানে এগিয়ে আসেন।’’

Blood donation camp Jhargram
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy