রোগীর পরিজনদের রাত কাটানোর এই ঘরেই হচ্ছে চুরি। নিজস্ব চিত্র।
চুরি-ছিনতাই বাড়ছে মেদিনীপুর মেডিক্যালে। রোগীর পরিজনেদের থেকে টাকা, দামি গয়না খোওয়া যাচ্ছে অনেক কিছুই। তবে সম্প্রতি একটি ঘটনায় উদ্বেগ আরও বেড়েছে। ট্রেন, বাসের পরে এ বার বেহুঁশ করে লুঠের অভিযোগ উঠেছে মেডিক্যালেও।
প্রচণ্ড জ্বর নিয়ে কিছু দিন আগে মেদিনীপুর মেডিক্যালে ভর্তি হয়েছিলেন ডেবরার লোয়াদার বাসিন্দা বরুণ মাহালি। তাঁর বাবা বাদল মাহালি রাতে হাসপাতালে থাকছিলেন। নতুন ভবনের সামনে রোগীর পরিজনদের থাকার জন্য যে ঘর রয়েছে, সেখানেই রাত কাটাতেন বাদলবাবু। একদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখেন, আড়াই হাজার টাকা খোওয়া গিয়েছে। বাদলবাবু বলছিলেন, “রাতে ওই ঘরে একজনের সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল। তিনি জানিয়েছিলেন, তাঁরও এক পরিচিত ভর্তি রয়েছে হাসপাতালে। আলাপ করে গল্প জমাতে শুরু করেছিলেন। এক সময় জানতে চাইলেন, আমি চা খাব কি না। শীতের রাত। তাই চা- এ আপত্তি করিনি। জানি না কোথা থেকে চা নিয়ে এলেন। প্লাস্টিকের কাপে। ওই চা খাওয়ার পর আমার আর কোনও হুঁশ ছিল না। ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। পরের দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি, প্যান্টের পকেটে মানিব্যাগ নেই।” হাসপাতালে অবশ্য অভিযোগ জানাননি তিনি। তাঁর কথায়, “অভিযোগ করে আর কী হবে। ওই টাকা তো ফেরত পাব না!”
এই ঘটনা অজানা হলেও মেদিনীপুর মেডিক্যালের সুপার তন্ময়কান্তি পাঁজা মানছেন হাসপাতালে চুরি-ছিনতাই হয়। তাঁর কথায়, “চুরির ঘটনা ঘটলে সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে খবর আসে। তখন পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানো হয়।” মেডিক্যালের এক সূত্রে খবর, হাসপাতালের স্টোর থেকে মাঝেমধ্যেই চুরির ঘটনা ঘটে। সম্প্রতিও বেশ কিছু সিরিঞ্জ চুরি গিয়েছে। যার কোনও কিনারা হয়নি। হাসপাতালের এক কর্মী জানাচ্ছেন, এখানে প্রায়ই নানা ঘটনা ঘটে। একদিন ওয়ার্ডের মধ্যে থেকে অক্সিজেন সিলিন্ডার চুরি গিয়েছিল। একদিন এক ডাক্তারের মোবাইল চুরি গিয়েছিল। একদিন এক রোগীর পরিজনের কানের দুল চুরি গিয়েছিল।
হাসপাতাল চত্বরে নিরাপত্তার স্বার্থে এক সময় ৬টি সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছিল। এখন সবই অকেজো। এত বড় চত্বরে পুলিশ ফাঁড়িও নেই। পুলিশকর্মীও হাতেগোনা। তবে মেডিক্যালের সুপার তন্ময়কান্তি পাঁজার আশ্বাস, “হাসপাতাল চত্বরে প্রয়োজনে নজরদারি আরও বাড়ানো হবে। নতুন করে সিসি ক্যামেরাও বসানো হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy