Advertisement
E-Paper

ছকভাঙা বিয়ের পুরোহিত মহিলা

সন্দীপ সরকারের সঙ্গে বিয়ে হয়েছে দেবযানী সরকারের। সন্দীপের বাড়ি মেদিনীপুরের মিরবাজারের নবীনাবাগে। দেবযানীর বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার ইছাপুরের নিরঞ্জননগরে।

বরুণ দে

শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০২২ ১০:২৪
বিবাহ বাসরে। নিজস্ব চিত্র

বিবাহ বাসরে। নিজস্ব চিত্র

চেনা ছকে নয়, বিয়ে হল চিরাচরিত ছক ভেঙে। মন্ত্র পড়ে বিয়ে দিলেন মহিলা পুরোহিত। এমন বিয়েতে বেশ খুশি বর- কনে। খুশি তাঁদের পরিজনেরাও। নবদম্পতি জানাচ্ছেন, মানুষের চিন্তাধারা বদলানোর জন্যই এই পদক্ষেপ। মেয়েরা সবকিছুই করতে পারেন, মেয়েরা পৌরোহিত্যও করতে পারেন, এই বার্তা দিতেও এমন বিয়ে। পুরোহিত মানেই কেবল পুরুষ হবে, এই ধারণায় বদল আনতে হবে।

সন্দীপ সরকারের সঙ্গে বিয়ে হয়েছে দেবযানী সরকারের। সন্দীপের বাড়ি মেদিনীপুরের মিরবাজারের নবীনাবাগে। দেবযানীর বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার ইছাপুরের নিরঞ্জননগরে। রবিবার ইছাপুরে হয়েছে বিয়ের অনুষ্ঠান। জমজমাট বিয়েবাড়ি। চমক পুরোহিতে। পুরুষ পুরোহিতের বদলে দেখা গেল মহিলা পুরোহিতকে। মহিলা পুরোহিত বিয়ের কাজ সম্পন্ন করলেন। বর- কনের চারহাত এক করেছেন। বৈদিক মন্ত্রোচ্চারণের মধ্য দিয়েই হয়েছে মালাবদল, শুভদৃষ্টি, সাতপাকে বাঁধা। বিয়েতে পৌরহিত্য করেছেন চারজন মহিলা। তাঁরা সকলেই অধ্যাপিকা নন্দিনী ভৌমিকের সংস্থা ‘শুভমস্তু’র সঙ্গে যুক্ত। দু’জন বৈদিক মতে সংস্কৃত মন্ত্রোচ্চারণ করেন ও বাংলায় তার অর্থ বর্ণনা করেন। অন্য দু’জন মন্ত্রের মাঝে মাঝে রবীন্দ্রসঙ্গীত পরিবেশন করেন। কন্যাদান ও কনকাঞ্জলি হয়নি। সিঁদুরদানের আগে কনে, বরের কপালে লাল সিঁদুরের বিজয় টীকা লাগিয়ে দেন। তারপরে বর, কনের সিঁথিতে সিঁদুরদান করেন।

বর-কনে দু’জনেই বলছেন, চেনা ছকের বাইরে বেরিয়ে এই বিয়ের অনুষ্ঠানে তাঁরা খুশি। বরের বাবা শ্যামল সরকার, মা সবিতা সরকার, কনের বাবা পার্থ সরকার, মা কাকলি সরকার বলছেন, ‘‘ওঁদের ইচ্ছাকে মর্যাদা দিতে মহিলা পুরোহিত দিয়ে বিয়ের আয়োজন। ওঁদের খুশিতেই আমাদের খুশি।’’ বর-কনের পরিজনেদের অনেকে মনে করাচ্ছেন, বৈদিক যুগে ঋষিদের সঙ্গে ঋষিকারাও পুজোপাঠ, যজ্ঞ প্রভৃতির কাজ করতেন। বিবাহের বৈদিক মন্ত্রগুলি সূর্যা নামের এক নারীর রচনা। তাই এতে নারীর অধিকার নেই, এ কথা ঠিক নয়। পদার্থবিদ্যার স্কুল শিক্ষক সন্দীপ বলছেন, ‘‘আমার ইচ্ছে ছিল প্রচলিত বিয়ে না করে একটু অন্য রকম কিছু করার। আমরা ঠিক করেছিলাম বৈদিক মতেই বিয়ে করব।’’ মনস্তত্ত্ববিদ্যার ছাত্রী দেবযানী বলছেন, ‘‘বৈদিক মন্ত্রোচ্চারণ করেই সম্পন্ন হয়েছে আমাদের বিয়ে।’’ নববধূ জুড়ছেন, ‘‘নারী কোনও অংশে পিছিয়ে নেই। নারী পুরুষের সঙ্গে সমান তালে সব কাজই করতে পারে।’’

বিয়ের প্রতি পদেই চমক ও নতুনত্ব। আজ, মঙ্গলবার মেদিনীপুরে হবে বিয়ের বৌভাতের অনুষ্ঠান। পরিবার সূত্রে খবর, প্রীতিভোজের অনুষ্ঠানকে প্লাস্টিকমুক্ত রাখা হবে। অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিতদের কাছে অনুরোধও রাখা হয়েছে, ‘অনুগ্রহ করে প্লাস্টিক ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন।’ রবিবার বিবাহপর্ব শেষ হয়েছে রবীন্দ্রসঙ্গীতে।

Marriage Female Priest midnapore
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy