Advertisement
E-Paper

ওদের স্বপ্ন জয়ে ভরসা পুলিশ

দরিদ্র পরিবারের মেধাবী ছাত্রদের সাহায্যে আগেও এগিয়ে এসেছে পুলিশ। কিন্তু এ বার তার পরিধি অনেকটাই বেড়েছে। চলতি বছরে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক উত্তীর্ণ প্রায় তিনশোজন দুঃস্থ-কৃতী পড়ুয়ার ভবিষ্যৎ পড়াশোনার ভার নিয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশ।

অভিজিৎ চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০১৭ ০৮:০২
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

কারও চোখে বিজ্ঞানী হওয়ার স্বপ্ন, কেউ হতে চায় ইঞ্জিনিয়ার, কারও লক্ষ্য আবার আইন নিয়ে পড়া। পছন্দমতো শাখায় পড়ার মতো নম্বরও আছে ওদের। তবু স্বপ্নপূরণের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল পরিবারের অভাব-অনটন। সেই বাধা জয়ের পথ সহজ করে দিতেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশ। সামনের লড়াইয়ে তাই আরও জোর পাচ্ছে চন্দ্রকোনার খুড়শি গ্রামের গোপাল ভুঁইয়া থেকে ঘাটালের কিসমত দেওয়ানচকের সুব্রত গোস্বামী, দাসপুরের চাঁইপাটের সুদীপ মাইতিরা।

দরিদ্র পরিবারের মেধাবী ছাত্রদের সাহায্যে আগেও এগিয়ে এসেছে পুলিশ। কিন্তু এ বার তার পরিধি অনেকটাই বেড়েছে। চলতি বছরে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক উত্তীর্ণ প্রায় তিনশোজন দুঃস্থ-কৃতী পড়ুয়ার ভবিষ্যৎ পড়াশোনার ভার নিয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশ। মাধ্যমিকে ৮১ শতাংশ নম্বর পেয়ে পাশ করা দরিদ্র পরিবারের ছাত্রী চন্দ্রকোনার রায়লা গ্রামের অর্পিতা হাজরার বাড়িতে গিয়ে সম্প্রতি এই প্রক্রিয়া শুরুও করে দিয়েছেন জেলার পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ। ভারতীদেবীর কথায়, “প্রাথমিক ভাবে তিনশোজন অভাবী-মেধাবীকে সাহায্য করছি আমরা। প্রতি থানায় এ জন্য ৮জনের বিশেষ দল গড়া হয়েছে। দলে তিনজন করে মহিলা পুলিশকর্মীও রয়েছেন। ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনা বা অন্য বিষয়ে সমস্যা হলে ওই দল তার সমাধান করবে।”

ইতিমধ্যেই জেলার ১৯টি থানা এলাকা থেকে অভাবী-মেধাবীর তালিকাও তৈরি হয়ে গিয়েছে। প্রতিটি থানা এলাকা থেকে ১০জন মাধ্যমিক এবং ৫জন উচ্চ মাধ্যমিক উত্তীর্ণ পড়ুয়াকে বাছাই করা হয়েছে। ওই সব ছাত্র-ছাত্রীদের সংশ্লিষ্ট থানায় নিয়ে এসে কথা বলছেন পুলিশ কর্তারা। গল্পের ফাঁকে জেনে নিচ্ছেন কে, কী পড়তে চায়। তারপর পছন্দসই বিষয়ে পছন্দের প্রতিষ্ঠানে ভর্তির ব্যবস্থা করে দেওয়া হচ্ছে। শুধু ভর্তি নয়, খাতা-বই-কল কিনে দেওয়া, দরকারে হস্টেলে থেকে পড়া, টিউশন— যাবতীয় খরচই বহন করবে পুলিশ।

এই উদ্যোগে অন্ধকারে আলোর দিশা পেয়েছেন ওই সব কৃতী পড়ুয়া ও তাঁদের অভিভাবকেরা। চন্দ্রকোনার পলাশচাবড়ি হাইস্কুলের ছাত্র গোপাল ভুঁইয়া যেমন এ বার ৯০ শতাংশ নম্বর পেয়ে মাধ্যমিক পাশ করেছে। তার বাবা বটকৃষ্ণ ভুঁইয়ার ছোট্ট একটা চা দোকান রয়েছে। সামান্য রোজগারের ভরসায় ছেলের ভবিষ্যৎ পড়াশোনা নিয়ে দুর্ভাবনায় পড়েছিলেন বটকৃষ্ণবাবু। পুলিশকে পাশে পেয়ে এখন তিনি অনেকটাই নিশ্চিন্ত। বটকৃষ্ণবাবু বলছেন, ‘‘পুলিশ এই ভূমিকাটা না নিলে হয়তো ছেলেটার পড়াশোনাতেই দাঁড়ি পড়ে যেত।’’

৯২ শতাংশ নম্বর পেয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করা দাসপুরের কলোড়া হাইস্কুলের সুদীপ মাইতির ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্নেও প্রায় দাঁড়ি পড়ে যাচ্ছিল। কারণ, বাবা মদন মাইতি এক ফালি জমিতে চাষ করে যে টাকা আয় করেন, তা সংসার চালাতেই বেরিয়ে যায়। পুলিশের কাছে ভরসা পেয়ে মদনবাবুও এখন স্বস্তিতে।

sudent Education Police পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশ
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy