Advertisement
০২ মে ২০২৪

পাট্টা পেয়েও মেলেনি জমি, দখল হটাতে ‘ব্যর্থ’ প্রশাসন

এগরা-২ ব্লকের মঞ্জুশ্রী গ্রাম পঞ্চায়েতের মাধবপুর গ্রামে বাসিন্দা কাজল মাইতি। কয়েক বছর ধরে গ্রামে এক ব্যক্তির বাড়িতে ভাড়া থাকেন। পঞ্চায়েতের কাছে আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০১৬ সালে অক্টোবর মাসে ব্লক ভূমি রাজস্ব দফতর কাজলের নামে সরকারি খাস জমির পাট্টা দেয়।

কাজল মাইতি। নিজস্ব চিত্র

কাজল মাইতি। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
এগরা শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০১৯ ০০:০১
Share: Save:

ভিটেমাটি ছিল না। মারা গিয়েছেন স্বামীও। তিন বছর আগে তৈরির জন্য সরকারি ভাবে ওই বিধবা মহিলাকে জমির পাট্টা দেয় সরকার। কিন্তু পাট্টা থাকা সত্ত্বেও জমির দখলদারের হুমকিতে আজও জমিতে নিজের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে পারেননি ওই মহিলা। এমনকী জমির পাট্টা পাওয়ার পর আবাস যোজনায় তাঁর নামে বরাদ্দ টাকায় কেনা রড, বালি মাসের পর মাস পড়ে নষ্ট হচ্ছে। নিজের জমির দখল পেতে আর্জি নিয়ে প্রশাসনের নানা দরজায় ঘুরলেও কোনও সুরাহাই হয়নি।

এগরা-২ ব্লকের মঞ্জুশ্রী গ্রাম পঞ্চায়েতের মাধবপুর গ্রামে বাসিন্দা কাজল মাইতি। কয়েক বছর ধরে গ্রামে এক ব্যক্তির বাড়িতে ভাড়া থাকেন। পঞ্চায়েতের কাছে আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০১৬ সালে অক্টোবর মাসে ব্লক ভূমি রাজস্ব দফতর কাজলের নামে সরকারি খাস জমির পাট্টা দেয়। বালিঘাই বাজারের অদূরে মহানগর মৌজার ৪৬২ দাগের জলাজমির তিন ডেসিমাল তিনি পাট্টা পান। স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই দাগের মোট ৯০ ডেসিমাল খাসজমি অনেক আগে থেকে দখলে রয়েছে বালিঘাই মহানগর গ্রামের শ্রীমন্ত মাঝি ও তাঁর দুই ভাই। পঞ্চায়েত সূত্রে খবর, পাট্টা পাওয়ায় পরে দখলদার এবং পাট্টা প্রাপকদের নোটিস দিয়ে জলাজমির নির্দিষ্ট অংশ চিহ্নিত করে দেয় ব্লক ভূমি রাজস্ব দফতর। অভিযোগ, কাজল দেবী সহ পাট্টা প্রাপক আরও তিন জনের সেই দাগের চিহ্নিত মোট ১২ ডেসিমাল জায়গায় দখলদার শ্রীমন্ত রাতারাতি পুকুর খনন করে জলাজমির চরিত্র বদল করে। খবর পেয়ে কাজল-সহ অন্য পাট্টা প্রাপকেরা বাধা দিলেও শ্রীমন্ত কর্ণপাত করেনি। উল্টে কাজলকে মারধর ও হুমকির অভিযোগ ওঠে। ২০১৭ সালে জানুয়ারি মাসে এই ঘটনার পরে স্থানীয় পঞ্চায়েত থেকে থানা, বিডিও অফিস, ভূমি রাজস্ব-সহ মহকুমা শাসকের দফতরে একাধিক বার লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন কাজল। কিন্তু আজ পর্যন্ত পরিস্থিতির কোনও বদল হয়নি।

গত এক বছর ধরে আবাস যোজনার টাকা পড়ে থাকলেও জায়গার অভাবে বাড়ি করতে পারছেন না কাজল-সহ অন্য পাট্টা প্রাপকরা। ফলে ভাড়া বাড়িতেই ছেলেকে নিয়ে দিন কাটছে কাজলের। এ বিষয়ে মঞ্জুশ্রী পঞ্চায়েতের উপপ্রধান প্রকাশ রায় চৌধুরী বলেন, ‘‘পঞ্চায়েতের এতে কোনও ভূমিকা নেই। মহিলার জমির দখল না পাওয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ প্রশাসনিক ব্যর্থতা। আমরা চাই ওই মহিলা তাঁর প্রাপ্য জায়গা পান।’’

এগরার মহকুমা শাসক অপ্রতিম ঘোষ বলেন, ‘‘পাট্টা থাকা সত্ত্বেও কেন ওই মহিলা ও অন্যরা জমির দখল পাচ্ছেন না তা জানা নেই। এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দ্রুত সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Woman Land Patta Egra Encroachment
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE