Advertisement
E-Paper

স্বাস্থ্যসাথীেত নেই অনেক নার্সিংহোমই

একাংশ হাসপাতালের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ‘স্বাস্থ্যসাথী’র কার্ডে চিকিৎসা না করে রোগীকে ফেরানো হচ্ছে।

বরুণ দে

শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০২১ ০৬:৪৮
প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

‘দুয়ারে সরকার’ শিবিরে সবচেয়ে সাড়া ফেলেছে চিকিৎসা বিমার প্রকল্প ‘স্বাস্থ্যসাথী’। বিপুল আবেদন জমা পড়ছে। ভোটের মুখে হাতে হাতে কার্ডও ধরাচ্ছে সরকার। কিন্তু সরকারি হাসপাতাল তো হাতেগোনা, আর পশ্চিম মেদিনীপুরের অনেক বেসরকারি হাসপাতাল এবং নার্সিংহোমই ‘স্বাস্থ্যসাথী’র আওতায় নেই।

ফলে এত মানুষ কী করে প্রকল্পের সুবিধা পাবেন, প্রশ্ন সেই উঠছে। একাংশ হাসপাতালের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ‘স্বাস্থ্যসাথী’র কার্ডে চিকিৎসা না করে রোগীকে ফেরানো হচ্ছে। বিষয়টা যে রাজ্য সরকারের নজরে রয়েছে, তা প্রকাশ পেয়েছে খোদ মুখ্যমন্ত্রী বক্তব্যেই। সোমবার নদিয়ার রানাঘাটের সভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘অনেক বড় বড় হাসপাতাল রয়েছে, কখনও কখনও বলে দেয়, এখানে স্বাস্থ্যসাথী করব না। আমরা তাদের বলে দিতে চাই যে, করতে হবে।’’ মুখ্যমন্ত্রী আরও জুড়েছেন, ‘‘যদি কেউ চিকিৎসা না দেয়, সরকারের হাতে কিন্তু লাইসেন্স বাতিল করে দেওয়ার ক্ষমতাও রয়েছে।’’

জানা যাচ্ছে, আগে থেকেই জেলার প্রায় ন’লক্ষ পরিবার ‘স্বাস্থ্যসাথী’ প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত ছিল। নতুন আরও প্রায় ছ’লক্ষ পরিবার অন্তর্ভুক্ত হতে চলেছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের অবশ্য দাবি, সমস্যা এড়াতে পদক্ষেপ করা শুরু হয়েছে। জেলার সব বেসরকারি হাসপাতাল এবং নার্সিংহোমকেই ‘স্বাস্থ্যসাথী’র আওতায় আনা হচ্ছে। সোমবার এ নিয়ে মেদিনীপুরে এক বৈঠকও হয়েছে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিমাইচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘জেলার সব বেসরকারি হাসপাতাল এবং নার্সিংহোমই স্বাস্থ্যসাথীর আওতায় চলে আসবে।’’ জেলার উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌম্যশঙ্কর সারেঙ্গী বলেন, ‘‘জেলার সব বেসরকারি হাসপাতাল এবং নার্সিংহোমকেই স্বাস্থ্যসাথী সংক্রান্ত হেল্প-ডেস্ক চালু করতে বলা হচ্ছে।’’ যে সব বেসরকারি হাসপাতাল এবং নার্সিংহোম ‘স্বাস্থ্যসাথী’র আওতায় আসতে নিম-রাজি হবে, তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে।

পশ্চিম মেদিনীপুরে ১০৪টি বেসরকারি হাসপাতাল এবং নার্সিংহোম রয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, এর মধ্যে খাতায়-কলমে ‘স্বাস্থ্যসাথী’র আওতায় রয়েছে ৬৬টি। বাকি ৩৮টি আওতার বাইরে। যে ৬৬টি আওতায় রয়েছে, তার মধ্যে আবার ৩১টি থেকে ‘স্বাস্থ্যসাথী’র পরিষেবা মেলে না বলে অভিযোগ। অথচ, জেলায় ‘স্বাস্থ্যসাথী’ প্রকল্পের উপভোক্তার সংখ্যা ক্রমে বাড়ছে। পরিস্থিতি দেখেই স্বাস্থ্যসাথীকে ‘নো রিফিউজাল’ প্রকল্প হিসেবে দেখার জন্য বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জানানো হয়েছে, ‘স্বাস্থ্যসাথী’ কার্ড নিয়ে কেউ চিকিৎসা করাতে গেলে ফেরানো যাবে না। পরিষেবা দিতেই হবে। বেসরকারি হাসপাতালগুলির বক্তব্য, এই প্রকল্পে রাজ্য সরকারের বেঁধে দেওয়া বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা খরচ অত্যন্ত কম। চিকিৎসা খরচ বাড়ানো উচিত। মেদিনীপুরের এক বেসরকারি হাসপাতালের তরফে মনোজ পতি বলেন, ‘‘স্বাস্থ্যসাথীর আওতায় আসতে আমাদের অসুবিধা নেই। তবে স্বাস্থ্যসাথীতে বিভিন্ন রোগের চিকিৎসার যে খরচ রয়েছে, তা আমাদের মতো হাসপাতালগুলির স্বাভাবিক খরচের তুলনায় খুবই কম।’’

বিরোধীদের অবশ্য দাবি, ভোটের দিকে তাকিয়েই সকলের জন্য ‘স্বাস্থ্যসাথী’ প্রকল্পের ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। অথচ, পরিষেবা নিশ্চিতের ব্যবস্থা করা হয়নি। বিজেপির জেলা সভাপতি শমিত দাশ বলেন, ‘‘আয়ুষ্মান ভারত এখানে চালু করা হয়নি। ভোটের আগে ঠ্যালায় পড়েই সকলের জন্য স্বাস্থ্যসাথী ঘোষণা করা হয়েছে।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, ‘‘সাধারণ মানুষের সুবিধের জন্যই এত মানুষকে স্বাস্থ্যসাথীর আওতায় আনা হচ্ছে।’’

Swasthya Sathi Nursing Home
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy