এসআইআর নিয়ে উদ্বেগে আরও এক মৃত্যুর অভিযোগ! এ বার ঘটনাস্থল পূর্ব মেদিনীপুরের কোলাঘাট থানার ভোগপুর পঞ্চায়েতের শেখপাড়া। মৃতের নাম কেশিমন বিবি। অশীতিপর বৃদ্ধার পরিবারের অভিযোগ, ভোটার তালিকায় নাম না থাকার দুশ্চিন্তা আর নাগরিকত্ব হারানোর আশঙ্কায় মানসিক চাপ নিতে না পেরে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন তিনি। শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতর।
পরিবার তথা প্রতিবেশীদের দাবি, গত কয়েকদিন ধরে প্রচণ্ড উদ্বেগে ছিলেন ৮৩ বছরের বৃদ্ধা। আতঙ্কে ভুগছিলেন ২৩৩ নম্বর বুথের ভোটার কেশিমন। কারণ, তাঁর নাম নাকি আগাম নোটিস বা ব্যাখ্যা ছাড়াই ২০০২ সালের ভোটার তালিকা থেকে বাদ গিয়েছিল। শুধু ওই প্রবীণাই নন, তাঁর পুত্র শেখ নাসিরুদ্দিনের নামও ২০০২ সালের তালিকায় নেই। এ নিয়ে ৪৫ বছরের যুবক এবং তাঁর বৃদ্ধা মা চিন্তিত হয়ে পড়েন। এক আত্মীয়ের কথায়,‘‘এসআইআরের আশঙ্কায় দিন দিন ওর শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছিল। চিন্তা, ভয়, আতঙ্কে রাতে ঘুমোত না। খাওয়া-দাওয়াও প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ওর অস্থিরতা সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছিল সকলে।’’
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ কেশিমন জানান, বুকে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করছেন। তার কিছু ক্ষণের মধ্যে বাড়িতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। চিকিৎসক জানান, হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি। পরিবার বলছে, ‘‘এসআইআরের আতঙ্কে আর মানসিক চাপে ‘হার্ট’ দুর্বল হয়ে পড়েছিল।’’
আরও পড়ুন:
বৃদ্ধার মৃত্যু নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। তৃণমূলের জেলা পরিষদের সদস্য টুটুন মল্লিকের অভিযোগ, ‘‘কেশিমন বিবি ও তাঁর ছেলের নাম ২০০২ সালের ভোটার লিস্টে না থাকায় তাঁরা চরম আতঙ্কিত। ছেলের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগের মাঝেই বৃদ্ধার প্রাণ চলে গেল। এর দায় কার?’’ পাল্টা বৃদ্ধার মৃত্যু নিয়ে ‘নোংরা রাজনীতি’ করার অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। পদ্মশিবিরের পূর্ব মেদিনীপুরের নেতা বামদেব গুছাইতের কথায়, ‘‘৮০ বছরের এক বৃদ্ধা হৃদ্রোগে মারা গিয়েছেন। সেটাও নাকি এসআইআরের জন্য! মৃত্যু নিয়ে অযথা নোংরা রাজনীতি করছে তৃণমূল। কম বয়সি কারও মৃত্যু হলে তা-ও ভেবে দেখা যেত।’’