Advertisement
১৯ মে ২০২৪

নামেই অভিযান, চোলাই তৈরি চলছেই

পুলিশ বলছে অভিযান চলছে, বন্ধ হচ্ছে চোলাই ব্যবসা। গ্রামের মধ্যে অন্য ছবি— খোলাখুলি দিব্যি তৈরি হচ্ছে চোলাই। বিক্রিও হচ্ছে প্রকাশ্যে। প্রশাসনের প্রতি আস্থা হারিয়ে মাঝেমধ্যেই চোলাই ঠেকে অভিযান চালান গ্রামের মহিলারা।

দাসপুরে তৈরি হচ্ছে চোলাই মদ।—নিজস্ব চিত্র

দাসপুরে তৈরি হচ্ছে চোলাই মদ।—নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঘাটাল শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০১৬ ০৩:২৯
Share: Save:

পুলিশ বলছে অভিযান চলছে, বন্ধ হচ্ছে চোলাই ব্যবসা। গ্রামের মধ্যে অন্য ছবি— খোলাখুলি দিব্যি তৈরি হচ্ছে চোলাই। বিক্রিও হচ্ছে প্রকাশ্যে।

প্রশাসনের প্রতি আস্থা হারিয়ে মাঝেমধ্যেই চোলাই ঠেকে অভিযান চালান গ্রামের মহিলারা। তাতে খানিকটা হলেও বন্ধ হয় মদ বিক্রি। কিন্তু সুরাহা হয় না। সুরাহা হয় না পুলিশি অভিযানেও। রবিবার দাসপুরের সেকেন্দারি গ্রামের এক সারের দোকান ভেঙে দেন মহিলারা। অভিযোগ, ওই দোকানে প্রকাশ্যেই বসছিল মদের আসর। খবর পেয়ে সোমবার সন্ধ্যায় এলাকায় অভিযান চালায় পুলিশ। সেকেন্দারি এবং সংলগ্ন আট-দশটি চোলাইয়ের কারখানা পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে পুলিশের দাবি। নষ্ট করা হয়েছে মদ তৈরির সরঞ্জাম ও প্রায় হাজার লিটার মদ। তাতে কী?

মঙ্গলবার সকালে দাসপুরের চাঁদপুর, ঘাটালের মনসুকা গিয়ে পুলিশি অভিযানের কোনও চিহ্ন মেলেনি। গ্রামে ঢুকতেই চোখে পড়ল একাধিক বাড়িতেই চলছে বেআইনি মদের ঠেক। তৈরিও হচ্ছে প্রকাশ্যেই। ঘাটালের এক চোলাই ব্যবসায়ী বলেন, “কুড়ি বছর ধরে মদ ব্যবসা করছি। লাইসেন্স ছাড়াই তো চলে কারবার। কেউ তো কখনও চাপ দেয়নি ব্যবসা বন্ধ করতে!”

স্থানীয় বাসিন্দারা বারবার অভিযোগ তুলেছেন, চোলাই ব্যবসার সঙ্গে যোগসাজশ রয়েছে পুলিশ ও আবগারি দফতরের। তাঁদের একাংশের মদতেই চলছে রমরমা কারবার। আবগারি দফতরের ওসি রণজিৎ সাঁতরা অবশ্য দাবি করেছেন, “চোলাই কারবারিদের সঙ্গে কোনও আপোস নেই। নিয়ম মাফিক অভিযান চলে। তার জেরেই মদ তৈরি এখন পুরোপুরি বন্ধ।” অথচ অভিজ্ঞতা বলছে, কোনও বড় ঘটনা ঘটলেই অভিযান চালায় পুলিশ। ন কিছুদিন বন্ধ থাকে প্রকাশ্য ব্যবসা। তারপর যেই কে সেই। নিজস্ব চিত্র।

অভিযোগের কথা স্বীকারও করে নিয়েছেন আবগারি দফতরের একাংশের আধিকারিকরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পদস্থ আধিকারিক বলেন, “দফতরের একাংশের মদতেই অবৈধ ব্যবসা বন্ধ হচ্ছে না। উল্টে দোকানের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষও জানেন। দ্রুত ব্যবস্থা হবে।’’

চোলাই কারবারিরা আবার কেউ কেউ বলছেন, তাঁরা নাকি বোঝেন, ‘কাজটা ঠিক হচ্ছে না’। অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে, নোংরা পরিবেশে তৈরি হচ্ছে মদ। নেশা বাড়িয়ে খদ্দের টানতে মদে মেশানো হচ্ছে কীটনাশক। ঘাটালের এক চোলাই ব্যবসায়ীর স্বীকারোক্তি, “সবই জানি। কিন্তু কোনও ঝুঁকি ছাড়াই ব্যবসা চলছে। ভাল মুনাফাও হচ্ছে। বন্ধ
করবই বা কেন?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Brew alcohol Ghatal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE