Advertisement
E-Paper

প্রদীপকে সরিয়ে পদে রবিশঙ্করই

২০ নম্বর ওয়ার্ডে পুরপ্রধানের দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠকে অজিতবাবু বলেন, “প্রদীপ দলনেত্রীর কাছে শহর সভাপতির পদ থেকে অব্যাহতি চেয়েছিলেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০১৭ ০১:৪২

দলের খড়্গপুর শহর সভাপতি পদে পরিবর্তনের ইঙ্গিত আগেই দিয়েছিলেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী। সেই মতোই মঙ্গলবার রেলশহরে সাংবাদিক বৈঠক করে তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি অজিত মাইতি জানালেন, খড়্গপুরের পুরপ্রধান প্রদীপ সরকারকে শহর সভাপতির পদ থেকে সরানো হচ্ছে। নতুন শহর সভাপতি হচ্ছেন কংগ্রেস থেকে আসা প্রাক্তন পুরপ্রধান রবিশঙ্কর পাণ্ডে।

২০ নম্বর ওয়ার্ডে পুরপ্রধানের দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠকে অজিতবাবু বলেন, “প্রদীপ দলনেত্রীর কাছে শহর সভাপতির পদ থেকে অব্যাহতি চেয়েছিলেন। সেই জায়গায় শহরের দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, দক্ষ সংগঠক রবিশঙ্কর পাণ্ডেকে সভাপতি করা হয়েছে। রবি সকলকে সঙ্গে নিয়ে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।” পরে রবিশঙ্করবাবু বলেন, “১৯৭৯ সাল থেকে খড়্গপুরের রাজনীতির আঙিনায় রয়েছি। আগে কংগ্রেসে ছিলাম। তখন কংগ্রেস-তৃণমূল আলাদা দল ছিল না। তাই সকলকে চিনি। শহরের সব এলাকাও চিনি। সকলের সহযোগিতায় সংগঠনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারব বলেই আশা করছি।”

দলের এক সূত্রে অবশ্য খবর, গোষ্ঠী কোন্দলের জেরেই শহর সভাপতির পদ সামলাতে গিয়ে বারবার সমস্যায় পড়ছিলেন প্রদীপবাবু। তৃণমূলের প্রাক্তন শহর সভাপতি দেবাশিস চৌধুরীর হাত ধরে একসময়ে উঠে আসা প্রদীপবাবু পুরপ্রধান হওয়ার পরে দু’জনের দূরত্ব বাড়ে। গত বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির জয়ে দলে কিছুটা কোণঠাসা হয়ে পড়েন দেবাশিসবাবু। মাস ছ’য়েক আগে দলের শহর সভাপতির পদ থেকে দেবাশিসবাবুকে সরিয়ে প্রদীপবাবুকে বসানো হয়। এই ঘটনায় দেবাশিসবাবুর অনুগামী দলীয় কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়। রবীন্দ্র ইনস্টিটিউটে কর্মিসভায় মানস ভুঁইয়ার সামনে দলের কাছে মার্কশিট প্রকাশের দাবি জানিয়ে ক্ষোভও উগরে দিয়েছিলেন দেবাশিসবাবু। এ দিনও দেবাশিসবাবুকে বলেন, “আমার আশা, কাজের ক্ষেত্রে যাতে পুরসভা ও দলের মধ্যে সমন্বয় থাকে সেটা রবিদা দেখবেন। মানুষের স্বার্থে সরকার অর্থ বরাদ্দ করছে। সেই অর্থ যাতে মানুষের কাজেই খরচ হয় সেটা দেখতে হবে। মানুষ যতক্ষণ শংসাপত্র না দিচ্ছে ততক্ষণ কাউকে সফল বলা যাবে না।” পাশাপাশি দলের জেলা নেতা জওহরলাল পালের সঙ্গে দেবাশিসবাবুর পুরনো দ্বন্দ্ব নিয়ে নেতৃত্ব অস্বস্তিতে বলে তৃণমূলের এক সূত্রে খবর।

তৃণমূলের এক সূত্রে খবর, কংগ্রেস থেকে রবিশঙ্করবাবু শাসকদলে আসা নিয়ে ক্ষুব্ধ ছিলেন দলের অনেক নেতাই। এই ক্ষোভের খবর পৌঁছয় দলের রাজ্য নেতৃত্বের কানেও। তারপরেই রবিশঙ্করবাবুকে দলে কোনও দায়িত্ব দেওয়ার ব্যাপারে ভাবনাচিন্তা শুরু করেন নেতৃত্ব। দলের এক সূত্রে জানা গিয়েছে, পরিস্থিতি খানিকটা বেগতিক বুঝে আগেভাগেই ঝাড়গ্রামে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে প্রদীপবাবু দলের শহর সভাপতি্র পদ চেড়ে দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।

গত সোমবারই কলকাতার তৃণমূলভবনে রবিশঙ্করবাবু, প্রদীপবাবু ও দলের জেলা সভাপতি অজিতবাবুকে ডেকে পাঠানো হয়। সেখানেই দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রতবাবু সকলের সঙ্গে আলোচনার পরে অজিতবাবুকে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেন। দলকে সংগঠিত করতে হলে যে আগে তাঁকে কোন্দল কাঁটা সরাতে হবে সেটা ভালভাবেই জানেন তৃণমূলের নতুন শহর সভাপতি রবিশঙ্করবাবু। নতুন দায়িত্ব পেয়ে রবিশঙ্করবাবু বলছেন, “আমি মনে করি গণতন্ত্রে জনগণ শেষ মূল্যায়ন করে। তাই আমরা জনগণ থেকে যাতে বিচ্ছিন্ন হয়ে না পড়ি সেটা দেখতে হবে।”

Rabishankar Pandey Kharagpur রবিশঙ্কর পাণ্ডে
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy