সেবা: হাতি আগলে গ্রামবাসীরা। নিজস্ব চিত্র
কেউ এগিয়ে দিচ্ছেন কলা, কেউ আখ।
কেউ শুঁড়ে হাত বুলিয়ে মুখে তুলে দিচ্ছেন কাঁঠাল পাতা।
হাতিটি কখনও খাচ্ছে। কখনও খাচ্ছে না। তবু ঠা ঠা রোদে তাকে ছেড়ে যাচ্ছেন না গ্রামবাসী। স্বস্তি দিতে তার গায়ে জল ছিটিয়ে দিচ্ছেন কেউ কেউ। বন দফতরের লোকজন এসেছেন। পশু চিকিৎসক এসেছেন। তা সত্ত্বেও বাসুদেব হেমব্রম নামে এক গ্রামবাসী বলছেন, ‘‘পানমণি (হাতিটিকে এই নামেই ডাকছেন গ্রামবাসী) যতদিন এখানে থাকবে, আমরাও ওর দেখভাল করব।’’
জঙ্গলমহলের গোয়ালতোড়ের দুধপাথরির বাসিন্দারা হাতির পালের তাণ্ডব দেখতেই অভ্যস্ত। কিন্তু সপ্তাহ দেড়েক আগে বছর পনেরোর হাতিটিকে জঙ্গলে পড়ে থাকতে দেখে তাঁদের সেই পুরনো রাগ গলে জল! সুব্রত মাহাতো নামে এক গ্রামবাসী বলছেন, ‘‘অসুস্থ হাতিকে তো আমরা ফেলে রেখে যেতে পারি না। ওকে সুস্থ করে তোলা আমাদের কর্তব্য।” সুষমা মাহাতো নামে এক মহিলার কথায়, “হাতি আমাদের কাছে ঠাকুরের সমান।”
কী হয়েছে হাতিটির?
বন দফতর সূত্রের খবর, প্রচণ্ড গরমে শরীরে জল কমে যাওয়ায় হস্তিনীটি অসুস্থ হয়ে পড়েছে। ক্লান্তিতে উঠেও দাঁড়াতে পারছে না। চিকিৎসাতেও বিশেষ সাড়া দিচ্ছে না। দফতরের রূপনারায়ণ বিভাগের ডিএফও অর্ণব সেনগুপ্ত জানান, দু’একদিনে সুস্থ না-হলে
হাতিটিকে চিকিৎসার জন্য অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হবে।
ইতিমধ্যে হাতিটিকে ঘিরে বাঁশের ব্যারিকেড গড়ে দিয়েছেন গ্রামবাসীরা। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত পালা করে চলছে গ্রামবাসীদের পাহারা। তাঁদের একটাই জেদ, সুস্থ করতেই হবে হাতিটিকে। এতে অবশ্য আশ্চর্যের কিছু দেখছেন না বন দফতরের মেদিনীপুর বিভাগের ডিএফও রবীন্দ্রনাথ সাহা। তিনি বলেন, ‘‘অসুস্থ পশু-পাখিকে সুস্থ করে তোলার চেষ্টাটা মানুষের মধ্যে থাকেই। গোয়ালতোড়ের ঘটনাটি নতুন কিছু নয়। হাতি মারা গেলে গ্রামবাসীদের কাঁদতেও দেখেছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy