চাঁদা না-পেয়ে এক হোটেল ম্যানেজারকে মারধরের অভিযোগ উঠল মন্দারমণির এক পুজো কমিটির বিরুদ্ধে। ওই পুজো কমিটির যুগ্ম সভাপতি জেলার প্রাক্তন তৃণমূল শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ দেবব্রত মণ্ডল। মঙ্গলবার সকালে মন্দারমণি কোস্টাল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন নিগৃহীত কৃষ্ণেন্দু গুছাইত।
জানা গিয়েছে, সোমবার রাতে মন্দারমণির এক অভিজাত হোটেলের ম্যানেজার কৃষ্ণেন্দুবাবু মোটর বাইকে বেরা বাড়িতে ফিরছিলেন। অভিযোগ, সে সময় বাইকে চ়ড়েই তাঁকে ধাওয়া করেন তিন যুবক। তাঁরা কালিন্দী অঞ্চল সর্বজনীন শ্যামাপূজা কমিটির অন্যতম যুগ্মসম্পাদক অজিত কুমার দে ওরফে তপন, সহ-সভাপতি চিত্তরঞ্জন দাস ও সদস্য সুবিমল পুষ্টি। পোর্ট ট্রাস্টের অফিসের সামনে কৃষ্ণেন্দুবাবুকে মারধর করা হয়। এ দিন কৃষ্ণেন্দুবাবু বলেন, ‘‘আমার মাথার হেলমেট দিয়েই আমাকে মারতে শুরু করে। আমার গলার উপর বাইক চালিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। পরে লোকজন আসতে দেখে ওরা পালিয়ে যায়।’’ পুলিশ গিয়ে কৃষ্ণেন্দুবাবুকে উদ্ধার করে। প্রথমে বড়রাঙ্কুয়া হাসপাতালে, পরে কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তাঁকে। মাথায় আঘাত থাকায় মঙ্গলবার সকালে তাঁর সিটি স্ক্যান করা হয়েছে।
ঘটনার পর থেকেই বেপাত্তা তপন, চিত্তরঞ্জন ও সুবিমল। পুলিশ তবে মঙ্গলবার রাতেই থানায় ডেকে পাঠানো হয় পুজো কমিটির অপর অন্যতম যুগ্ম সম্পাদক কেশব গায়েন ও অন্যান্য কর্মকর্তাদের। কেশববাবু বলেন, ‘‘ র বৈঠক হবে। তারপর ঠিক করব, থানায় যাব কি না!’’
ঘটনার সূত্রপাত সোমবার সকালে। কৃষ্ণেন্দুবাবু বলেন, ‘‘ওই তিন জন হোটেলে এসে মোটা টাকা চাঁদা দাবি করে। হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে চাঁদা দেওয়া হয়েছে, তাই হোটেল থেকে আলাদা চাঁদা দেওয়া যাবে না বলতেই শুরু হয় গালাগালি। তখনই ‘দেখে নেওয়া’র হুমকি দিয়ে যায় ওরা।’’ মন্দারমণি বিচ হোটেলিয়ার্স ওয়েলফেয়ার আ্যসোসিয়েশনের সম্পাদক দেবদুলাল দাসমহাপাত্র বলেন, ‘‘হোটেল মালিক সংগঠনের পক্ষে থেকে কালিন্দী শ্যামাপূজা কমিটিকে ২৫ হাজার টাকা চাঁদা দেওয়া হয়েছে। তারপরওও হোটেলে গিয়ে চাঁদা তোলা অন্যায়।” সংগঠনের সভাপতি সন্দীপন বিশ্বাসও দোষীদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও কঠোর শাস্তির দাবি করেছেন।
বারবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি কমিটির যুগ্ম সভাপতি দেবব্রত মণ্ডলকে। তবে পুজো কমিটির অপর যুগ্ম সম্পাদক ও কালিন্দীর পোস্টমাস্টার কেশব গায়েন, কমিটির সহ-সম্পাদক রামনগর-২ ব্লক কংগ্রেস সভাপতি প্রণব পঞ্চাধ্যায়ী ও বিকাশ বাঙ্গাল ঘটনার নিন্দা করেছেন। কালিন্দী পঞ্চায়েতের প্রধান সিপিএম-এর তসলিমা বিবি বলেন, “৬৭ বছর ধরে কালিন্দীতে স্থানীয় মানুষ এই পুজো করে আসছেন। এমন অপ্রীতিকর ঘটনা কখনও ঘটেনি।” রামনগর-২ বিডিও প্রিতম সাহা জানিয়েছেন, “বিষয়টি মন্দারমণি থানা ও পুলিশ প্রশাসন দেখছে। ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy