লক্ষ্মীপুজোর আবহে আজ, বৃহস্পতিবার মনসা পুজো। ডাক সংক্রান্তিতে মনসা পুজোয় লক্ষ্মী ও সরস্বতীর বন্দনা হয় একইসঙ্গে। তবে পুজো মণ্ডপে থাকছে নারী শক্তির সচেতনতার বার্তা। তাই এ বার পুজোর থিমের নাম দেওয়া হয়েছে ‘মাতৃ আরাধনায় মাতৃশক্তির জয় হোক’।
কয়েকশো বছরের রীতি মেনে ডাক সংক্রান্তিতে মনসা, লক্ষ্মী ও সরস্বতীর বন্দনা হয় বেলিয়াবেড়া ব্লকের আশকোলা গ্রামে। মনসা পুজোর পাশাপাশি হয় প্রাচীন ঝাঁপান উৎসবও। আশ্বিন মাসের সংক্রান্তিকে বলা হয় ডাক সংক্রান্তি। আজ, বৃহস্পতিবার সেই দিন। পুরনো রীতি মেনে আশকোলা গ্রামে মনসা পুজো হয়ে আসছে একশো বছরের বেশি সময় ধরে। তবে আশকোলার পাশাপাশি জেলা জুড়েই মনসা পুজো হয়। কোথাও কোথাও আবার স্থায়ী মণ্ডপে মনসার আরাধনা হয়। ঝাড়গ্রাম ইন্দিরাদেবী সরকারি মহিলা মহাবিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ তথা লোকসংস্কৃতি গবেষক সুশীলকুমার বর্মন বলেন, ‘‘আশ্বিন মাসের সংক্রান্তির দিনে ধানের ফলন ভাল করার জন্য দেবদেবীর পুজো করা হয়। তাই এই সংক্রান্তির নাম ডাক সংক্রান্তি। এই দিনে মনসা পুজো হয়। ডাক সংক্রান্তির দিন বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া জেলায় হাঁস বলি দেওয়া হয়।’’ আশকোলা গ্রামের এই পুজোকে ঘিরে এক ইতিহাস রয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৈকুণ্ঠ দাস নামে এক ব্যক্তির হাত ধরে আশকোলা গ্রামে এই পুজো শুরু হয়েছিল। ওই ব্যক্তি স্বপ্নাদেশ পেয়েছিলেন। এই পুজোয় দু’টি ঘট বসানো হয়। বৈকুণ্ঠের বংশধরেরা জানাচ্ছেন, তাঁর পূর্বপুরুষ পুজো শুরু করার পরে একবার গ্রামের নদী থেকে ঘট তুলে আনার সময়ে সেটি ভেঙে গিয়েছিল। নিয়ম অনুযায়ী, গ্রামের লোকজন চোরচিতা গ্রামের এক মহারাজের কাছে পরামর্শ নিতে যেতেন। সেই মহারাজ জানান, মনসার সঙ্গে শীতলার নামেও ঘট প্রতিস্থাপন করতে হবে। সেই থেকে দু’টি ঘটের প্রচলন রয়েছে। গ্রামে স্থায়ী মনসা মন্দির রয়েছে। সেখানে পুজো করার পরে মণ্ডপে মনসার পুজো শুরু হয়। সেই মণ্ডপে একই সঙ্গে লক্ষ্মী ও সরস্বতীর পুজোও হয়। দুই জায়গাতেই কোনও পুরোহিত পুজো করেন না।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)