মাধ্যমিকের চেনা ছবি। — ফাইল চিত্র।
করোনার মতো অতিমারি কাটিয়ে ছন্দে ফিরিছে সব কিছু। তবে করোনার পর সরকারি স্কুলগুলিতে উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে স্কুলছুটের সংখ্যা। যার প্রভাব পড়েছে এবার মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের সংখ্যায়ও। স্কুলছুট কমাতে শিক্ষা দফতরের ভূমিকা নিয়ে এই সময় প্রশ্ন তুলেছে শিক্ষক সংগঠনগুলির একাংশ। তাদের দাবি, মিড ডে মিল নিয়েই আধিকারিকেরা রয়েছেন ব্যস্ত। শিক্ষার মান নিয়ে নয়।
পাশের হারের নিরিখে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে লাগাতার প্রথম স্থান দখল করে আসছে পূর্ব মেদিনীপুর। করোনার পর তাল কেটেছে শিক্ষায় আগুয়ান জেলার ছাত্রসংখ্যায়। স্কুলছুটের সংখ্যা বেড়েছে। অনটন আর পড়াশোনার অনভ্যাসের কারণে স্কুলমুখো হয়নি বহু পড়ুয়া। শিক্ষকমহলের একাংশ মনে করছে, স্কুল খোলার সঙ্গে সঙ্গে পড়ুয়াদের বিদ্যালয়য়ে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে শিক্ষা দফতর সঠিক নীতি গ্রহণ করলে স্কুলছুটের সংখ্যা কমানো যেত। নিখিলবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক অসীম গোস্বামী বলছেন, ‘‘শিক্ষা দফতর মিড ডে মিলের তদারকি নিয়ে যতখানি বিচলতি শিক্ষা নিয়ে ততখানি নয়। এই সরকার শিক্ষকদের মিড ডে মিলের পাহারাদার বানিয়েছে। কোভিড কাটিয়ে স্কুল খোলার পর শুধু শিশুদের পুষ্টি নিয়ে তদারকি করানো হয়েছে শিক্ষকদের। যদি পড়াশোনা বা শিশুদের স্কুলে ফেরানোর ব্যাপারে শিক্ষা দফতর সুনির্দিষ্ট কোনও নীতি গ্রহণ করত তাহলে স্কুলছুটের সংখ্যা বাড়ত না।’’
বিজেপির টিচার্স সেলের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা কনভেনর পার্থ চক্রবর্তী বলছেন, ‘‘আগে শিক্ষার মানোন্নয়নের জন্য স্কুল পরিদর্শন করতেন শিক্ষা দফতরের আধিকারিকরা। এখন সে সব বন্ধ। মাঝে মধ্যে মিড ডে মিলের জন্য পরিদর্শন হয়। শিক্ষা দফতর শিক্ষার মানোন্নয়ন নিয়ে উদাসীন। তাই স্কুলছুটের সংখ্যা বাড়ছে। সচেতন অভিভাবকরা পড়ুয়াদের অন্য বোর্ডে ভর্তি করাচ্ছেন।’’ নিখিলবঙ্গ শিক্ষক সমিতির পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক রাণা ভট্টাচার্যেরও দাবি, ‘‘গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে স্কুল খোলে। কয়েক মাস যেতে না যেতেই গরমের অজুহাতে সরকার টানা প্রায় দু'মাস অতিরিক্ত ছুটি ঘোষণা করে। টানা ছুটির কারণে স্কুলছুট বেড়েছে। ’’
উল্লেখ্য, গত বছর জেলায় মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৬৪ হাজার ৮১১ জন। সেটা এবার কমে হয়েছে, ৪২ হাজার ৬৮৭ জনে। স্কুলছুট এর একটা অন্যতম কারণ বলে দাবি শিক্ষক মহলের। যদিও শিক্ষা দফতরের দাবি, ২০১৩ সালে রাজ্যের প্রাথমিক স্কুলগুলিতে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে ন্যূনতম বয়স পাঁচ বছরের পরিবর্তে ছয় বছর করা হয়েছিল। বয়সজনিত কারণে ঐ বছর প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা তার আগের বছরের তুলনায় অনেকটা কমে গিয়েছিল। সেবার ভর্তি হওয়া ছাত্রছাত্রীরা এ বছর মাধ্যমিক দিচ্ছে। ফলে গত বছরের তুলনায় এবার জেলায় মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যাও অনেকটা কম। এ ব্যাপারে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিদর্শক (মাধ্যমিক) শুভাশিস মিত্র বলেন, ‘‘স্কুলছুট কমাতে শিক্ষা দফতর একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছিল। স্কুলে আনন্দের পরিবেশ গড়ে তোলার পাশাপাশি, অনলাইন ক্লাস, টেলি ক্লাসের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। মিড ডে মিলের পরিদর্শনের পাশাপাশি, বিদ্যালয়ের পরিকাঠামো ও শিক্ষার মানোন্নয়নের নিয়েও নিয়মিত পরিদর্শন হয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy