কুণাল ঘোষ এবং শুভেন্দু অধিকারী। —ফাইল চিত্র।
আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে পূর্ব মেদিনীপুরের দুই লোকসভা কেন্দ্রকেই পাখির চোখ করেছেন বিজেপি নেতা তথা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। নিজের জেলার দুই কেন্দ্র তমলুক ও কাঁথি দিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে উপহার দেওয়ার ঘোষণা প্রকাশ্য সভাতেই করেছেন নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক।
আর এই আবহে জেলায় এসে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বুঝিয়ে দিলেন, পূর্ব মেদিনীপুরে দলের লড়াই মুখ্যত শুভেন্দুর সঙ্গে।জেলায় তৃণমূলের যাঁরা শুভেন্দুর সমালোচনা এড়িয়ে যাবেন, দল ধরে নেবে তাঁরা পাঁচিলের উপরে বসে আছেন এবং সে জন্য দলীয় কর্মসূচিতে নজরও রাখা হবে বলে স্পষ্ট করে দিয়েছেন কুণাল। সঙ্গে জানালেন, এই জেলার জন্য এ বার স্লোগান, জোড়া আসনে জোড়া ফুল।
সম্প্রতি তৃণমূলের জেলা সভাপতি পদে রদবদলের পরে সোমবার তমলুক সাংগঠনিক জেলা কমিটির বর্ধিত সভা ডাকা হয়েছিল তমলুকের নিমতৌড়ি স্মৃতি সৌধে। সেখানে সদ্য নিযুক্ত জেলা সভাপতি অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়, বিদায়ী জেলা সভাপতি তথা তমলুকের বিধায়ক সৌমেন মহাপাত্র, রাজ্যে মৎস্যমন্ত্রী বিপ্লব রায়চৌধুরী, জেলায় দলের সব বিধায়ক-সহ জেলা কমিটি ও ব্লক সভাপতি-সহ শাখা সংগঠনের নেতৃত্ব এবং পঞ্চায়েতের পদাধিকারীরা উপস্থিত ছিলেন। সেখানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দুর কড়া সমালোচনা করেন কুণাল। জেলার তৃণমূল নেতাদের উদ্দেশ্যে তাঁর পরামর্শ, "একটু বক্তাদের তালিকাগুলো খেয়াল করবেন। এমন বক্তা দেবেন না ২০ মিনিট বক্তৃতা হল এলাকায়, একবারও শুভেন্দুর নাম উচ্চারণ হল না। তার মানে তাঁরা পাঁচিলে বসে আসে।" কুণালের মতে, "শুভেন্দুকে দাঁড়িয়ে যদি চোর, চিটিংবাজ, জালিয়াত না বলতে পারে, পূর্ব মেদিনীপুরে আজকের দিনে তাঁর তৃণমূলের সৈনিক হওয়ার অধিকার নেই। লিখে রেখে দিন, কেন্দ্রে যদি সরকার পরিবর্তন হয়, এক মাসের মধ্যে সিবিআইকে দিয়ে কলার ধরে শুভেন্দুকে অ্যারেস্ট করানো হবে।’’
আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের জন্য এখন থেকেই জনসংযোগ বৃদ্ধিতে গ্রামে গ্রামে ফের চাটাই বৈঠক করার পরামর্শ দেন কুণাল। আর সেখানে ঘুরেফিরে নিশানায় সেই শুভেন্দু। সভায় কুণাল বলেন, "শুভেন্দু আর তাঁর দল বিজেপির কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যের মানুষকে কী ভাবে বঞ্চিত করেছে, তা মানুষের কাছে গিয়ে বলতে হবে। আর রাজ্য সরকার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে কী কী সুবিধা পৌঁছে দিয়েছে, তাও মানুষকে জানাতে হবে। গ্রামে গ্রামে চাটাই বৈঠক করতে হবে । পুর এলাকায় ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে বৈঠকের মাধ্যমে জনসংযোগ গড়ে তুলতে হবে। বড় জনসভা নয়। ছোট ছোট বৈঠক করে প্রচার করতে হবে।" কুণাল মনে করিয়ে দেন, "এ বারের পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে এ ভাবে চাটাই বৈঠক করে আমরা সুফল পেয়েছি।’’ আর দলের গোষ্ঠী কোন্দল বন্ধে জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত এই রাজ্য নেতার বার্তা, "বিরোধী নেই ভেবে নিজেদের মধ্যে টিম করে খেলবেন না। নিজেদের একটাই টিম, খেলব বিরোধীদের সাথে।’’
বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলা সহ-সভাপতি আনন্দময় অধিকারীর মতে, ‘‘তৃণমূল শুভেন্দু আতঙ্কে ভুগছে। আসন্ন লোকসভা ভোটে হারার ভয় পাচ্ছে। আর কুণাল তো নিজেই একজন চিটিংবাজ।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy