Advertisement
E-Paper

গরমে ক্ষতির আশঙ্কায় মাছ চাষিরা

বৃষ্টির দেখা নেই। তীব্র গরমে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই বাড়ছে পুকুর, খাল, বিলের জলের তাপমাত্রা। অতিরিক্ত গরম জলে মাছের বিভিন্ন রোগের প্রকোপও দেখা দিচ্ছে। বৃষ্টি না হলে মাছের ক্ষতির সম্ভাবনা আরও বাড়বে বলে মৎস্য দফতর সূত্রে দাবি। মৎস্য দফতরের উপ- অধিকর্তা (পশ্চিমাঞ্চল) উৎপল সর বলেন, ‘‘তীব্র গরমের হাত থেকে মাছ বাঁচাতে চাষিদের পুকুরের ধার বরাবর একাধিক জায়গায় তাল পাতা বা নারকেল পাতা কেটে ফেলে দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’’

অভিজিৎ চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ১০ জুন ২০১৫ ০১:১২
রোদ থেকে মাছেদের বাঁচাতে পুকুরে দেওয়া হচ্ছে পানা। ঘাটালে তোলা নিজস্ব চিত্র।

রোদ থেকে মাছেদের বাঁচাতে পুকুরে দেওয়া হচ্ছে পানা। ঘাটালে তোলা নিজস্ব চিত্র।

বৃষ্টির দেখা নেই। তীব্র গরমে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই বাড়ছে পুকুর, খাল, বিলের জলের তাপমাত্রা। অতিরিক্ত গরম জলে মাছের বিভিন্ন রোগের প্রকোপও দেখা দিচ্ছে। বৃষ্টি না হলে মাছের ক্ষতির সম্ভাবনা আরও বাড়বে বলে মৎস্য দফতর সূত্রে দাবি।

মৎস্য দফতরের উপ- অধিকর্তা (পশ্চিমাঞ্চল) উৎপল সর বলেন, ‘‘তীব্র গরমের হাত থেকে মাছ বাঁচাতে চাষিদের পুকুরের ধার বরাবর একাধিক জায়গায় তাল পাতা বা নারকেল পাতা কেটে ফেলে দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’’ তাঁর আরও পরামর্শ, ‘‘জলে অক্সিজেনের জোগান বাড়াতে প্রতি বিঘা পুকুর পিছু ১৫-২০ কিলোগ্রাম চুন জলে মিশিয়ে দিতে হবে। ফলে কিছুটা হলেও মাছেরা স্বস্তি পাবে।’’

সকাল থেকেই ঠা ঠা রোদে এখন পথ চলাই দুষ্কর। প্রচণ্ড গরমে বেলা বাড়তেই পথে-ঘাটে কমে যাচ্ছে লোকের সংখ্যা। রোদে জলের তাপমাত্রা দ্রুত ৪০-৪১ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড পর্যন্ত উঠে যাচ্ছে। সাধারণত রুই, কাতলা, মৃগেল, শোল, বোয়াল জাতীয় মাছ চাষের জন্য পুকুরের জলের গভীরতা ন্যূনতম তিন ফুট থাকা প্রয়োজন। তবে স্বাভাবিক ভাবে পুকুরের জলের গভীরতা সাত ফুট থাকলে ভাল হয়। এই ধরনের মাছ ৩৮ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড পর্যন্ত জলের উষ্ণতা সহ্য করতে পারে। পুকুরে জলের গভীরতা বেশি থাকলে কিছুটা হলেও উত্তাপের হাত থেকে রেহাই পায় মাছ। কিন্তু গরমে জলস্তরের উচ্চতা দ্রুত নেমে যাওয়ায় মাছের ক্ষতির আশঙ্কা বাড়ছে।

ঘাটালের দেওয়নচকের মাছ চাষি বিমল কর, গড়বেতার চাষি বাবলু বারিক, চন্দ্রকোনার রোডের স্বপন সরকাররা বলেন, ‘‘প্রচণ্ড গরমে মাছের পাখনায় নানা রোগ দেখা দিচ্ছে। স্যালো চালিয়ে পুকুরে জল বাড়াচ্ছি। একইসঙ্গে, সময়ের আগেও অনেক মাছ তুলে বিক্রি করে দিয়েছি।’’

উৎপলবাবু বলেন, “জেলার বেশ কয়েকটি এলাকায় গরমের জন্য মাছের ফুলকা, লেজ ও পাখনায় নানা রোগের প্রবণতা বাড়ছে। তাপমাত্রা না কমলে রোগ বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘ক্ষতির হাত থেকে বাঁচতে পঞ্চায়েতের মাধ্যমে দফতরের কর্মীরা মাছ চাষিদের নানা বিষয়ে পরামর্শ দিচ্ছে।” মৎস্য দফতর সূত্রে দাবি, একটু বড় হলেই মাছ তুলে বাজারে বিক্রি করে দিলেও ক্ষতির পরিমাণ কমানো যেতে পারে।

মৎস্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি মরসুমে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মোট ২২ হাজার হেক্টর জলাশয়ের মধ্যে ১২ হাজার হেক্টর জলাশয়ে মাছ ছাষ হয়েছে। প্রকৃতি বাদ না সাধলে জেলায় প্রায় ৪৫ হাজার মেট্রিক টন মাছ উৎপাদনের সম্ভাবনাও রয়েছে। যদিও অনেক পুকুর থেকে ইতিমধ্যেই মাছ তুলে বিক্রি শুরু হয়ে গিয়েছে। তবে গরমে জেলার প্রায় ৪০ শতাংশ জলাশয়ে জলস্তর নেমে যাওয়ায় ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।

মৎস্য দফতরের পরামর্শ, অধিক তাপমাত্রার জেরে জলে অক্সিজেনের জোগান কমে যাচ্ছে। অনেক জলাশয়ের জলও ঘোলা হয়ে যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, পুকুরের ধারে একাধিক জায়গায় তাল পাতা বা কচুরিপানা দিয়ে ছাউনি দিলে ওই জায়গায় তুলনায় ঠান্ডা হবে। ফলে মাছেরা ওই জায়গায় এসে উত্তাপের হাত থেকে খানিকটা রেহাই পাবে। আর পুকুরের জলের গভীরতা তিন ফুটের নিচে নেমে গেলে ওই জলাশয় থেকে মাছ তুলে অন্য পুকুরে ছেড়ে দিতে হবে।

fish Heat wave farmer water body
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy