ঘটনার ১৪ বছর পর শিলদাকাণ্ডে সাজা ঘোষণা আদালতের। — ছবি: রয়টার্স।
ঝাড়গ্রামের শিলদায় ইএফআর শিবিরে মাওবাদী হামলা হয়েছিল ১৪ বছর আগে। মঙ্গলবার সেই মামলায় ২৩ জনকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল মেদিনীপুরের অতিরিক্ত জেলা এবং দায়রা আদালত। বুধবার, সেই আদালতের বিচারক সেলিম শাহী ১৩ জনের সাজা ঘোষণা করলেন। ১৩ জনেরই যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। বৃহস্পতিবার বাকিদের সাজা শোনাবে আদালত।
২০১০ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি সিপিআই মাওবাদীর একটি গেরিলা স্কোয়াড হামলা চালিয়েছিল শিলদা স্বাস্থ্যকেন্দ্র লাগোয়া ইএফআর শিবিরে। ২৪ জন ইএফআর জওয়ানকে হত্যা করার পাশাপাশি, শিবির থেকে ইনসাস এবং অ্যাসল্ট কালাশনিকভ (একে) সিরিজের একাধিক আধুনিক রাইফেল, কার্বাইন-সহ প্রচুর অস্ত্রও লুট হয়েছিল সে দিন। সেই ঘটনায় মঙ্গলবারই ২৩ জন অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করেছিলেন বিচারক। বুধবার সকালে দোষীদের মধ্যে ১৩ জনকে আনা হয় বিচারক সেলিম শাহীর এজলাসে। আদালতে তোলা হয়েছিল মানস মাহাতো, রাজেশ হাঁসদা, শুকলাল সরেন, কানাই হাঁসদা, শান্তনু সরেন, শ্যামচরণ হাঁসদা, কল্পনা মাইতি (অনু), রাজেশ মুন্ডা, মনসারাম হেমব্রম, ঠাকুরমণি হেমব্রম (তারা), ইন্দ্রজিৎ কর্মকার, কাজল মাহাতো এবং মঙ্গল সরেনকে। আদালতে ঢোকার মুখে তাঁরা নিজেদের নির্দোষ বলে দাবি করেছিলেন। বিচারক দোষীদের কাছে জানতে চান, কিছু বলার আছে কি না। আসামিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘আদালত দোষী সাব্যস্ত করেছে আপনাদের। কী বলার আছে বলতে পারেন। নিজেদের নির্দোষ বলে লাভ নেই। আপনারা এ দিনের রায়ের পর কপি পেয়ে যাবেন। তার পর হাইকোর্টে আবেদন করতে পারেন।’’ এর পর দোষীরা প্রত্যেকেই নিজের এবং পরিবারের বর্তমান অবস্থার কথা জানান আদালতকে।
প্রসঙ্গত, মাওবাদী হামলায় ২৪ জন ইএফআর জওয়ানের মৃত্যু হয়েছিল। আহত হয়েছিলেন আরও তিন জওয়ান। বাহিনীর পাল্টা আক্রমণে প্রাণ হারিয়েছিলেন পাঁচ মাওবাদীও। হামলার পর শিবিরে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল মাওবাদীরা। এই ঘটনার পরেই শিলদা থেকে ইএফআর শিবির তুলে দেওয়া হয়। হামলাস্থলের কাছেই তৈরি করা হয় রাজ্য পুলিশের স্ট্র্যাকো বাহিনীর শিবির। সেই ঘটনার ১৪ বছর পর নিহত জওয়ানরা সুবিচার পেলেন। আদালত দোষী ১৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে। পাশাপাশি, করা হয়েছে ১০ হাজার টাকা জরিমানাও। অনাদায়ে আরও তিন মাসের জেল।
মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআরের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য জয়শ্রী পাল-সহ কয়েক জন হাজির ছিলেন আদালতে। জয়শ্রী বলেন, ‘‘মিথ্যে সাক্ষীর বয়ানে সাজা ঘোষনা হয়েছে। এফআইআরের ধারা অনুযায়ী সাজা দেওয়া হয়েছে। বিচারের নামে প্রহসন হয়েছে। এই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের আবেদন করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy