নন্দীগ্রামের তৃণমূল নেতা আবু তাহের।— ফাইল চিত্র।
নন্দীগ্রামে ‘ভোট পরবর্তী হিংসা’ মামলায় ধৃত তৃণমূল নেতা আবু তাহেরের জেল হেফাজতের মেয়াদ বাড়ল আরও একটা দিন। মঙ্গলবার তৃণমূল নেতাকে হলদিয়া মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক জানা, বুধবার তাঁকে পুনরায় আদালতে হাজির করাতে হবে। সংশ্লিষ্ট মামলায় সিবিআইয়ের খাতায় দীর্ঘ দিন ফেরার থাকার পর সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে গত শনিবার হলদিয়া আদালতে আত্মসমর্পণ করেনন তাহের। মঙ্গলবার আদালত থেকে বেরোনোর সময় তিনি বলেন, ‘‘আদালতের উপর আমার পূর্ণ আস্থা আছে। আমি আশা করছি যে, সঠিক বিচার পাব।’’
আদালত সূত্রে খবর, তাহেরকে আদালতে তোলা হলে তাঁকে আবার হেফাজতে চেয়ে আবেদন জানান কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আইনজীবী। কিন্তু মামলাটির শুনানি বর্তমানে ফাস্ট ট্র্যাক আদালতে চলায় ‘টেকনিক্যাল গ্রাউন্ড’-এ তাহেরের পুলিশি হেফাজতের আবেদন স্থগিত হয়ে যায়। বুধবার মূল মামলার শুনানির পাশাপাশি তাহেরের পুলিশ হেফাজতের শুনানি রয়েছে। তাঁর পক্ষে আইনজীবী শেখ মনসুর আলম বলেন, ‘‘তাহেরের বিরুদ্ধে তদন্তে অসহযোগিতা করেননি বলে অভিযোগ এনেছে সিবিআই। আগামিকাল (বুধবার) মামলার শুনানি হবে।’’
ওই আইনজীবী আরও বলেন, ‘‘গত শনিবারের নির্দেশ মোতাবেক আবু তাহেরের জামিনের আবেদন নিয়ে এডিজি কোর্টে তাঁকে তোলা হয়। কিন্তু এই কোর্টে মামলার কাগজপত্র নেই। মামলাটি ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে চলে যাওয়ায় সেখানেই জামিনের শুনানি হয়। এই কোর্টে সিবিআইয়ের আইনজীবী হাজির ছিলেন। তাঁরা তাহেরকে ৩ দিনের পুলিশি হেফাজতে চেয়ে আবেদন জানান।’’ তিনি আরও জানান, বুধবার এই মামলার আসল কেস রেকর্ডের দিন রয়েছে। সিবিআই আগামিকাল আদালতকে সন্তুষ্ট করলে তবেই আদালত সিদ্ধান্ত নেবে যে সেশান জজ হিসাবে তিনি ধৃতকে পুলিশ হেফাজত না কি জেল হেফাজতে পাঠাবেন।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার পরের দিন অর্থাৎ ৩ মে নন্দীগ্রাম রাজনৈতিক উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। সে দিন চিল্লোগ্রামের বিজেপি সমর্থক দেবব্রত মাইতি আক্রান্ত হন। আঙুল ওঠে শাসকদলের দিকে। দেবব্রতকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় কলকাতার হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। কিন্তু মৃত্যু হয় তাঁর। এর পর ‘বিধানসভা ভোট পরবর্তী হিংসা’ নিয়ে মামলা ওঠে কলকাতা হাই কোর্টে। আদালতের নির্দেশে এই সংক্রান্ত যাবতীয় মামলার তদন্তভার নেয় সিবিআই। দেবব্রত খুনের ঘটনায় নাম জড়ায় শেখ সুফিয়ান, আবু তাহেরের মতো নন্দীগ্রামের এক ঝাঁক তৃণমূল নেতার। সুফিয়ান হাই কোর্টের রক্ষাকবচ পেলেও অন্যান্য অভিযুক্তকে জেল হেফাজতে পাঠানো হয়। তবে এই পঞ্চায়েত ভোটের আগে তাঁরা সকলেই জামিনে মুক্তি পান। অন্য দিকে, গ্রেফতারি এড়াতে প্রথম থেকেই তাহের সিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদ এড়িয়ে যান বলে অভিযোগ। তাঁর নামে হুলিয়া জারি হয়। তার পরও আগাম জামিনের জন্য সুপ্রিম কোর্টের দরজাতেও কড়া নাড়েন তৃণমূল নেতা। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশেই গত শনিবার হলদিয়া আদালতে আত্মসমর্পণ করেন তাহের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy