সেরসা স্টেডিয়ামে ধোনি (চিহ্নিত)। নিজস্ব চিত্র
সালটা ২০০৪। এই শহর থেকেই জাতীয় ক্রিকেট দলের যাত্রা শুরু করেছিলেন মহেন্দ্রসিংহ ধোনি। ২০০১ সালে রেলের টিকিট পরীক্ষকের চাকরি করতে এসেও ক্রিকেটে বিভোর মাহিকে দেখে অনেকেই বুঝেছিলেন— ‘এই ছেলে লম্বা রেসের ঘোড়া’! তার পরের ইতিহাসটা কারও অজানা নয়। সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছনো মাহির ২০১৪ সালের টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর মেনে নিয়েছিল রেলশহর। কিন্তু এ বার আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে প্রিয় মাহির অবসর কিছুতেই মানতে পারছেন না ধোনির খড়্গপুরের সহকর্মী-বন্ধুরা। তবে তাঁরা বলছেন, “মাহি কা সোচ কভি গলত নহি হো সকতা!”
অবসরের পিছনের কারণটা ঠিক কী— তা কিছুতেই স্পষ্ট হচ্ছে না ধোনির এক সময়ের কর্মস্থল খড়্গপুরের বাসিন্দা থেকে বন্ধুদের কাছে। খুব কাছ থেকে যাঁরা মাহিকে দেখেছেন, তাঁরা বুঝছেন চাপা স্বভাবের মাহি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তা ভেবেচিন্তেই নিয়েছেন। আর ধোনির সিদ্ধান্ত যে ভুল হবে না, তা বিলক্ষণ জানেন মাহির এক সময়ের সহকর্মী-বন্ধু সত্যপ্রকাশ কৃষ্ণ, দীপক সিংহ, রবীন কুমাররা। এক সঙ্গে রঞ্জি খেলা খড়্গপুরে ধোনির সব থেকে কাছের বন্ধু ধানবাদের বাসিন্দা সত্যপ্রকাশ কৃষ্ণ বলছিলেন, “কেবল মাহিই জানে, ওর মনে কী চলছে। এই তো লকডাউনের আগেই রাঁচিতে আমার সঙ্গে দেখা হয়েছিল ওর। তখনও কিছু বলেনি। তবে বন্ধু হিসেবে মন মানছে না। আর দু’টি টি-টোয়েন্টি খেলে নিলে ওর ১০০টি ম্যাচ যেত।”
প্রসঙ্গত, ঝাড়খণ্ডে রঞ্জি খেলা ধোনি ২০০১ সালের ১১ জুলাই ‘স্পোর্টস কোটা’-য় টিকিট পরীক্ষকের চাকরি নিয়ে খড়্গপুরে এসেছিলেন। সেই সময় সত্যপ্রকাশ, দীপক, রবীনদের সঙ্গেই থাকতেন মাহি। খেলার অনুশীলন চলত সেরসা স্টেডিয়ামে। এমনকি, বিভিন্ন ক্লাবের পক্ষ থেকে আয়োজন করা ক্রিকেট টুর্নামেন্টেও অংশগ্রহণ করতে দেখা গিয়েছিল ধোনিকে। তবে ২০০৪ সালে ভারতীয় ক্রিকেটে সুযোগ পেয়ে খড়্গপুর ছেড়েছিলেন ধোনি। তারপর ধোনি আর রেলশহরে না এলেও, তাঁর সঙ্গে কাটানো দিনগুলি ভুলতে পারেননি খড়্গপুরবাসী। ধোনির ‘বায়োপিক’-এর শ্যুটিংও হয়েছে খড়্গপুরে।
ঝাড়খণ্ডে রঞ্জি খেলে ধোনির সঙ্গে চাকরি করতে রেলশহরে এসেছিলেন দীপক সিংহ। তাঁর কথায়, “দু’বছর আগে যখন দেখা হয়েছিল, তখন অবসরের ইঙ্গিতও দিয়েছিল। হয়তো ফিটনেসের দিকে তাকিয়েই সম্মানের সঙ্গে অবসর নিয়েছে। ওঁর অবসরে সেই পুরনো দিনগুলি মনে পড়ে যাচ্ছে।” প্রিয় মাহির অবসরের সিদ্ধান্তকে কী ভাবে সম্মান জানানো যায়, আপাতত সেই চিন্তায় ধোনির সতীর্থরা। সত্যপ্রকাশে কথায়, “ভাবছি ওঁকে সম্মান জানাতে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy