ছেলেকে নিয়ে চন্দনা দাস। ইনসেটে, মৃত রাজকুমার দাস।
দেশের সেবা করতে সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন। মাঝেমধ্যে বাড়িতে এলে বলতেন, সহকর্মীদের কাছে অপমানিত হচ্ছেন বলে তাঁর মনে হচ্ছে। এ নিয়ে আক্ষেপ ছিল তাঁর। এমনটাই দাবি মৃত সেনা জওয়ান রাজকুমার দাসের (৫৯) স্ত্রী চন্দনার। তাই কলকাতার সেনা হাসপাতালে স্বামী মারা যাওয়ার পর যখন চিকিৎসকেরা তাঁকে স্বামীর দেহ দান করার ব্যাপারে প্রস্তাব দেন তখন তাতে সাগ্রহেই সম্মতি দেন চন্দনা।
কাঁথি-১ ব্লকের রাইপুর পশ্চিমবাড় গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত টগরিয়া গোপালপুর গ্রামের ঘটনা। মৃত জওয়ানের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৫ সালে অসমে সেনাবাহিনীতে কাজ করার পর স্বেচ্ছাবসর নেন রাজকুমার। গত ১ মার্চ বাড়ি থেকে নামালে ব্যক্তিগত কাজে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে মোটর বাইক দুর্ঘটনায় জখম হন। প্রথমে তাঁকে কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় কলকাতায় সেনাবাহিনীর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় তাঁকে। সেখানে ৩ মার্চ মৃত্যু হয় রাজকুমারের। তার পরে স্বামীর চোখ, কিডনি, লিভার, হৃদযন্ত্র হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে দান করেন চন্দনা। বৃহস্পতিবার চন্দনা বলেন, ‘‘সেনাবাহিনীতে অপমানের যে কথা স্বামী বলতেন তা মনে ছিল। তাই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাকে জানালেন, স্বামীর দেহ দান করলে তার থেকে ৬ জনের জীবন বাঁচবে তখন তাতে সম্মত হই। কারণ মনে হয়েছিল, এভাবে স্বামীর সম্মান বাড়বে। তাঁর মনের আক্ষেপ কিছুটা হয়তো মেটাতে পারব।’’
প্রসঙ্গত, কয়েক মাস আগে মোটর বাইক দুর্ঘটনায় জখম হয় কলকাতার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন কাঁথি-৩ ব্লকের ভাজাচাউলি গ্রামের বাসিন্দা স্বপন হাজরা। তাঁর পরিবারও মৃতের অঙ্গ দান করে এসেছিলেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। ফের প্রত্যন্ত এলাকার এক মৃতের পরিবারের এমন সিদ্ধান্ত অনেকের মধ্যেই এই সচেতনা বাড়াবে বলে মনে করেন স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য শঙ্কর মাইতি। স্বামী হারা এক সম্তানের জননী চন্দনার এমন মনোভাবে গর্বিত গ্রামবাসীরাও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy