অঙ্ক পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি ফিরে বিশেষ কোনও কথাবার্তা বলেনি ১৬ বছরের শুভম দুয়ারী। শনিবার রাতে খাওয়া-দাওয়া করে নিজের ঘরে ঢুকে গিয়েছিল মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। রবিবার সকালে ডাকাডাকি করেও ছেলের সাড়া না পেয়ে দরজা ঠেলে ঘরে ঢোকেন বাড়ির লোকজন। তার পরেই উদ্ধার হল পরীক্ষার্থীর ঝুলন্ত দেহ। এই ঘটনায় চাঞ্চল্য পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলা থানারা জলচকের নারাথা গ্রামে। স্থানীয় সূত্রের খবর, পরীক্ষা খারাপ হওয়ার কারণে আত্মহত্যা করেছে ওই পরীক্ষার্থী। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
পিংলার বাগনাবাড় হাই স্কুলের ছাত্র ছিল শুভম। তার পরীক্ষাকেন্দ্র ছিল তিলন্তপাড়া হাই স্কুলে। পরিবার সূত্রে খবর, শনিবার অঙ্ক পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি ফিরে কারও সঙ্গে তেমন কথাবার্তা বলেনি সে। মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছিল। রাতে খাওয়া-দাওয়া করে ঘুমোতে যায়। রবিবার সকালে তার সাড়াশব্দ না পেয়ে ডাকাডাকি করা হয়। কিন্তু সাড়া মেলেনি। এর পর দরজা ঠেলে ঘরে ঢুকে দেখা যায় গলায় ফাঁস নিয়ে ঝুলছে ওই কিশোর। তড়িঘড়ি তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু চিকিৎসকেরা শুভমকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
ছাত্রের দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের প্রক্রিয়া শুরু করেছে পিংলা থানার পুলিশ। চলতি বছরে মাধ্যমিক পরীক্ষার দায়িত্বপ্রাপ্ত পশ্চিম মেদিনীপুরের কনভেনর সুভাষ জানা বলেন, ‘‘খুবই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করছি। ঠিক কী হয়েছিল, খবর নেওয়া হচ্ছে।’’ ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় শোকস্তব্ধ বাগনাবাড় হাই স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্কুলের প্রধানশিক্ষক অজয় কুমার দেবনাথ বলেন, ‘‘মর্মান্তিক খবর। আমরা শোকস্তব্ধ। শুভম মাঝারি মানের ছাত্র ছিল। শুনলাম, ওর অঙ্ক পরীক্ষা আশানুরূপ হয়নি। কিন্তু তার জন্য এমন পদক্ষেপ করবে কেউ ভাবতে পারেননি।’’
আরও পড়ুন:
উল্লেখ্য, চলতি বছরে বিভিন্ন জেলায় একাধিক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর মৃত্যুর খবর মিলেছে। উত্তর ২৪ পরগনা গুমা এলাকায় সোনালি খাতুন নামে এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে। মায়ের সঙ্গে ঝগড়ার পর বাড়ি থেকে বেরিয়ে বন্ধুর বাড়িতে ছিল অর্পিতা মণ্ডল নামে এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। গত বৃহস্পতিবার বান্ধবীর বাড়ি থেকেই তার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। মেয়েটি শিলিগুড়ি মহকুমার নকশালবাড়ির বাসিন্দা। নন্দপ্রসাদ হাই স্কুলের ছাত্রী ছিল।