Advertisement
E-Paper

Chat Puja: বিধি ভাঙা ভিড় ছটেও

মিশ্র সংস্কৃতির এই শহরের পুজোয় ছিল না জাঁক। তবে এ বার জাঁক ফিরল ছট পুজোয়। বিকেল গড়াতেই ভিড়ে ঠাসা পুকুরঘাটে ধুয়ে-মুছে গেল করোনা বিধি।

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০২১ ০৭:৪৫
প্রায় কারও মুখেই নেই মাস্ক। বুধবার সন্ধ্যায় খড়্গপুরের মন্দিরতলা পুকুরে।

প্রায় কারও মুখেই নেই মাস্ক। বুধবার সন্ধ্যায় খড়্গপুরের মন্দিরতলা পুকুরে। ছবি: কিংশুক আইচ

গত বছর করোনা আবহে বাড়ির ছাদ, কুয়োর পাড়ে পুজো সেরেছিল বহু পরিবার। মিশ্র সংস্কৃতির এই শহরের পুজোয় ছিল না জাঁক। তবে এ বার জাঁক ফিরল ছট পুজোয়। বিকেল গড়াতেই ভিড়ে ঠাসা পুকুরঘাটে ধুয়ে-মুছে গেল করোনা বিধি।

বুধবার ছটপুজো উপলক্ষে খড়্গপুর শহর কার্যত উচ্ছ্বাসে ভাসে। অধিকাংশের মুখে মাস্ক ছিল না। মন্দিরতলা, নিমপুরা, জিনতলা, আয়মা, মথুরাকাটি, ইন্দার পুকুরঘাটে দূরত্ব বিধি না মেনেই চলল পুজো। ফাটল শব্দবাজি। মন্দিরতলা পুকুরঘাটে সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা স্পিডবোটে নেমেছিলেন। পুরসভার পক্ষ থেকে প্রতিটি পুকুরঘাটেই আলো, জল, মঞ্চ-সহ যাবতীয় আয়োজন করা হয়েছিল। চলেছে সচেতনতা প্রচারও। ছিল বিশাল পুলিশ। কিন্তু বাস্তবে করোনা বিধি মানাতে প্রশাসনের কোনও কড়া পদক্ষেপ চোখে পড়েনি এ দিন। খড়্গপুরের পুর প্রশাসক প্রদীপ সরকার বলেন, “করোনা বিধি মানা হল কি না সেটা পুলিশ-প্রশাসন দেখবে। তবে আমরা শহরের পাঁচটি পুকুরঘাট সাজিয়ে দিয়েছি। সেখানে মঞ্চ করা হয়েছে। আলো দেওয়া হয়েছে। মানুষের জন্য উৎসব। নিষেধ তো করা যাবে না। তবে সকলকে করোনা বিধি মেনে চলতে মাইকে সচেতনতা প্রচার করছি।” খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রানা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ছট পুজো নির্বিঘ্নে হচ্ছে। আমরা করোনা বিধি সম্পর্কে সচেতন করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। সেই সঙ্গে আইনশৃঙ্খলার দিকেও নজর রাখা হচ্ছে।’’ এ দিন মন্দিরতলায় এসেছিলেন জেলাশাসক রশ্মি কমল। তিনি ছটপুজো নিয়ে নিজের স্মৃতিচারণ করেন। সকলকে ভাল করে ছট পুজো পালনের বার্তাও দেন।

মিশ্র সংস্কৃতির রেলশহরে ছট পুজো ঘিরেই প্রতি বছরই আলাদা উদ্দীপনা থাকে। তিন প্রহরের এই পুজোয় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ‘খারনি’ উৎসবে বাড়িতেই প্রাথমিক উপাসনার পরে হয়েছে প্রসাদ বিলি। বুধবার সূর্যাস্তের সময়ে সূর্য আরাধনার মূল পুজো ছিল। আজ, বৃহস্পতিবার সূর্যোদয়ের আগে হবে পুজোর সমাপ্তি। গত বছর করোনা পরিস্থিতির জেরে নানা বিধি-নিষেধ ছিল। অনেকেই বাড়ির ছাদে, কুয়োয় সূর্যাস্ত ও সূর্যোদয়ের সময়ের পুজো সেরেছিলেন। নিমগেড়িয়া পটনার বাসিন্দা সুস্মিতা ভকত যেমন বলেন, “গতবার আমাদের পরিবার বাড়ির কুয়োতেই পুজো সেরেছিল। এ বার করোনা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তাই মন্দিরতলা পুকুরঘাটে এসেছি। তবে আমরা মাস্ক পরলেও অনেকেই পরেননি।”

খরিদার ব্যবসায়ী রাজেশ ভার্মা বলেন, “এই শহরে বিহারি, বাঙালি, উত্তরপ্রদেশি, তেলুগু সবাই ছট পুজোয় যোগ দেন। গত বছর করোনার জন্য অনেকেই বাড়ির ছাদে পুজো করেছিলেন। কিন্তু এ বার সকলে পুকুরঘাটে আসছেন। আমরাও এসেছি।’’ একই সঙ্গে তিনি মেনেছেন, ‘‘যেভাবে ভিড় বাড়ছে তাতেই ভয়ই লাগছে।” কুমোরপাড়ার বাসিন্দা পেশায় পুরসভার স্বাস্থ্য কর্মী মুনমুন মল্লিকও বলেন, ‘‘মন্দিরতলায় ব্যাপক ভিড় হয়েছে। জিনতলাতেও ভিড় হয়েছে। কম সংখ্যক মানুষ মাস্ক ব্যবহার করছেন। এটা দেখে খুব ভয় লাগছে।’’

মেদিনীপুরে কংসাবতী নদীর ডিএভি স্কুলের সামনের ঘাটে। ছিলেন বিধায়ক জুন মালিয়া।

মেদিনীপুরে কংসাবতী নদীর ডিএভি স্কুলের সামনের ঘাটে। ছিলেন বিধায়ক জুন মালিয়া। নিজস্ব চিত্র।

বুধবার ছট পুজোয় যোগ দেন মেদিনীপুরের বিধায়ক জুন মালিয়া। বিকেলে কংসাবতীর ডিএভি ঘাটে যান বিধায়ক। সেখানে শুভেচ্ছা বিনিময় ও আরতি করেন। ঘাট প্রস্তুত করেছিল মেদিনীপুর পুরসভা। তদারকির জন্য পুরকর্মীরা ছিলেন। মেদিনীপুরের পুর-প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান সৌমেন খান বলেন, ‘‘ছটের ঘাটে সব রকম পরিকাঠামো ঠিকঠাক রয়েছে কি না তা দেখে নেওয়া হয়েছিল।’’ সহযোগিতা করার জন্য ঘাটের পাশে শিবির করেছিল যুব তৃণমূল। হিন্দিভাষিদের কাছে পৌঁছতেই যুব তৃণমূলের এই উদ্যোগ, মনে করছেন অনেকে। যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতি সন্দীপ সিংহ বলেন, ‘‘সমস্ত ধরনের পুজো, পার্বণেই আমরা সাধারণ মানুষের সঙ্গে আনন্দে শামিল হই। এতে রাজনীতির কী আছে! সহযোগিতায় শিবির করা হয়েছে।’’

Chat Puja
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy