Advertisement
E-Paper

খালি হাতে শৌচাগার সাফাই খুদে পড়ুয়াদের

হলদিয়ার পরাণচক উচ্চ বিদ্যালয়ে (প্রাথমিক বিভাগ) নির্মল বিদ্যালয় সপ্তাহ উদযাপনে পড়ুয়াদের দিয়ে শৌচাগার পরিষ্কার করানো হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০২:৫১
এই ছবি ফেসবুকে দেওয়ার পরেই আপত্তি ওঠে বিভিন্ন মহলে।

এই ছবি ফেসবুকে দেওয়ার পরেই আপত্তি ওঠে বিভিন্ন মহলে।

কী করণীয়, সে সম্পর্কে নির্দিষ্ট গাইড লাইন ছিল। কর্মসূচিতে ছিল স্বাস্থ্যবিধান গান, শিশু সংসদ সভা, হাত ধোয়ার পাঁচটি ধাপ শেখানো, জল সংরক্ষণ, প্লাস্টিক ব্যবহারে সচেতনতা, ডাস্টবিন ব্যবহার, শৌচাগার ব্যবহার, বৃক্ষরোপণ প্রভৃতি। গত ২৬ অগস্ট থেকে ৩১ অগস্ট ‘নির্মল বিদ্যালয় সপ্তাহ’ উপলক্ষে এই কর্মসূচি পালিত হয়েছে হয়েছে জেলা জুড়ে। আর সেই কমর্সূচি পালন নিয়েই তৈরি হয়েছে বিতর্ক।

হলদিয়ার পরাণচক উচ্চ বিদ্যালয়ে (প্রাথমিক বিভাগ) নির্মল বিদ্যালয় সপ্তাহ উদযাপনে পড়ুয়াদের দিয়ে শৌচাগার পরিষ্কার করানো হয়েছে। হাতে নানা সরঞ্জাম নিয়ে খুদে পড়ুয়াদের শৌচাগার পরিষ্কারের ছবি প্রধান শিক্ষক ফেস বুকে দেওয়ায় শোরগোল পড়েছে শিক্ষক মহলে। এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে শিক্ষকদের একটি বড় অংশের বক্তব্য, শিশুদের দিয়ে শৌচাগার পরিষ্কার করানো ঠিক কাজ হয়নি। প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিজ্ঞান কর্মীরাও। পূর্ব মেদিনীপুরের বিজ্ঞানমঞ্চের জেলা কমিটির সহ সভাপতি ও চিকিৎসক সুব্রত মাইতি বলেন, ‘‘ছবি দেখে বিস্মিত হয়েছি। শিশুদের খালি হাতে এই ধরনের কাজ করানো অপরাধ। এতে ওদের শরীরে জীবাণু সংক্রমণের আশঙ্কা রয়েছে।’’ হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ সুজন জানার কথায়, ‘‘শিশুদের দিয়ে শৌচাগার পরিষ্কার করানো স্বাস্থ্যবিধি সম্মত নয়। ওরা খালি হাতে কাজ করছে। তা ছাড়া শৌচাগার পরিষ্কার করার সময় অ্যাসিড বা অন্য ধরনের রাসায়নিক থেকে আহত হওয়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।’’

জেলা শিক্ষা আধিকারিক বিশ্বজিৎ সরকার বলেন, ‘‘ছোট ছেলেমেয়েদের দিয়ে এই কাজ না করানো ঠিক হয়নি। তারা এই কাজের জন্য দক্ষ নয়। তা ছাড়া এটা স্বাস্থ্যসম্মতও নয়। ‘নির্মল বিদ্যালয় সপ্তাহ’ পালনের অঙ্গ হিসেবে শৌচাগার ব্যবহারের বিধি সহ পরিচ্ছন্নতা শেখানোর কথা ছিল। প্রাথমিক পড়ুয়াদের দিয়ে শৌচাগার করিয়ে স্কুল ঠিক কাজ করেনি। এ বিষয়ে খোঁজ নেব।’’ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান মানস দাস বলেন, ‘‘শৌচাগার নির্মল রাখার কথা বলা হয়েছে কিন্তু পড়ুয়াদের দিয়ে তা পরিষ্কার করানোর কথা বলা হয়নি।’’

তবে সংশ্লিষ্ট স্কুলের প্রদান শিক্ষক সুকুমার শেঠ এতে কোনও অন্যায় দেখছেন না। তাঁর যুক্তি, ‘‘আমি নিজে হাতে শৌচাগার পরিষ্কার করে থাকি। ওদের দিয়ে প্লাস্টিকের বিরুদ্ধে সচেতনতা, জল সংরক্ষণের মতো বিষয়ে বিষয়ে বাড়ি বাড়ি সমীক্ষার কাজ করিয়েছি। ছোট থেকেই এই সব বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্যই ওদের দিয়ে শৌচাগার পরিষ্কার করানো হয়েছে।’’ যদিও ছোট ছোট ছেলেদের দিয়ে এই ধরনের কাজ করানো প্রসঙ্গে হলদিয়ার এক চিকিৎসক বলেন, ‘‘ছোটদের মধ্যে ‘নিজের কাজ নিজে করো’ এই মনোভাব তৈরি করার মধ্যে কোনও অন্যায় নেই। কিন্তু এ ক্ষেত্রে বিষয়টি অন্য। শৌচাগার হচ্ছে নোংরা, জীবাণুর আঁতুড়ঘর। বড়রা সে কাজ করতে পারে। কারণ তাদের শরীরে রোগ প্রতিরেধ ক্ষমতা বেশি। তুলনায় ছোটদের শরীরে সেই ক্ষমতা অনকে কম। তাই সহজেই তাদের নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।’’

তিনি আরও জানান, ছোটদের দিয়ে ওই কাজ করানো হলেও জরুরি ছিল তাদের জন্য হাতের গ্লাভস, নাক-মুখ ঢাকতে কাপড়ের মাস্ক-এর ব্যবস্থা করা।

Student Toilet Facebook
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy