Advertisement
১৭ মে ২০২৪
কেশপুর

গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে বোমা, গুলিতে জখম চার

উৎসবের মরসুমেই বোমা-গুলিতে তেতে উঠল কেশপুর। শনিবার সকালে ধলহারা অঞ্চলের দামোদরচকে তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষে জখম হলেন চারজন। সকলের শরীরেই স্‌প্লিন্টার বিঁধেছে। জখমদের মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

হাসপাতালে জাভেদ আলি। নিজস্ব চিত্র।

হাসপাতালে জাভেদ আলি। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০১৬ ০০:৪৬
Share: Save:

উৎসবের মরসুমেই বোমা-গুলিতে তেতে উঠল কেশপুর। শনিবার সকালে ধলহারা অঞ্চলের দামোদরচকে তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষে জখম হলেন চারজন। সকলের শরীরেই স্‌প্লিন্টার বিঁধেছে। জখমদের মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে একজনকে কলকাতায় স্থানান্তরিত করা হয়েছে। পুলিশের অবশ্য বক্তব্য, বোমাবাজি হয়ে থাকতে পারে। তবে গুলি চলেনি।

পশ্চিম মেদিনীপুরের এই তল্লাটে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল নতুন নয়। দলের কেশপুর ব্লক সভাপতি সঞ্জয় পানের অনুগামীদের সঙ্গে প্রাক্তন ব্লক সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদের ঘনিষ্ঠদের বিরোধ হামেশাই প্রকাশ্যে আসে। মহিউদ্দিন এখন জেলা পরিষদ সদস্য। দামোদরচকে তাঁর প্রভাব বেশি। এখানকার অঞ্চল প্রধান তাঁর ছেলে জসিমুদ্দিন আহমেদ। এলাকা দখল নিয়ে সঞ্জয়-গোষ্ঠীর সঙ্গে বিবাদের জেরেই এ দিনের ঘটনা বলে জানা গিয়েছে।

মহিউদ্দিন অনুগামীদের অভিযোগ, এ দিন পরিকল্পনামাফিক হামলা চালিয়ে সঞ্জয় পানের লোকজন। সকালে দামোদরচকের চা দোকানে কয়েকজন মহিউদ্দিন অনুগামী তৃণমূল কর্মী-সমর্থক যখন বসেছিলেন, তখনই গুলি চলে বলে অভিযোগ। ব্যাপক বোমাবাজিও হয়। জখম হন জাভেদ আলি, মিরাজুল আলি, সইফ আলি এবং শেখ আহমেদাদুল্লা। জখম চারজনকে প্রথমে কেশপুর গ্রামীণ হাসপাতাল, পরে সেখান থেকে মেদিনীপুর মেডিক্যালে আনা হয়। জাভেদের শরীরে একাধিক স্‌প্লিন্টার রয়েছে। দুপুরে তাঁকে কলকাতার হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। তার আগে জাভেদ বলেন, “আমরা চকে ছিলাম। হঠাৎই হামলা হয়েছে।’’ এলাকার তৃণমূল কর্মী শেখ লুৎফার রহমান বলেন, ‘‘দলের ব্লক সভাপতি সঞ্জয় পানের লোকেরাই গুলি-বোমা নিয়ে হামলা চালায়।’’

অভিযোগ মানতে নারাজ সঞ্জয়বাবু। তিনি বলেন, “কেশপুরের কোথায় কী গোলমাল হয়েছে জানি না। আমি বাড়ির লক্ষ্মীপুজোয় ব্যস্ত আছি।’’ সঞ্জয় ঘনিষ্ঠ এক তৃণমূল নেতার অবশ্য দাবি, ‘‘গোলমাল মহিউদ্দিনের লোকেরাই করেছে। তাণ্ডবের জেরে আমাদের লোকেরা পালিয়ে এসেছে।’’ আর মহিউদ্দিনের বক্তব্য, “দলের কারও কারও মদতে শনিবার গোলমাল হয়েছে। এখনই নাম বলছি না। এলাকায় শান্তি ফেরানোর চেষ্টা হচ্ছে।’’

রাজ্যে পালাবদলের পরে কেশপুরে এখন তৃণমূলের দাপট। তবু কেন এলাকা থেকে অশান্তির ধোঁয়া কাটছে না? সদুত্তর এড়িয়ে তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, ‘‘কেশপুরের গোলমালের কথা শুনেছি। এটা পাড়াগত গোলমাল হতে পারে। ব্লক সভাপতি সঞ্জয়কে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, কথা বলে সমস্যা মিটিয়ে নিতে। পুলিশ-প্রশাসন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করছে।’’ আর কেশপুরের তৃণমূল বিধায়ক শিউলি সাহার বক্তব্য, “গোলমালের কথা শুনেছি। কারা করেছে, কেন করেছে, এ সবে যাচ্ছি না। পুলিশের উচিত আরও সক্রিয় হওয়া, গোলমালে জড়িতদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Explosion Bomb
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE