হোটেল ম্যানেজার দেবাশিষ ঘোষ মজুমদার। নিজস্ব চিত্র
খালে ভেসে উঠেছিল মাঝবয়সী ব্যক্তির দেহ। তার পরিচয় জানতে গিয়েই সামনে এল খুনের রহস্য। অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে সেই রহস্যের কিনারাও করল পুলিশ।
কাঁথির ব্রজলালচক রানিবসান সেতুর কাছে সাতমাইল খাল থেকে বৃহস্পতিবা এক ব্যক্তির মৃতদেহ উদ্ধার হয়। তবে মৃতের গলায় আঘাতের চিহ্ন দেখে সন্দেহ হয় তদন্তকারীদের। কাঁথি থানার পুলিশ সুয়োমোটো খুনের মামলা দায়ের করে তদন্তে নামে।
প্রথমেই মৃতের পরিচয় জানতে কাঁথি ও এগরা মহকুমার সব থানায় তার ছবি পাঠানো হয়। বৃহস্পতিবার সন্ধেয় ছবি দেখে চিনতে পারেন মন্দারমণি থানার ওসি রাজকুমার দেবনাথ। তিনি কাঁথি থানার আইসি তাপস পালকে জানান, মৃতের নাম দেবাশিস ঘোষ মজুমদার (৪৮)। তিনি মন্দারমণির এক হোটেলের ম্যানেজার ছিলেন। বাড়ি উত্তর ২৪ গরগনার নৈহাটির মিত্রপাড়ায়।
মন্দারমণি থানার পুলিশই বৃহস্পতিবার রাতে দেবাশিসবাবুর বাড়িতে এবং তিনি যে হোটেলের ম্যানেজার ছিলেন, তার মালিকদের সব জানান। ওই রাতেই কাঁথি ও মন্দারমণি থানার পুলিশ হোটেলে যায়। জিজ্ঞাসাবাদে দেখা যায়, হোটেল লাগোয়া পানশালার ম্যানেজার রেহানউল্লা গরহাজির। শুক্রবার সকালে কাঁথির এড়াফতেপুরে রেহানউল্লার বাড়িতে হানা দেয় পুলিশ। জেরার মুখে দেবাশিসবাবুকে খুনের কথা স্বীকার করে রেহানউল্লা। তাকে গ্রেফতার করা হয়। পূর্ব মেদিনীপুরের অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার ইন্দ্রজিৎ বসু বলেন, “রেহানউল্লা স্বীকার করেছে খুনের পর দেহ নিজের গাড়িতে চাপিয়ে খালে ফেলে এসেছিল সে।’’ গাড়িটি বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, হোটেলের দুই মালিক কলকাতায় থাকেন। দেবাশিসবাবুই ব্যবসার খুঁটিনাটি দেখতেন। সম্প্রতি কয়েক লক্ষ টাকার হিসেব না মেলায় পানশালার ম্যানেজার রেহানউল্লাকে তলব করেন দেবাশিসবাবু। পুলিশের দাবি, সেই ক্ষোভেই বুধবার রাত বারোটা নাগাদ দেবাশিসবাবুর ঘরে ঢুকে মুখে বালিশ চাপা দিয়ে খুন করে রেহানউল্লা। বিছানার চাদরে মুড়ে গাড়িতে দেহটি নিয়ে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে সাতমাইলের খালে ফেলে দেয়।
আত্মীয় সৈকত লাহিড়ী জানান, বুধবার সন্ধ্যায় স্ত্রী আলপনাকে ফোনে দেবাশিসবাবু বলেন, ‘হোটেলে গণ্ডগোল। রবিবার ফিরে বলব।’ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে নিখোঁজ দেবাশিসবাবু। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পুলিশের ফোনে খুনের কথা জানতে পারে তাঁর পরিবার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy