সিপিএমের প্রাক্তন যুব নেতা খুনে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা-কর্মীরা এখনও অধরা। শনিবার রাত পর্যন্ত কেউই গ্রেফতার হয়নি। পুলিশ সূত্রের দাবি, অভিযুক্তরা পলাতক। এলাকায় নেই। তাই তাদের ধরা সম্ভব হয়নি। অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে বলেও ওই সূত্রের দাবি। জেলা পুলিশের এক কর্তার আশ্বাস, “তদন্ত চলছে। অভিযোগের ভিত্তিতে উপযুক্ত ব্যবস্থাই নেওয়া হবে।”
বুধবার রাতে কলকাতার এসএসকেএমে মৃত্যু হয় গৌতম মিত্রের। গৌতমবাবু অবিভক্ত মেদিনীপুরে সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফের জেলা সভাপতি ছিলেন। সংগঠনের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যও ছিলেন। বাড়ি মেদিনীপুর সদর ব্লকের খয়েরুল্লাচকে। গত মঙ্গলবার সকালে তিনি যখন বাড়ি থেকে বেরিয়ে খয়েরুল্লাচকের বাজারের দিকে আসেন, তখনই স্থানীয় তৃণমূল নেতা বিশ্বজিত্ কর্মকারের নেতৃত্বে তাঁর উপরে হামলা হয় বলে অভিযোগ। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে এসএসকেএমে নিয়ে যাওয়া হয়। বুধবার রাতে মৃত্যু হয়। বৃহস্পতিবার কোতোয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগ জানান গৌতমবাবুর ভাই অলোক মিত্র। অভিযোগে বিশ্বজিৎ ছাড়াও নাম রয়েছে স্থানীয় তৃণমূল কর্মী ইন্দ্রজিৎ কর্মকার এবং শুভঙ্কর দে-র। অলোকবাবুর দাবি, বিশ্বজিতের নেতৃত্বেই তৃণমূলের ছেলেরা দাদাকে রাস্তায় ফেলে কিল-ঘুষি মারে। অভিযোগ পেয়ে খুনের ধারায় মামলা রুজু করে তদন্তে নেমেছে পুলিশ।
গৌতমবাবুর মরদেহ বৃহস্পতিবার রাতে মেদিনীপুরে পৌঁছয়। বহু মানুষ তাঁকে শেষশ্রদ্ধা জানান। প্রথমে দেহ নিয়ে যাওয়া হয় ডিওয়াইএফের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা কার্যালয়ে। এখানে ছিলেন সিপিএমের জেলা সম্পাদক তরুণ রায়, দলের রাজ্য কমিটির সদস্য তাপস সিংহ, দলের জেলা কমিটির সদস্য কীর্তি দে বক্সী প্রমুখ। ছিলেন দলের ছাত্র-যুব নেতারাও। সকলেই শেষশ্রদ্ধা জানান। এরপর দেহ নিয়ে যাওয়া হয় মেদিনীপুর ক্লাবে। গৌতমবাবু মেদিনীপুর ক্লাবের সদস্য ছিলেন। ক্লাব থেকে দেহ নিয়ে যাওয়া হয় খয়েরুল্লাচকে। নিহত নেতার বাড়িতে। গৌতম মিত্রের দেহ পৌঁছনোর পরই খয়েরুল্লাচকে কান্নার রোল ওঠে। আশপাশের প্রচুর মানুষ এসে মরদেহে মাল্যদান করেন। গৌতমবাবুর সঙ্গে বন্ধু ছিলেন সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য তাপস সিংহের। তাপসবাবু বলছিলেন, “গৌতমের এ ভাবে চলে যাওয়াটা মেনে নিতে পারছি না। শাসক দলের নিষ্ঠুর সন্ত্রাসের শিকার হয়েছে ও। প্রতিবাদ-প্রতিরোধই সন্ত্রাস রোখার একমাত্র পথ।”
অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে পথেও নেমেছে ডিওয়াইএফ। শুক্রবার জেলার বিভিন্ন এলাকায় মিছিল হয়। শনিবারও বেশ কয়েকটি এলাকায় প্রতিবাদ কর্মসূচি হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy