Advertisement
১৭ মে ২০২৪

ডেঙ্গির তথ্য চাপার নালিশ, কিশোরীর দেহ রেখে ক্ষোভ

এ দিন ডেবরার দলপতিপুরে মৃত্যু হয় শবনম খাতুন (১৪) নামে ওই কিশোরীর।

এ দিন ডেবরার দলপতিপুরে মৃত্যু হয় শবনম খাতুন (১৪) নামে ওই কিশোরীর।

এ দিন ডেবরার দলপতিপুরে মৃত্যু হয় শবনম খাতুন (১৪) নামে ওই কিশোরীর।

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০০:১০
Share: Save:

জ্বরে এক কিশোরীর মৃত্যুতে তথ্য গোপন করার অভিযোগে পথ অবরোধ করল গ্রামবাসী। রবিবার ডেবরা-বালিচক সড়কে অবরোধ চলে।

এ দিন ডেবরার দলপতিপুরে মৃত্যু হয় শবনম খাতুন (১৪) নামে ওই কিশোরীর। সে ডেবরা হরিমতি হাইস্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। গত কয়েকদিন ধরে জ্বরে ভুগছিল শবনম। শনিবার জ্বর বাড়ায় তাকে ডেবরা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ দিন শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় মেদিনীপুর মেডিক্যালে ‘রেফার’ করা হয়। পরে তার মৃত্যু হয়। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানানো হয়, এনসেফ্যালাইটিসে মৃত্যু হয়েছে ওই কিশোরীর। এর পরেই উত্তেজিত হয়ে পড়েন পরিজন ও গ্রামবাসী। স্বাস্থ্য দফতরের বিরুদ্ধে ডেঙ্গির তথ্য গোপনের অভিযোগে বালিচকে রাস্তায় দেহ রেখে অবরোধ শুরু হয়। পরে পুলিশ পরিস্থিতি সামলায়।

শবনমের বাবা-মা ভিন্‌ রাজ্যে কাঠের কাজ করেন। গ্রামে দাদুর বাড়িতে থেকে পড়াশোনা করত ওই ছাত্রী। দিন আটেক আগেই জ্বর হয়েছিল তার। ডেবরা সুপার স্পেশ্যালিটির বহির্বিভাগে চিকিৎসা করে সাময়িক সুস্থও হয়েছিল সে। গত কয়েকদিন স্কুল ও টিউশনে যাচ্ছিল। কিন্তু শনিবার সকাল থেকে ফের জ্বর বাড়তে থাকে। সঙ্গে মাথাব্যথার উপসর্গ নিয়ে ফের ডেবরা সুপার স্পেশ্যালিটিতে ভর্তি করানো হয় শবনমকে। পরে মেদিনীপুর মেডিক্যালে মৃত্যু হয় তার।

শবনমের দাদু শেখ আব্দুল রহমান বলেন, “আমার নাতনি জ্বরে ভুগছিল। ডেবরা সুপার স্পেশালিটি থেকে বলল যে ডেঙ্গি হয়েছে। প্লেটলেট কমছে। তাই ডেবরায় চিকিৎসা সম্ভব না হওয়ায় রেফার করা হল। তার পরে বেলা একটা নাগাদ মারা গেল। তখন লেখা হল এনসেফ্যালাইটিস। আমরা বুঝতেই পারলাম না আসলে কী রোগে মারা গেল নাতনি। ডেঙ্গি ও এনসেফ্যালাইটিস কোন রোগের চিকিৎসা করল চিকিৎসকেরা?”

ইতিমধ্যেই পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় দেড়শো ছাড়িয়েছে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা। তালিকায় ঘাটালের পরেই রয়েছে ডেবরার স্থান। সরকারিভাবে এই ব্লকের ১৫জন ডেঙ্গি আক্রান্তের মধ্যে ১১জনই দলপতিপুরের বলে জানা গিয়েছে। যদিও স্থানীয়দের দাবি, দলপতিপুরের ৩৪জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত। তাও এলাকায় পরিচ্ছন্নতার জোর দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। নিয়মিত মশা মারার স্প্রে করা হচ্ছে না বলেও দাবি গ্রামবাসীদের। এই চাপান-উতোরের মাত্রা বাড়িয়েছে শবনমের। স্থানীয়দের দাবি, ডেঙ্গিতে মৃত্যু চাপা দিতেই এনসেফ্যালাইটিস বলছে স্বাস্থ্য দফতর। এ দিন অবরোধ-বিক্ষোভের নেতৃত্বে থাকা স্থানীয় বাসিন্দা ফারহাদ হুসেন বলেন, “ডেবরা হাসপাতাল মৌখিকভাবে ডেঙ্গি বলে রেফার করল। আর মেদিনীপুর মেডিক্যালে সেই রোগীর মৃত্যুর পরে এনসেফ্যালাইটিস বলা হল। কোনটা ঠিক? তাহলে নিশ্চয়ই কোথাও ভুল চিকিৎসা হয়েছে!’’

জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরার অবশ্য বক্তব্য, “ওই কিশোরীর উপসর্গ দেখে এনসেফ্যালাইটিস বলেই মনে করছেন চিকিৎসকেরা। তবে দলপতিপুরে ডেঙ্গিতে অনেকে আক্রান্ত হয়েছেন এটা ঠিক। আমরা বিষয়টি দেখছি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Health Dengue Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE