E-Paper

নদে চরা, কাদা পেরিয়েই মকরস্নান

সমস্যার কথা মেনে তমলুকের পুরপ্রধান দীপেন্দ্রনারায়ণ রায় বলেন, ’’চরের জন্য মকরস্নানে আসা পূণ্যার্থীদের সমস্যা হচ্ছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০২৪ ০৮:৩১
সারি দিয়ে মকর ডুব দিতে। খেজুরির দক্ষিণ কলাগাছিয়া এলাকায়।

সারি দিয়ে মকর ডুব দিতে। খেজুরির দক্ষিণ কলাগাছিয়া এলাকায়। ছবি: শুভেন্দু কামিলা

মকরস্নানের জন্য ভোর থেকেই তমলুক শহরে রূপনারায়ণের তীরে হাজির কয়েক হাজার পূণ্যার্থী। স্টিমার ঘাটের কাছে রূপনারায়ণে জল নেই বললেই চলে। স্নানের জন্য নদীর বুকে কাদা ভরা বিশাল চর পেরিয়ে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে জলের স্রোতের কাছে পৌঁছতে হাঁপিয়ে উঠেছেন বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা। প্রবল শীত আর ঘন কুয়াশাকে উপেক্ষা করেই হাঁটু কাদা পেরিয়ে রূপনারায়ণের জলে ডুব দিয়ে মকর স্নান সেরেছেন কয়েক হাজার পূণ্যার্থী। বেলা ১২টা নাগাদ জোয়ার আসা শুরু হওয়ার পরে স্টিমারঘাটের কাছে ওই চরের উপর কোমর সমান জল ডুবে মকর স্নান সারেন বেশির ভাগ মানুষ।

পৌষ সংক্রান্তি উপলক্ষে প্রতি বছর রূপনারায়ণে হাজার হাজার পূণ্যার্থী স্নান করেন। রূপনারায়ণ তীর সংলগ্ন শহরের উত্তরচড়া শঙ্করআড়ায় কপালমোচন ঘাটে ও ষোল ফুকার গেটে শঙ্করআড়া খালের জলে মকর স্নান করেন বহু মানুষ। কপালমোচন ঘাটের কাছে বারুণী মেলা বসে। গত কয়েক বছর ধরে স্টিমারঘাটের কাছে নদীর তীরে গঙ্গাপুজো-সহ মেলা হচ্ছে। নদীতে মকর স্নান সেরেই গঙ্গা পুজো দিয়ে বারুণী মেলা দেখে বাড়ি ফেরা দীর্ঘ দিনের প্রথা। তবে রূপনারায়ণের বুকে চরা বাড়তে স্নানের জন্য সমস্যায় পড়তে হচ্ছে বলে অভিযোগ পূণ্যার্থীদের।

ময়নার গোজিনা গ্রাম থেকে স্টিমার ঘাটের কাছে আসা বৃদ্ধ বাসুদেব দাস বলেন, ’’চর পড়ে জলস্রোত অনেক দূরে চলে গিয়েছে। আমার মতো অনেককে দীর্ঘ ক্ষণ অপেক্ষা করার পরে বাধ্য হয়ে চরের উপর দিয়ে প্রায় দুই কিলোমিটার কাঁদায় হেঁটে জলের স্রোতের কাছে যেতে হয়েছে। সেখানেও হাঁটু জলে কোনওরকমে স্নান করেছি।’’ পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর এলাকার দুধকোমরা গ্রামের বাসিন্দা লক্ষ্মীকান্ত মণ্ডল বলেন,’’আমি অনেক দিন ধরেই এখানে মকরস্নানে আসছি। আগে ঘাটের কাছেই জলে ডুবে স্নান সেরে নিতাম। এখন ঘাটের কাছে বিশাল চর পড়ার স্রোত অনেক দূরে চলে গিয়েছে। চরের কাদা পথে হেঁটে যাতায়াতের সময়ে হড়কে পড়ে যান অনেকে। খুবই সমস্যা হচ্ছে।’’ সমস্যার কথা মেনে তমলুকের পুরপ্রধান দীপেন্দ্রনারায়ণ রায় বলেন, ’’চরের জন্য মকরস্নানে আসা পূণ্যার্থীদের সমস্যা হচ্ছে। ওই চর কেটে জলের স্রোত আনার জন্য সেচ দফতরের সঙ্গে আলোচনা করে পদক্ষেপ করা হবে।’’

এ দিন তমলুক শহরে স্টিমারঘাটের কাছে রূপনারায়ণের জলে মকরস্নানের জন্য ভিড়ের পাশাপাশি নরঘাটের কাছে হলদি নদীতে মকর স্নানের জন্য কয়েক হাজার পূণ্যার্থীদের ভিড় জমে। নন্দকুমার- দিঘা ১১৬ বি জাতীয় সড়কে নরঘাটের কাছে হলদি নদীতে মাতঙ্গিনী সেতুর কাছে নন্দকুমারের দিকে উত্তর নরঘাটে এবং চণ্ডীপুরের দিকে দক্ষিণ নরঘাটে গঙ্গা পুজো-সহ মেলা শুরু হয়েছে। হলদি নদীতে মকরস্নান সেরে স্থানীয় গঙ্গা মন্দিরে ও পুজো দেন অনেকে। ময়না ব্লকের কাঁসাই নদীতে জলে ডুব দিয়ে মকর স্নান সারেন বহু মানুষ। স্থানীয় পরশুরামের মন্দিরে পুজো দেন পূণ্যার্থীরা। এই উপলক্ষে সাত দিনের মেলার আয়োজন করা হয়।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Holy bath Tamluk

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy