Advertisement
E-Paper

শিশুর খোঁজ নেই, ধৃত বাবা-মা

কাঁথি থানার সিভিক ভলান্টিয়ার শুভজিৎ পইড়্যার ১২ দিনের শিশুকন্যার রাতারাতি নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় শনিবার নাটকীয় ভাবে তল্লাশি চলল এলাকায়। দেশপ্রাণ ব্লকের সফিয়াবাদ গ্রামের ওই ঘটনায় এ দিন কলকাতার ভবানীভবন থেকে আনা হয় পুলিশ কুকুর।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০১৮ ০০:৪৪
শনিবার পুলিশ কুকুর নিয়ে তল্লাশি পুলিশের। নিজস্ব চিত্র

শনিবার পুলিশ কুকুর নিয়ে তল্লাশি পুলিশের। নিজস্ব চিত্র

রসুলপুর নদীর পাশের একটি খাল পাড় ধরে প্রশিক্ষকের সঙ্গে গন্ধ শুঁকতে শুঁকতে ছুটে চলেছে পুলিশ কুকুর। আর তার বেশ খানিকটা পিছনে চলেছে কয়েকশো গ্রামবাসী। শেষে একটি সেতুর সামনে এসে ছোটা থামায় পুলিশ কুকুর। জলের দিকে তাকিয়ে তারস্বরে চিৎকার করতে করতে শুরু করে সে। নিমেষে গোটা এলাকা ঘিরে ফেলে পুলিশ।

কাঁথি থানার সিভিক ভলান্টিয়ার শুভজিৎ পইড়্যার ১২ দিনের শিশুকন্যার রাতারাতি নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় শনিবার নাটকীয় ভাবে তল্লাশি চলল এলাকায়। দেশপ্রাণ ব্লকের সফিয়াবাদ গ্রামের ওই ঘটনায় এ দিন কলকাতার ভবানীভবন থেকে আনা হয় পুলিশ কুকুর। শিশুটির খোঁজ না পাওয়া গেলেও ঘটনায় এ দিন শুভজিৎ, তাঁর স্ত্রী সীমা, শাশুড়ি জ্যোৎস্না সামন্ত, শুভজিতের বাবা সুপ্রভাত পইড়্যা এবং মা মৃণালকলি পইড়্যাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, জেরায় সুপ্রভাত স্বীকার করেছে যে, ১২ দিনের নাতনির বাড়িতেই মৃত্যু হয়েছিল। সে তার দেহ চারফুকার সেতু থেকে জলে ফেলে দিয়েছে।

এ দিন সকাল থেকেই সফিয়াবাদ গ্রামে পুলিশ তল্লাশি চলে। পুলিশ কুকুর প্রথমে শুভজিতের বাড়িতে তল্লাশি করে। বাড়িতে শিশুটির ব্যবহৃত বেশ কিছু কাপড় ছিল। সেগুলির গন্ধ শুঁকে কুকুর শুভজিতের বাড়ির পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া খালের একটি পাড় ধরে ছুটতে থাকে। বাড়ি থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে উত্তর দেউলপোতা গ্রামের চারফুকার সেতুতে গিয়ে থেমে যায় পুলিশের কুকুর। স্থানীয় বাসিন্দাদের সেখানে জলে নামিয়ে ওই শিশুকন্যার খোঁজ করে পুলিশ। পুলিশের দাবি, পরে জেরায় ওই সেতুরই উল্লেখ করেছে শুভজিতের বাবা।

নদীর পাশে দেড় কিলোমিটারের দৌড়ে যাওয়ার সময় গন্ধ শুঁকে বেশ কয়েকটি জায়গায় পুলিশ কুকুর বসে পড়েছিল। শিশুর খোঁজে সেই সব জায়গার চারদিক, খালে ভেসে থাকা বেশ কয়েকটি পলিব্যাগ এবং পুটলি তুলে তল্লাশি চালায় পুলিশ। কিন্তু শুভজিতের ১২ দিনের শিশুকন্যার সন্ধান মেলেনি।

এ দিন ধৃতদের কাঁথি আদালতে তোলে পুলিশ। তদন্তের স্বার্থে বিচারক তাদের সকলকে পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন। নিজেদের হেফাজতে পেয়েই শুভজিৎ এবং অন্যদের পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। পুলিশের দাবি, শুক্রবার ভোর রাতের ওই ঘটনার পর থানায় নিয়ে এসে শুভজিৎ-সহ বাকিদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। কাঁথি মহকুমা পুলিশ আধিকারিক পার্থ ঘোষও তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে। তবে শুভজিৎ এবং তার পরিবারের লোকেরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রকম কথা বলে অভিযোগ। পুলিশ সূত্রের খবর, কখনও তারা জানায় বাড়ির কাছে পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়েছে শিশুকে। আবার কখনও বলে সমুদ্রের জলে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে।

শুভজিতের তুতো কাকু রীতিজম পইড়্যা এ দিন পুলিশকে জানিয়েছে, ওই পরিবারে দ্বিতীয়বার কন্যা সন্তান জন্মের পর কেউই খুশি ছিল না। ১২ দিনের শিশু কীভাবে নিখোঁজ হল, তা পুলিশ তদন্ত করে দেখুক। জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইন্দ্রজিৎ বসু বলেন, ‘‘ঘটনায় অনেক প্রশ্নের সদুত্তর মেলেনি। তদন্ত চলছে।’’

New Born Child Girl Arrest Police
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy