Advertisement
০২ মে ২০২৪
Kurmi Community Protest

ফের কুড়মি বন্‌ধ, ‌মোকাবিলায় পুলিশও

পুলিশের তরফে অবশ্য জানানো হয়েছে, গায়ের জোরে বন্‌ধ, হরতাল বেআইনি। তা ছাড়া আজ, বুধবার বহু বৌভাতের অনুষ্ঠান রয়েছে।

Kurmi Community on protest

জঙ্গলমহল জুড়ে ১২ ঘন্টার ‘হুড়কা জাম’ ও বন্‌ধের ডাক দিয়েছে।  — ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০২৩ ০৮:১১
Share: Save:

পঞ্চায়েত ভোটের আগে কুড়মিদের আন্দোলনের পারদ ক্রমেই চড়ছে। আজ, বুধবার কুড়মি সমাজ (পশ্চিমবঙ্গ)-এর নেতৃত্বাধীন ঘাঘর ঘেরা কমিটি জঙ্গলমহল জুড়ে ১২ ঘন্টার ‘হুড়কা জাম’ ও বন্‌ধের ডাক দিয়েছে।

পুলিশের তরফে অবশ্য জানানো হয়েছে, গায়ের জোরে বন্‌ধ, হরতাল বেআইনি। তা ছাড়া আজ, বুধবার বহু বৌভাতের অনুষ্ঠান রয়েছে। তাই জনস্বার্থে জনজীবন স্বাভাবিক রাখতে জেলার সর্বত্র নজরদারি চালাবে পুলিশ। এ জন্য বাড়তি পুলিশও মোতায়েন হচ্ছে। কুড়মি সমাজ (পশ্চিমবঙ্গ)-এর নেতা রাজেশ মাহাতো যদিও বলছেন, ‘‘দাবি আদায়ে ও প্রতিবাদ জানাতে রাজনৈতিক দলগুলিও বন্‌‌ধ-অবরোধ করে। আমরাও জাতিসত্তার দাবিতে, সমাজের স্বার্থে বনধ ও হুড়কা জামের ডাক দিয়েছি। জোর করে বনধ ও হুড়কা জাম তোলার চেষ্টা হলে সংঘাত বাধবে।’’ তবে বন্‌ধে শামিল হচ্ছে না আদিবাসী কুড়মি সমাজ। এই সংগঠনের মূল মানতা (মুখ্য উপদেষ্টা) অজিতপ্রসাদ মাহাতো অবশ্য বলছেন, ‘‘আমরা হুড়কা জাম ডাকিনি। ওই কর্মসূচিতে নৈতিক সমর্থন থাকলেও আমরা কিন্তু সক্রিয় সমর্থন করছি না।’’

কুড়মি সমাজ (পশ্চিমবঙ্গ) এর নেতৃত্বাধীন ঘাঘর ঘেরা কেন্দ্রীয় কমিটি জানিয়েছে, রাজ্য সরকারের অমানবিক মনোভাবের প্রতিবাদেই আজ ১২ ঘন্টার বনধ ও হুড়কা জামের ডাক দেওয়া হয়েছে। তাদের অভিযোগ, কুড়মিদের জনজাতি তালিকাভুক্তির জন্য প্রয়োজনীয় জাস্টিফিকেশন কেন্দ্রের কাছে পাঠানোর বিষয়টি বছরের পর বছর ফেলে রাখা হয়েছে। আন্দোলনকারী নেতৃত্বের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে কন্ঠরোধের চেষ্টা হচ্ছে। নবান্নে বৈঠকে ডেকেও দুর্ব্যবহার করা হয়েছে। সিআরআই (কালচারাল রিসার্চ ইনস্টিটিউট) দফতরেও আন্দোলনকারীদের সঙ্গে অমানবিক আচরণ করা হয়েছে।

প্রতিবাদে কুড়মি গ্রামে কোনও রাজনৈতিক কর্মসূচি ও নির্বাচনী দেওয়াল লিখন করতে দেওয়া হবে না ঘোষণা করেছে ঘাঘর ঘেরা কমিটি। গত ২৪ এপ্রিলও জঙ্গলমহলের চার জেলায় (ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর, পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া) বনধ ও হুড়কা জামের ডাক দিয়েছিল এই কমিটি। তবে ইদ ও বিয়ের তারিখ থাকায় সোমবারের বন্‌ধ পিছিয়ে দিয়ে বুধবার করা হয়। কুড়মি রাজনৈতিক ব্যক্তিদেরও সমাজের স্বার্থে দলীয় পদ থেকে ইস্তফার আহ্বান জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। অন্যথায় কুড়মি বিরোধী হিসেবে তাঁদের সমাজচ্যুত করার হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছে।

সূত্রের খবর, রাজেশরা রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়ানোয় বিষয়টিকে হালকাভাবে নিচ্ছে না নবান্নের শীর্ষমহল। পাশাপাশি, পঞ্চায়েত ভোটের আগে কুড়মি গ্রামে রাজনৈতিক কর্মসূচি ও দেওয়াল লিখনে বাধার হুমকিও শাসকদলকে ভাবাচ্ছে। তবে সূত্রের খবর, এক্ষেত্রে হঠকারী পদক্ষেপ নয়, বরং ব্যাপক পুলিশ মোতায়েন করে বুধবার জনজীবন স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করা হবে।

ঝাড়গ্রাম জেলার পুলিশ সুপার অরিজিৎ সিনহা বলছেন, ‘‘জনজীবন স্বাভাবিক রাখতে বুধবার জেলার সর্বত্র পুলিশ মোতায়েত থাকবে। বাড়তি পুলিশি ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কেউ জোর করে দোকানপাট বন্ধ ও যানবাহন আটকানোর চেষ্টা করলে আইনি পদক্ষেপ করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kurmi Community Jhargram jangal mahal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE