Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
অভিযুক্ত সরকারি প্রকল্প

খাল বুজিয়ে কর্মতীর্থের দোকানঘর

ময়না ব্লকের বলাইপন্ডা বাজার এলাকায় রাজ্য সরকারের কর্মতীর্থ প্রকল্পের আওতায় তৈরি হচ্ছে দোকানঘর। বেকার যুবক, যুবতীদের কর্মসংস্থানের জন্যই এই সব দোকানঘর তৈরি হচ্ছে।

চুরি: খালের জলেই তৈরি হয়েছে ভিত। নিজস্ব চিত্র

চুরি: খালের জলেই তৈরি হয়েছে ভিত। নিজস্ব চিত্র

আনন্দ মণ্ডল
তমলুক শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০১৭ ১৩:০০
Share: Save:

জলাশয় ভরাটের অভিযোগ হামেশাই ওঠে অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে। নিকাশি নালা দখল করে দোকানঘর তুলে ফেলার অভিযোগও গোটা পূর্ব মেদিনীপুর জু়ড়ে কম নেই। কিন্তু এ বার সেই একই অভিযোগ, সরকারের বিরুদ্ধে।

ময়না ব্লকের বলাইপন্ডা বাজার এলাকায় রাজ্য সরকারের কর্মতীর্থ প্রকল্পের আওতায় তৈরি হচ্ছে দোকানঘর। বেকার যুবক, যুবতীদের কর্মসংস্থানের জন্যই এই সব দোকানঘর তৈরি হচ্ছে। কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই প্রকল্পের কাজের জন্য ভরাট করে ফেলা হয়েছে ময়না-মেদিনীপুর রাজ্য সড়ক সংলগ্ন নিকাশি খালের একাংশ।

স্থানীয়দের কাছে ময়না খাল নামে পরিচিত ওই নিকাশি নালা এলাকায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ বিষয়ে তাঁরা বিডিও-র কাছে স্মারকলিপিও জমা দিয়েছেন। যদিও ময়নার বিডিও বিশ্বজিৎ বসুর দাবি, ‘‘নিকাশি বজায় রেখে পূর্ত দফতরের জমিতে কর্মতীর্থ প্রকল্পে দোকান ঘর তৈরি করা হচ্ছে। এতে নিকাশির কোনও সমস্যা হবে না।’’

বাসিন্দাদের অভিযোগ, রাজ্য সড়ক বরাবর রয়েছে প্রায় ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ ময়না–বলাইপন্ডা খাল। এর মাধ্যমেই বিস্তীর্ণ এলাকার জল নিকাশ হয়। বলাইপন্ডা বাজারের কাছে রাজ্য সড়ক এবং ওই খাল সংলগ্ন পূর্ত দফতরের জমিতে কর্মতীর্থ প্রকল্পে দোকানঘরের স্টল নির্মাণের কাজ করার কথা ছিল। কিন্তু পাকা দোকানঘর নির্মাণ করতে গিয়ে ময়না খালের বেশ কিছু অংশেও মাটি ভরাট করা হয়ে গিয়েছে। বাসিন্দাদের দাবি, এর ফলে বর্ষাকালে বলাইপন্ডা বাজার, সংলগ্ন সুদামপুর, পরমানন্দপুর এলাকার জল নিকাশির সমস্যা হবে। সেই আশঙ্কা থেকেই তাঁরা বিডিও-র কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন।

সুদামপুর গ্রামের বাসিন্দা প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য ধীরেন্দ্রনাথ ঘোড়ই, সন্দীপ সামন্তের অভিযোগ, ‘‘এলাকার জল নিকাশির ভরসা এই খাল। বর্ষায় জল নিকাশের সমস্ত রাস্তা বন্ধ হয়ে যাবে। তাই এ বিষয়ে উপযুক্ত পদক্ষেপের জন্য ব্লক প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি করেছি।’’

ময়নার জেলা পরিষদ সদস্য ও জেলা পরিষদের খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ বিমান পণ্ডা অবশ্য খাল ভরাটের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। বরং তাঁর দাবি, দখলদার মুক্ত করা হয়েছে খালের একাংশ। তিনি বলেন, ‘‘বলাইপন্ডা বাজারের কাছে ওই নিকাশি খালের আগের মতো কার্যকারিতা নেই। সেই সুযোগে কিছু দোকান ও বসতবাড়ি গড়ে উঠেছিল খাল বুজিয়ে। কর্মতীর্থ প্রকল্পের জন্য সেইসব দোকানঘর ও বসতবাড়িগুলির একাংশ সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE