E-Paper

নবান্নে সম্মানিত, রেল রোকো থেকে সরলেন কুড়মিরা 

অজিতপ্রসাদকে কুড়মি উন্নয়ন পর্ষদে যুক্ত হতে রাজ্য সরকারের তরফে প্রস্তাব দেওয়া হয়। অজিতপ্রসাদ অবশ্য সরকারি পদ নিতে নারাজ বলে করজোড়ে জানান।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০২৪ ০৮:৫৫
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

নবান্নের বৈঠকে বরফ গলল। ঘোষিত ‘রেল টেকা’ কর্মসূচি থেকে সরে এল আদিবাসী কুড়মি সমাজ। তবে জাতিসত্তার দাবির আন্দোলনে থাকবেন বলে মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়ে দিয়েছেন আদিবাসী কুড়মি সমাজের ‘মূল মানতা’ (মুখ্য উপদেষ্টা) অজিতপ্রসাদ মাহাতো।

মঙ্গলবার অজিতপ্রসাদ-সহ জঙ্গলমহলের চার জেলার (পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম) আদিবাসী কুড়মি সমাজের ১৮জন প্রতিনিধিকে নবান্নে আলোচনায় ডেকেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অজিতপ্রসাদকে উত্তরীয় পরিয়ে সংবর্ধনা দেন তিনি।

সূত্রের খবর, কুড়মি নেতাদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর ওই বৈঠকে ছিলেন রাজ্য পুলিশের ডিজি ও মুখ্যসচিব। ঘন্টাখানেক বৈঠকের পরে মিনিট কুড়ি অজিতপ্রসাদের সঙ্গে একান্তে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী।

সূত্রের খবর, অজিতপ্রসাদকে কুড়মি উন্নয়ন পর্ষদে যুক্ত হতে রাজ্য সরকারের তরফে প্রস্তাব দেওয়া হয়। অজিতপ্রসাদ অবশ্য সরকারি পদ নিতে নারাজ বলে করজোড়ে জানান। সেই সঙ্গে তিনি জানান, কুড়মিদের জাতিসত্তার দাবিতে কেউ কিছু করতে পারলে একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই পারবেন। মুখ্যমন্ত্রী তাঁর উপর ভরসা রাখতে বলেন। জানান, কুড়মি উন্নয়নে অনেক কাজ হয়েছে। আরও হবে। তবে এ বিষয়ে অজিতপ্রসাদ মুখে কুলুপ এঁটেছেন।

গত লোকসভা ভোটে পুরুলিয়া আসনে নির্দল কুড়মি প্রার্থী হয়ে এক লাখের কাছাকাছি ভোট পান অজিতপ্রসাদ। তবে সেখানে জিতেছেন বিজেপির জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো। ভোটের পরে গত শুক্রবারই প্রথম ঝাড়গ্রামে যান মুখ্যমন্ত্রী। যোগ দেন বিশ্ব আদিবাসী দিবসের অনুষ্ঠানে।

তবে সেখামে মুখ্যমন্ত্রী কুড়মি প্রসঙ্গে নীরব থাকায় অসন্তুষ্ট হন অজিতপ্রসাদ। ‘মূল মানতা’ এরপরই জানিয়েছিলেন, পূর্ব ঘোষিত সূচি অনুযায়ী ২০ সেপ্টেম্বর থেকে জাতিসত্তার দাবিতে জঙ্গলমহল জুড়ে লাগাতার ‘রেল টেকা’ (রেল অবরোধ) হবে।

মুখ্যমন্ত্রী এ দিন মানুষের সমস্যা হয়, এমন আন্দোলনে বিরত থাকার অনুরোধ করেন। এরপরই অজিতপ্রসাদও অবরোধ-আন্দোলন থেকে সরে আসার কথা জানান। তবে কুড়মিদের বিভিন্ন দাবিগুলির মধ্যে রাজ্যের তরফে যেগুলি পূরণ করা সম্ভব সেগুলি দ্রুত পূরণে পদক্ষেপ করার অনুরোধ করেন কুড়মি সামাজিক সংগঠনটির নেতৃত্ব।

বৈঠকের পরে অজিতপ্রসাদ বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর আন্তরিকতায় আমরা অভিভূত। বৈঠকে খুশি। আলোচনার বিষয়বস্তু নিয়ে কিছু বলব না। অবরোধ আন্দোলনের পরিবর্তে অন্য রকম আন্দোলন হবে। এ বিষয়ে ঝাড়গ্রামে ২৮ অগস্ট সংগঠনের রাজ্য কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’

কুড়মিদের অন্য সামাজিক সংগঠন অবশ্য বৈঠকে ডাক পায়নি। কুড়মি সমাজ (পশ্চিমবঙ্গ)-এর রাজ্য সভাপতি রাজেশ মাহাতোর দাবি, ‘‘কুড়মিদের মধ্যে বিভাজনের চেষ্টা হচ্ছে। ‘মূল মানতা’ সেই ফাঁদে পা দিচ্ছেন।’’

আদিবাসী জনজাতি কুড়মি সমাজের রাজ্য সভাপতি শিবাজী মাহাতোরও মত, ‘‘জঙ্গমহলে বার বার সামাজিক আন্দোলন ভাঙার চেষ্টা হয়েছে। এ বারও এটা আন্দোলন ভাঙার কৌশল।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Nabanna Jhargram

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy