বাইক বাহিনীর হামলায় তৃণমূল কর্মীদের আহত হওয়ার অভিযোগ খেজুরিতে। — নিজস্ব চিত্র।
আবার উত্তপ্ত পূর্ব মেদিনীপুরের খেজুরি। বুধবারেই খেজুরি ২ ব্লকের স্থায়ী সমিতি গঠনের ভোটে জয়লাভ করে বিজেপি। তার পরেই তাদের বাইক বাহিনীর বিরুদ্ধে তাণ্ডব চালানোর অভিযোগ খেজুরি ২ ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকায়। অভিযোগ, বোমা, বন্দুক নিয়ে গ্রামে ঢুকে তাণ্ডব চালায় বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। দখল করে নেওয়া হয় তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ও। ঘটনায় তৃণমূলের একাধিক কর্মী জখম হয়েছেন বলে দাবি তৃণমূলের। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিজেপি।
স্থানীয় সূত্রে খবর, বুধবার রাতে খেজুরি ২ ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকায় বাইক বাহিনীর তাণ্ডব চলে। ভাঙচুর করা হয় বাড়িঘর। বোমা পড়তে থাকে মুড়ি-মুড়কির মতো। ঘটনায় বিজেপির দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন তৃণমূলের নেতারা। তাদের একাধিক কর্মী, সমর্থক জখম হয়েছেন বলেও দাবি রাজ্যের শাসকদলের।
হাইকোর্টের নির্দেশে, বুধবার পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা শাসকের দফতরে খেজুরি ২ ব্লকের ৯টি স্থায়ী সমিতি গঠিত হয়। যেখানে সব ক’টি সমিতিই ১১-১৩ ব্যবধানে জিতে নেয় বিজেপি। এর পর রাত থেকে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে খেজুরির বিস্তীর্ণ এলাকায়। তৃণমূলের দাবি, রাত থেকে খেজুরি ২ ব্লকের নীচকসবা অঞ্চলের আলিপুর, কয়ালচক, মতিলালচক, হলুদবাড়ি অঞ্চলের দেখালি, জনকা অঞ্চলের পূর্ব ভাঙনমারি, গড়াহাট জালপাই প্রভৃতি এলাকায় তাণ্ডব চালিয়ে গিয়েছে বিজেপির বাইক বাহিনী।
খেজুরি ২ ব্লক তৃণমূলের সভাপতি শ্যামল মিশ্র বলেন, ‘‘ইতিমধ্যে বিজেপির বাইক বাহিনী খেজুরি অঞ্চলের সাতখন্ড এবং আলিপুর বাজারে থাকা তৃণমূলের পার্টি অফিস দখল করেছে। সেই সঙ্গে মুড়ি-মুড়কির মতো বোমাবাজি চলেছে। বাড়িঘরে লুটপাট চালানো হচ্ছে। আমাদের লোকজনকে বেছে বেছে মারধর করা হয়েছে।’’ তিনি আরও বলছেন, ‘‘২০১১-র পর থেকে এমন অশান্তি কোনও দিন ছিল না। এখন আবার নতুন করে অশান্তি ছড়ানো হচ্ছে। খেজুরির বিধায়ক এবং অধিকারী পরিবারের অঙ্গুলিহেলনেই এই তাণ্ডব।’’ শ্যামল জানিয়েছেন, ইতিমধ্যে যাঁদের ওপর হামলা হয়েছে এবং যাঁরা হামলায় আহত হয়েছেন, তাঁরা পুলিশে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
তৃণমূলের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন খেজুরির বিজেপি বিধায়ক শান্তনু প্রামাণিক। তিনি পাল্টা জানান, “গতকাল (বুধবার) রাতে তৃণমূলের নাম করা দুষ্কৃতী লাল্টু, পিন্টু-সহ হার্মাদের দল শ্যামপুরে ঢুকেছিল। তারা এলাকায় ঢুকে বিজেপি কর্মীদের বাড়িতে হামলা চালিয়েছে।’’ শান্তনু আরও বলেন, “আমাদের পক্ষ থেকে শান্তির বার্তা দেওয়া হচ্ছে। তৃণমূলের একটাও বাড়ি যদি ভাঙা দেখাতে পারেন, তাহলে আমরা উপযুক্ত ব্যবস্থা নেব।’’ বাইক বাহিনীর তাণ্ডবের অভিযোগ অস্বীকার করলেও বিজেপি বিধায়কের অবশ্য দাবি, স্থায়ী সমিতির ভোটে জেতার আনন্দে গেরুয়া শিবির রাতভর বাজি পুড়িয়ে আনন্দ করেছেন। তিনি বলছেন, ‘‘স্থায়ী সমিতি গঠন ঠেকাতে খেজুরিতে যে ভাবে হামলা হয়েছিল সেটা সবাই দেখেছেন। এখন আদালতের হস্তক্ষেপে আমরা ৯টি সমিতি জিতেছি। এ জন্য আমাদের সমর্থকেরা রাতভর বাজি পুড়িয়েছেন। গোটা এলাকায় মানুষ উৎসব পালন করেছেন। তাকেই হামলার ঘটনা বলে চালাতে চাইছে তৃণমূল।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy