E-Paper

মাস্টার প্ল্যানের দ্বিতীয় পর্যায়ে শতাধিক সেতু

চলতি বছরের শুরুর দিকে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছিল।

অভিজিৎ চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০২৫ ০৪:৪২
জলমগ্ন ঘাটাল। এই ছবি পাল্টাবে কী, সাস্টার প্ল্যানে।

জলমগ্ন ঘাটাল। এই ছবি পাল্টাবে কী, সাস্টার প্ল্যানে। ফাইল চিত্র।

ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান প্রকল্পে একসঙ্গে শতাধিক সেতু তৈরি হবে না। সে গুলি তৈরি হবে ধাপে ধাপে। সেচ দফতর সূত্রের খবর, এখনই ১০৪টি সেতু করা হবে না। বন্যার জল আটকানোর মতো প্রাথমিক পর্যায়ের কাজ শেষ করে দ্বিতীয় ধাপে পর্যায়ক্রমে তৈরি হবে প্রস্তাবিত সেতু গুলি। নয়া এই সিদ্ধান্তে ক্ষোভ তৈরি হচ্ছে স্থানীয়দের মধ্যে। প্রশ্ন তুলছে বিরোধীরা। তাদের বক্তব্য, কেন সবদিক বিবেচনা না করেই একসঙ্গে এতগুলি সেতু তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছিল?

চলতি বছরের শুরুর দিকে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছিল। সেই সময় দফায় দফায় বৈঠক করে প্রকল্পের কোথায় কী কাজ হবে, তার ডিপিআর নিয়ে আলোচনা হয়। সঙ্গে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে নতুন একাধিক প্রস্তাবও জমা পড়ে। প্রকল্পের কাজ দেখভালের জন্য ব্লক ও শহর এলাকায় সাব কমিটি গুলির থেকে প্রস্তাব জমা দিতে বলা হয়। কার্যত দু’আড়াই মাস ধরে দফায় দফায় বৈঠক করে নদী ও খাল গুলির উপর সেতু নির্মাণের ক্ষেত্রে মহকুমায় কোথায় কী চাহিদা রয়েছে, তার উপর জোর দেওয়া হয়। সেই রকম প্রস্তাবও জমা পড়ে কমিটি গুলি থেকে। দেখা যায়, বেশিরভাগ এলাকা থেকে বড় স্থায়ী সেতুর দাবি জমা পড়েছে। এলাকা ধরে ধরে গুরুত্ব বুঝে এক এক করে চূড়ান্ত করা হয়। শুরু হয় ডিপিআর তৈরির কাজও। প্রত্যেক সেতুর জন্য প্রায় ১৫-১৮ কোটি টাকার ডিপিআর জমা পড়ে। কিছু ক্ষেত্রে মাটি পরীক্ষা-সহ সেতুর সংযোগকারী রাস্তার খোঁজও শুরু হয়।

সেতু গুলির ডিপিআর ও প্রস্তাব জমা পড়তেই একসঙ্গে এত সংখ্যক সেতুর কী ভাবে বাস্তবায়ন সম্ভব, তা নিয়ে চাপানউতোর শুরু হয় প্রশাসনের অভ্যন্তরে। এমনকি, এত সেতু তৈরি নিয়ে প্রশাসনের মধ্যেই বিভাজনও তৈরি হয়। প্রশ্ন উঠেছিল, দেড় হাজার কোটি টাকার একটা প্রকল্পে কী ভাবে সেতুর জন্যই হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি খরচ সম্ভব? তার পরেও থমকে যায়নি আলোচনা। প্রকল্প রুপায়ণে মন্ত্রী ও প্রধান সচিবের উপস্থিতিতে হওয়া বৈঠকেও সেতু তৈরির আলোচনা গুরুত্ব পেয়েছিল। শেষমেশ অবশ্য থমকে যায় যাবতীয় আলোচনা। বন্ধ হয়ে যায় মাটি পরীক্ষা-সহ অন্য প্রস্তুতিও। সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া মানলেন, ‘‘প্রথম পর্যায়ে নদীর পলি তোলা-সহ পাম্প হাউস, ডোয়ার্ফ বাঁধ, স্লুস গেট-সহ বন্যার জন্য আটকাতে যাবতীয় কাজ করা হবে। প্রস্তাবিত সেতু তৈরির কাজও শুরু হবে। তবে দ্বিতীয় পর্যায়ে হবে প্রস্তাবিত অন্য কাজ গুলি।” আশায় বুক বেঁধেছিলেন স্থানীয়েরা। ভেবেছিলেন, যোগাযোগ ব্যবস্থার আরও সুরাহা হবে। কিছুটা হতাশ তারা। কটাক্ষ করছে বিরোধীরা। ঘাটালের বিজেপি বিধায়ক শীতল কপাট বলেন, ‘‘এতদিন ধরে তা হলে কী পরিকল্পনা হল?’’

নভেম্বর মাসের গোড়া থেকে জোরকদমে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের কাজ শুরু হয়েছে। পুরোদমে নদী থেকে পলি তোলার কাজ শুরু না হলেও তার সব রকম প্রস্তুতি সারা। এখন এই ড্রেজিং-সহ পাম্প হাউস, ডোয়ার্ফ বাঁধ নির্মাণে জোর দিয়েছে প্রশাসন। অর্থাৎ বন্যার জল আটকানোর জন্য প্রস্তাবিত কাজ গুলি আগে সারতে চায় সেচ দফতর। সম্প্রতি এক বৈঠকও এমন সিদ্ধান্ত স্পষ্ট করেন প্রশাসনিক আধিকারিকরা। দ্বিতীয় পর্যায়ে সব সেতু তৈরি-সহ প্রস্তাবিত বাকি কাজ গুলি করবে সেচ দফতর। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই ক্ষোভ তৈরি হয়েছে বিভিন্ন সাব কমিটি গুলির তরফে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

ghatal

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy