Advertisement
১৮ মে ২০২৪

রেলের বাংলোয় কেন বিধায়ক কার্যালয়, প্রশ্ন

বিজেপি-র দাবি, মনীষা চট্টোপাধ্যায় নামে রেলের যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্য কমিটির সদস্যের নামে থাকা ওই বাংলোটি বিধায়ক দিলীপ ঘোষকে তিনি ব্যবহার করতে দিয়েছেন। নিয়ম নীতি না মেনেই বিজেপি ওই বাংলো নানা রাজনৈতিক কর্মসূচির কাজে ব্যবহার করছে বলেও অভিযোগ ওঠে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০১৭ ০০:০০
Share: Save:

গত ফেব্রুয়ারি মাসে খড়্গপুরের সাউথসাইডে বিএনআর গার্ডেন সংলগ্ন ৬৭৭ নম্বর রেল বাংলোয় বিধায়ক কার্যালয় খোলেন দিলীপ ঘোষ। বিজেপি বিধায়ক কী করে রেলের বাংলো পেলেন, সেই প্রশ্নে সেই সময়ই সরব হয়েছিলেন তৃণমূল নেতারা। এ বার ওই বাংলো থেকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা বিধায়ক দিলীপবাবুকে বের করার দাবি জানালেন শাসকদলের নেতারা। মঙ্গলবারের মধ্যে রেল কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা না নিলে ডিআরএম অফিসের সামনে ধর্নার হুঁশিয়ারিও দিয়েছে তৃণমূল।

গত ১ ফেব্রুয়ারি বিএনআর গার্ডেন সংলগ্ন ৬৭৭ নম্বর রেল বাংলোয় বিধায়ক কার্যালয়ের উদ্বোধন হয়। বাংলোর ঠিকানা দিয়ে কার্ড ছাপিয়ে বিজেপি-র পক্ষ থেকে ওই অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণও জানানো হয়েছিল। রেল সূত্রে খবর, বাঁকুড়ার বাসিন্দা রেলের যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্য কমিটির এক সদস্যের নামে ওই বাংলো দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কী ভাবে সেই বাংলোয় বিধায়ক কার্যালয় চলছে? বিজেপি-র দাবি, মনীষা চট্টোপাধ্যায় নামে রেলের যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্য কমিটির সদস্যের নামে থাকা ওই বাংলোটি বিধায়ক দিলীপ ঘোষকে তিনি ব্যবহার করতে দিয়েছেন। নিয়ম নীতি না মেনেই বিজেপি ওই বাংলো নানা রাজনৈতিক কর্মসূচির কাজে ব্যবহার করছে বলেও অভিযোগ ওঠে।

এ বিষয়ে কথা বলতে তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি ও শহর সভাপতি প্রদীপ সরকার বৃহস্পতিবার খড়্গপুরের ডিআরএম রাজকুমার মঙ্গলার সঙ্গে দেখা করেন। তাঁদের দাবি, কোনও যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্য কমিটির সদস্যের ওই বাংলো পাওয়ার যোগ্যতা নেই। কী ভাবে মনীষা চট্টোপাধ্যায় ওই বাংলো পেলেন তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তাঁরা। সেই সঙ্গে ওই বাংলো কী ভাবে দিলীপ ঘোষ রাজনৈতিক স্বার্থে বিধায়ক কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করছেন, তাঁরা সেই অভিযোগও করেন।

তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিতবাবু বলেন, “ডিআরএমের কাছে লিখিতভাবে জানিয়েছি, ওই বাংলো থেকে দিলীপ ঘোষকে অবিলম্বে বের করে দিতে হবে।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘রেলের মতো কেন্দ্রীয় সংস্থাকে বিজেপি দলীয় স্বার্থে ব্যবহার করছে। কারচুপি করে যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্য কমিটির সদস্যেকে বাংলো দেওয়া হয়েছে। সেই বাংলোয় দিলীপ ঘোষ বিধায়ক কার্যালয় করে দলীয় কাজে ব্যবহার করছেন। এটা বরদাস্ত করব না।” রেল ব্যবস্থা না নিলে মঙ্গলবার ডিআরএম অফিসে ধর্না দেওয়া হবে বলেও জানান অজিতবাবু।

এ বিষয়ে জানতে এ দিন দিলীপবাবুর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তুষার মুখোপাধ্যায় বলেন, “মনীষা চট্টোপাধ্যায়ের নামে ওই বাংলোয় দিলীপদা শুধু থাকেন। আর তাই সেখানে দলীয় ঘরোয়া বৈঠক করেন। কিন্তু ওই বাংলোয় কোনও রাজনৈতিক ঝান্ডা নেই।’’ তাঁর পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘রেলের জমিতে কী ভাবে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয় চলছে তা জানতে ডিআরএমের কাছে যাব।” যদিও এ বিষয়ে অজিতবাবু বলছেন, “শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করছে বিজেপি। দেশের সব জায়গায় রেলের জমিতে বহু রাজনৈতিক দলের কার্যালয় রয়েছে। কিন্তু রেলের বাংলোয় বিধায়ক কার্যালয় চলা আইনবিরুদ্ধ।”

এ নিয়ে খড়্গপুরের ডিআরএম রাজকুমার মঙ্গলা বলেন, “৬৭৭ নম্বর বাংলো নিয়ে যে অভিযোগ এসেছে তা খতিয়ে দেখছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE