Advertisement
E-Paper

আদিবাসী পড়ুয়াদের টাকা আত্মসাৎ, কাঠগড়ায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক

বৃহস্পতিবার অভিযুক্ত শিক্ষক তুষারকান্তি রায় এবং রাঁধুনি তপন মিশ্রের বিরুদ্ধে প্রায় ২ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ দায়ের করেছেন পাঁশকুড়া থানায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০১৯ ০০:০১
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

বিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসের তপসিলি জাতি ও উপজাতি ছাত্রদের জন্য বরাদ্দ হয়েছিল সরকারি অর্থ। কিন্তু ছাত্রদের জন্য বরাদ্দ সেই টাকার একাংশ আত্মসাৎ করেছেন স্কুলের প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষক। পাঁশকুড়ার রাতুলিয়া হাইস্কুলের প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তথা বর্তমানে সহ শিক্ষক তুষারকান্তি রায়ের বিরুদ্ধে অর্থ তছরুপের অভিযোগ তুলে জেলা অনগ্রসরশ্রেণি কল্যাণ ও উপজাতি উন্নয়ন আধিকারিকের কাছে এমনই অভিযোগ জানিয়েছেন কিছু ছাত্রের অভিভাবক।

অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেন জেলা অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ ও উপজাতি উন্নয়ন আধিকারিক। গত ২৫ জুন ওই আধিকারকের অফিসে অভিযোগকারী অভিভাবক এবং অভিযুক্ত তুষারকান্তি রায়, ছাত্রাবাসের রাঁধুনি তপন মিশ্র ও বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রামকৃষ্ণ মাইতিকে নিয়ে শুনানি হয়। প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, শুনানিতে ছাত্রদের অভিভাবকদের তোলা অর্থ নেওয়ার অভিযোগ স্বীকার করে নেন তুষারকান্তি। শুনানীর পর দফতরের আধিকারিক বিদ্যালয়ের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষক রামকৃষ্ণ মাইতিকে তুষারকান্তি ও ছাত্রাবাসের রাধুনী তপন মিশ্রের বিরুদ্ধে স্থানীয় থানায় এফআইআর করার নির্দেশ দেন। বৃহস্পতিবার অভিযুক্ত শিক্ষক তুষারকান্তি রায় এবং রাঁধুনি তপন মিশ্রের বিরুদ্ধে প্রায় ২ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ দায়ের করেছেন পাঁশকুড়া থানায়। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে।

প্রশাসনিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পাঁশকুড়া ব্লকের রাতুলিয়া হাইস্কুলে ২০১৫ সালের ১ জুলাই থেকে চলতি বছরের ১৯ মার্চ পর্যন্ত ভারপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষক পদে ছিলেন তুষারকান্তি। স্কুলের তপসিলি জাতি ও উপজাতিভুক্ত ছাত্রদের জন্য ছাত্রাবাস রয়েছে। ছাত্রাবাসের পড়ুয়াদের খাওয়া-খরচ বাবদ রাজ্যের অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতর থেকে ২০১৭-’১৮ এবং ২০১৮-’১৯ অর্থ বর্ষে টাকা বরাদ্দ হয়েছিল। অভিযোগ, বরাদ্দ টাকা ছাত্রদের নামে থাকা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা হওয়ার পরে তুষারকান্তি ছাত্রাবাসের রাঁধুনির সাহায্য নিয়ে ব্যাঙ্ক থেকে ওই টাকা তুলিয়ে তার একাংশ ছাত্রদের কাছ থেকে নিয়েছিলেন। এ ভাবেই এক আর্থিক বছরে ১৬ জন ছাত্রের কাছ থেকে ৪ হাজার টাকা করে মোট ৬৪ হাজার টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তুষারকান্তির বিরুদ্ধে।

দুই আর্থিক বছর মিলিয়ে প্রায় ২ লক্ষ টাকা তুষারকান্তি নেন বলে অভিযোগ। ছাত্রদের জন্য বরাদ্দ টাকা নেওয়ার কথা জানতে পেরে যান অভিভাবকেরা। ওই ১৬ জন ছাতের অভিভাবক তুষারকান্তির বিরুদ্ধে অর্থ তছরুপ নিয়ে সম্প্রতি জেলা অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ ও উপজাতি উন্নয়ন আধিকারিকের কাছে অভিযোগ জানান। বিদ্যালয়ের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রামকৃষ্ণ মাইতি বলেন, ‘‘ছাত্রাবাসের পড়ুয়াদের জন্য বরাদ্দ অর্থের একাংশ আত্মসাৎ করা নিয়ে প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল। জেলা অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ ও উপজাতি উন্নয়ন আধিকারিকের দফতরে এই নিয়ে শুনানি হয়। দফতরের আধিকারিকের নির্দেশ মেনে প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে।’’

জেলা অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ ও উপজাতি উন্নয়ন আধিকারিক চিরন্তন প্রামাণিক বলেন, ‘‘ছাত্রাবাসের পড়ুয়াদের জন্য যে অর্থ দেওয়া হয়েছিল সেই টাকা প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষক নিজে নিয়েছেন। অভিভাবকদের অভিযোগ পেয়ে তদন্ত হয় এবং শুনানির পর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’

অভিযুক্ত তুষারকান্তির দাবি, ‘‘স্কুলের ছাত্রাবাসে থাকা পড়ুয়াদের অর্থ নেওয়ার অভিযোগ ঠিক নয়। ওই পড়ুয়াদের খাওয়ার খরচ বাবদ অর্থ আগে স্কুল থেকে খরচ করা হয়েছিল। পরে সেই টাকা বরাদ্দ হওয়ার পরে তার থেকে নেওয়া হয়েছিল। এটা নিয়ে অভিভাবকদের সঙ্গে একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে।’’

Corruption Headmaster Indigenous student
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy