কলেজে কলেজের দলের ছাত্র নেতাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ বা মহিলা ঘটিত অপরাধের অভিযোগ ঘিরে চরম অস্বস্তিতে তৃণমূল। দক্ষিণ কলকাতার আইন কলেজে এক ছাত্রীর ধর্ষণের ঘটনার পর সেই অস্বস্তি আরও বেড়েছে। এই আবহে তৃণমূলের ছাত্র সংগঠনের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে সংগঠনের রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্যের বৈঠকে দেখা গেল গণধর্ষণের এক অভিযুক্ত নেতাকে। যা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।
আগামী ২৮ অগস্ট তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (টিএমসিপি) প্রতিষ্ঠা দিবস। এই উপলক্ষে কলকাতায় সমাবেশ রয়েছে। জেলায় জেলায় চলছে এর প্রস্তুতি। বুধবার বিকেলে কাঁথি সাংগঠনিক জেলায় একটি প্রস্তুতি বৈঠক হয় রামনগরে। তৃণাঙ্কুর সেখানে ছিলেন। ওই সভায় রামনগরের ব্লক ছাত্র সংগঠনের সভাপতি চন্দন পুলাই উপস্থিত থাকা ঘিরে জোর চর্চা। টিএমসিপি’র জেলা (কাঁথি) সভাপতি শতদল বেরা এবং কয়েকজনের বিরুদ্ধে গণধর্ষণের অভিযোগ করেছিলেন রামনগর কলেজের এক ছাত্রী। আদালতের নির্দেশে শতদলকে ওই মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। তবে টিএমসিপি’র ব্লক সভাপতি চন্দন এবং স্থানীয় যুব নেতা রাজকুমার জানার বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দেয় পুলিশ। চন্দন বর্তমানে জামিনে রয়েছেন। তবে তাঁর প্রকাশ্য সভায় হাজির থাকা ঘিরে কটাক্ষ করেছে বিরোধীরা। ডিএসও’র রাজ্য সম্পাদক বিশ্বজিৎ রায় বলেন, ‘‘ধর্ষকরাই তো তৃণমূলের সম্পদ। স্বাভাবিক কারণে ওদের ছাড়া সংগঠনের সভা হবে কি করে?’’
এ দিকে, চন্দন-বিতর্ক ছাড়াও ওই সভায় ছাত্র নেতাদের গরহাজিরা নিয়েও সংগঠনের অন্দরে প্রশ্ন উঠছে। দলীয় সূত্রের খবর, কাঁথি সাংগঠনিক জেলার আটটি কলেজের অধিকাংশ ইউনিটের দায়িত্বপ্রাপ্তরা এ দিনের সভায় অনুপস্থিত ছিলেন। প্রস্তুতি বৈঠকে যাননি ছাত্র সংগঠনের জেলা কমিটি এবং ব্লকের পদাধিকারীরাও। টিএমসিপির একাংশ সূত্রের খবর, সংগঠনের প্রতিষ্ঠা দিবসের প্রস্তুতি ছাড়া সারা বছর কোনও রকম সাংগঠনিক বৈঠক হয় না পূর্ব মেদিনীপুরে। এ নিয়েও তীব্র অসন্তোষ রয়েছে বহু পদাধিকারীদের মধ্যে।
রাজ্য জুড়ে একের পর এক কলেজে ছাত্র নেতাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের আবহে এমনিতেই অস্বস্তিতে রয়েছে শাসক দল। তারপর এ দিন খোদ রাজ্য সভাপতির বৈঠকে গণধর্ষণে অভিযুক্তের হাজির থাকা এবং সংগঠনের একাংশ নেতার গরহাজিরা নিয়ে প্রশ্ন করা হয় তৃণাঙ্কুরকে। তিনি অবশ্য বলছেন, ‘‘জেলা পর্যায়ের বৈঠকে কারা এসেছেন, কারা আসেননি, সেটা তো বলা মুশকিল। তবে সকলকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে শতদলের নেতৃত্বে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে এই জেলায় ছাত্র সংগঠন কাজ করবে। যাঁরা নিয়মিত কলেজ পড়ুয়া তাঁদেরই ইউনিটের দায়িত্ব দেওয়া হবে।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)