Advertisement
E-Paper

খুদে ইলিশের পেটেও মিলছে ডিম! বিপদ দেখছেন বিজ্ঞানীরা

তারা নিতান্তই ‘খুকি’। সেই খুকিরাই মা হতে চলেছে! গভীর জলের মাছেদের নিয়ে তাই ঢিঢি পড়ে গিয়েছে হাটে-বাজারে।

শান্তনু বেরা

শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০১৭ ০৩:২৭

তারা নিতান্তই ‘খুকি’। সেই খুকিরাই মা হতে চলেছে! গভীর জলের মাছেদের নিয়ে তাই ঢিঢি পড়ে গিয়েছে হাটে-বাজারে।

হ্যাঁ, ওরা মাছই! দু’সপ্তাহ ধরে কাঁথি, এগরার বাজারে মিলছে ছোট ছোট ইলিশ। পেটে ডিম! যাদের বেশির ভাগেরই ওজন ১০০ গ্রাম। ওই সব ইলিশ বিকোচ্ছে শ’তিনেক টাকা কেজি দরে।

কম দামে ডিমভরা ইলিশ পেয়ে ক্রেতারা খুশি। কিন্তু এতে প্রমাদ গুনছেন ইলিশ-বিজ্ঞানীরা। পরিস্থিতি বিচার করে তাঁরা আশঙ্কার কথাই শুনিয়েছেন। তাঁরা মনে করছেন— দূষণ এবং ছোট অবস্থায় ধরার অতিরিক্ত প্রবণতাই ইলিশ প্রজাতিকে বিপন্ন করে তুলেছে। তাই প্রকৃতিই তাদের অন্য নিয়মে অভ্যস্ত করে তুলেছে। সময়ের আগেই পেটে ডিম আসছে তাদের।

বিজ্ঞানীরা তো বটেই, কাঁথি-এগরার মৎস্যজীবীরাও জানিয়েছেন, কয়েক বছর ধরেই উপকূলে ডিমভরা ছোট ইলিশ মিলছে। এ বার বেশি পরিমাণে ধরা পড়ছে, এই যা। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমুদ্রবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক সুগত হাজরা জানান, ইলিশের প্রজননের সময় বছরে তিন বার। ফেব্রুয়ারি-মার্চ, জুন-জুলাই এবং অক্টোবর-নভেম্বর। সাধারণত বর্ষার আগে-পরে (জুন থেকে নভেম্বর) বড় ইলিশ পাড়ের দিকে ডিম পাড়তে আসে। আর ছোট মাপের ইলিশ ডিম পাড়তে আসছে শীত শেষের (ফেব্রুয়ারি-মার্চ) কম জলে। প্রজাতি বিপন্ন হয়ে পড়ায় অভিযোজনের কারণেই এই ঘটনা ঘটছে বলে মনে করেন সুগতবাবু।

একই কথা বলেছেন কেন্দ্রীয় মৎস্য গবেষণা কেন্দ্রের বিভাগীয় প্রধান বিজয়কালী মহাপাত্রও। তিনি বলেন, ‘‘এত দিন যে বয়সে ইলিশ ডিম ধারণ করত, এখন তার চেয়ে কম বয়সেই করছে।’’ তাই ১০০ গ্রাম ওজনের খুদে ইলিশের পেটেও মিলছে ডিম। আর সেই ইলিশই প্রচুর পরিমাণে ধরা পড়ছে জালে।

সরকারি ভাবে ১৫ এপ্রিল থেকে ১৪ জুন— অর্থাৎ ৬০ দিন সমুদ্রে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। কিন্তু তার আগেই সমুদ্রে ট্রলার নামে। ছোট ইলিশও পাড়ের কাছে এসে যাওয়ায় সহজেই ধরা পড়ে। এ রকম চলতে থাকলে ইলিশের সঙ্কট বড় আকার নেবে বলে মনে করছেন মৎস্যজীবীরা। ‘দক্ষিণবঙ্গ মৎস্যজীবী ফোরাম’–এর সহ-সভাপতি দেবাশিস শ্যামল নিষেধাজ্ঞার সময়সীমা বাড়ানোর দাবি তুলেছেন। কিন্তু পূর্ব মেদিনীপুরের সহ-মৎস্য অধিকর্তা (সামুদ্রিক) রামকৃষ্ণ সর্দার বলেন, ‘‘ভারতের পূর্ব উপকূলে কেন্দ্র ওই সময়সীমা ধার্য করেছে সামগ্রিক ভাবে। শুধু ইলিশের প্রজননকালের দিকে তাকিয়ে নয়। নিষেধাজ্ঞার সময়সীমা বাড়ালে এ রাজ্যের মৎস্যজীবীরাই বঞ্চিত হবেন।’’

Hilsa
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy