হোলির দিনে শুনশান খড়্গপুরে দিলীপ ঘোষের রেল বাংলো। —নিজস্ব চিত্র।
মেদিনীপুরের সাংসদ থাকাকালীন রেলশহরই ছিল তাঁর ‘খাসতালুক’। পুজো হোক বা দোল-হোলি, রেল বাংলোয় নিজের সাংসদ কার্যালয়ে অন্য মেজাজে দেখা যেত দিলীপ ঘোষ।
এ বার আর দিলীপ মেদিনীপুর লোকসভার প্রার্থী নন। তিনি লড়ছেন দুর্গাপুর-বর্ধমান আসনে। তাই এ বার রঙের উৎসবে খড়্গপুর শহরের সাউথ ডেভেলপমেন্টে ৬৭৭ নম্বর রেল বাংলো রইল শুনশান, বিষণ্ণ।
২০১৬সালে প্রথম খড়্গপুর সদর বিধানসভায় জেতার পরে দিলীপ এই বাংলোয় থাকা শুরু করেছিলেন। বাংলোতেই ছিল তাঁর বিধায়ক কার্যালয়। ২০১৯ সালে মেদিনীপুরের সাংসদ হওয়ার পরে এই রেল বাংলো হয়ে যায় দিলীপের সাংসদ কার্যালয়। সবসময়ে এখানে বিজেপির কর্মীদের আনাগোনা লেগেই থাকত। আর দিলীপ থাকলে গমগম করত গোটা চত্বর। দু’দিন ধরে চলত হোলির উৎসব। বাজনা বাজিয়ে কর্মীদের সঙ্গে রং খেলতেন দিলীপ। সঙ্গে স্বভাবসিদ্ধ সব কটাক্ষ।
সম্প্রতি গোপীবল্লভপুর থেকে নিজের ভোটার কার্ডের ঠিকানা বদলে খড়্গপুর সদর করেছিলেন দিলীপ। তখনও চর্চা হচ্ছিল মেদিনীপুরেই হয়তো ফের তাঁকে টিকিট দেবে বিজেপি। তা অবশ্য হয়নি। দোলের আগের রাতে মেদিনীপুর আসনের প্রার্থী হিসেবে অগ্নিমিত্রা পালের নাম ঘোষণা হয়েছে। আর দিলীপ দোলের দিনেই বর্ধমানে পৌঁছেছেন। এ বার হোলিতে তাই তালাবন্ধই ছিল ‘দিলীপ ঘোষের বাংলো’।
এ প্রসঙ্গে দিলীপ নিজে বলছেন, “আমার মাথায় এখন শুধুই দুর্গাপুর-বর্ধমান। এটা ঠিক প্রতিবার আমি খড়্গপুরে থাকলে কার্যকর্তারা সবাই আসত। হোলি খেলা হত। এ বার আমি নেই। যে যার মতো তার জায়গায় নিশ্চয়ই হোলি খেলেছে।”
দিলীপের ‘অনুগামী’ বলে পরিচিত খড়্গপুরের কিছু নেতা আবার ছুটেছিলেন বর্ধমানে। দোলের দিনে শক্তিগড়ে যান বিজেপির সাংসদ প্রতিনিধি তথা পুর-প্রতিনিধি অভিষেক আগরওয়াল, বিজেপির শহর দক্ষিণ মণ্ডলের সহ-সভাপতি কৃষ্ণা গোলে-সহ বেশ কয়েকজন। ফিরে অভিষেক বললেন, “দিলীপদার সঙ্গে শক্তিগড়ে রং খেলেছি। ওখানে দিলীপদা জিতছে। এখানে আমাদের জেতাতে হবে অগ্নিমিত্রাদিকে। আমরা সবাই মেদিনীপুরে অগ্নিমিত্রাদিকে স্বাগত জানাতে এসেছি।’’ বিজেপির শহর দক্ষিণ মণ্ডলের সম্পাদক বিশ্বনাথ রাও বলেন, “দোলে বর্ধমানে গিয়েছিলাম। হোলিতে মেদিনীপুরে। দল যাঁকে প্রার্থী করেছে তাঁর জন্য লড়াই করব। তবে দিলীপদা মানে আলাদা জোশ। রেল বাংলো হোলি হয়নি বলে খারাপ লাগলেও কিছু তো করার নেই।”
দিলীপের বাংলো যে এলাকায় সেই ২৬নম্বর ওয়ার্ডের পুর-প্রতিনিধি বিজেপির অনুশ্রী বেহেরা। তিনিও বলেন, “দিলীপদা থাকলে বাংলো হোলিতে উৎসবের মেজাজ নিত। খারাপ তো লাগছেই। তবে মেদিনীপুরে ধর্মায় আমরা যখন অগ্নিমিত্রাদিকে স্বাগত জানালাম, তখন রং খেলা হয়েছে। যে ভিড় দেখলাম তাতে আমরা জিতছি।”
সেই সূত্রেই বিজেপির মণ্ডল সহ-সভাপতি কৃষ্ণা গোলে জুড়লেন, “২০২৫ সালে এই রেল বাংলোতেই আবার আমরা বর্ধমানের সাংসদ হিসাবে দিলীপদা ও মেদিনীপুরের সাংসদ হিসাবে অগ্নিমিত্রাদিকে নিয়ে জমজমাট হোলি পালন করব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy