Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
Akhil Giri

‘ভালবাসতে গিয়েছিলেন, গরু দিয়েছে গুঁতিয়ে’! রাষ্ট্রপতির পর অখিল গিরির কটাক্ষ মোদীকে

পাঁচ দিন আগে রামনগরের একই মাঠে সভা করে তৃণমূল সরকারের দিকে একের পর এক আক্রমণ শানিয়েছেন বিজেপি সভাপতি জে পি নড্ডা। সেই মাঠে পাল্টা সভা করে বিজেপির অভিযোগের জবাব দিলেন অখিলরা।

Image of MIC and TMC Leader Akhil Giri

‘জবাব’ দেওয়ার জনসভা থেকে মোদী, শুভেন্দু, সুকান্তকে আক্রমণ অখিলের। — ফাইল ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রামনগর শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৬:২২
Share: Save:

রাজ্যের কারামন্ত্রীর ‘কড়া’ আক্রমণের মুখে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পূর্ব মেদিনীপুরের রামনগরের জনসভা থেকে বর্ষীয়ান ওই তৃণমূল নেতার দাবি, ‘ভ্যালেন্টাইনস ডে’তে গরুকে আঁকড়ে ধরে ভালবাসতে গিয়েছিলেন মোদী। গরু ঘাবড়ে গিয়ে তাঁকে গুঁতিয়ে দিয়েছে। বৃহস্পতিবারের সভা থেকে অখিল কটাক্ষ করেন বঙ্গ বিজেপির দুই নেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং সুকান্ত মজুমদারকেও।

এর আগে তাঁর কটাক্ষ থেকে বাদ যাননি স্বয়ং রাষ্ট্রপতি। এ বার গিরির গোলা ছুটল প্রধানমন্ত্রীর দিকে। উপলক্ষ, ১৪ ফেব্রুয়ারি ‘ভ্যালেন্টাইনস ডে’। প্রেমের দিনে গরুকে আলিঙ্গন করার কেন্দ্রীয় ফরমান ঘিরে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল দেশে। সমালোচনা আর হাসি-ঠাট্টার চাপে পড়ে শেষ পর্যন্ত বিজ্ঞপ্তি দিয়ে আবেদন প্রত্যাহার করে কেন্দ্রীয় সরকার। মোদী সরকার গো-আলিঙ্গনের বিষয়টিকে ভুলতে চাইলেও অখিল সেই লাইন ধরেই প্রধানমন্ত্রীকে কটাক্ষ করলেন। তিনি বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী গরুকে আঁকড়ে ভালবাসা দেখাতে গিয়েছেন, গরু গুঁতিয়ে দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী পুরো পড়ে গিয়েছেন! ভাগ্যিস ষাঁড়কে ধরেননি। ষাঁড় যদি গুঁতিয়ে দিত পেটে লেগে যেত… ফুসসস!’’ যদিও বাস্তবে এমন কোনও ঘটনার কথা শোনা যায়নি। অখিল কেন এমন উপমা ব্যবহার করলেন তা-ও জানা যায়নি।

বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সুদাম পণ্ডিত বলেন, ‘‘অখিল গিরির মতো মানুষের কাছ থেকে এমনটাই আশা করা যায়। এর আগে দেশের রাষ্ট্রপতি সম্পর্কে কুরুচিকর মন্তব্য করে পার পেয়ে গিয়েছেন। এ বার তাই প্রধানমন্ত্রীকে নিশানা করে যা নয় তাই মন্তব্য করছেন। এটা বাংলার লজ্জা।’’

শুধু প্রধানমন্ত্রীই নয়, গত বৃহস্পতিবার রামনগর স্পোর্টস কমপ্লেক্স ময়দানের জনসভায় তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ এবং আসানসোলের তারকা সাংসদ শত্রুঘ্ন সিন্‌হাকে মঞ্চে বসিয়ে অখিল তোপ দাগেন শুভেন্দু, সুকান্তের দিকেও। রাজ্য বিজেপির সভাপতির দিকে অখিলের খোলা চ্যালেঞ্জ, ‘‘সুকান্ত মজুমদারকে আমি চ্যালেঞ্জ করছি, বুথে বুথে তোমরা প্রার্থী ঠিক করো দেখি। আমি দেখব। একটা লোক আনতে পারে না, আবার বড় বড় কথা!’’

গত ১২ ফেব্রুয়ারি রামনগরের স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশনের মাঠে জনসম্পর্ক সভা করেছিল বিজেপি। সেখানে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নড্ডা এবং সাংসদ তথা রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার তৃণমূল সরকারের অপশাসন এবং দুর্নীতির অভিযোগে সরব হয়েছিলেন। সেই ‘কুৎসা’ এবং ‘অপপ্রচার’-এর জবাব দিতে ওই মাঠেই পাল্টা জনসভা করার সিদ্ধান্ত নেয় তৃণমূল নেতৃত্ব। সেখানেই হাত খুলে খেলতে দেখা গেল পূর্ব মেদিনীপুরের বিতর্কিত তৃণমূল নেতাকে।

অখিলের আক্রমণ থেকে বাদ যাননি শুভেন্দুও। একদা সতীর্থকে অখিলের তোপ, ‘‘সিবিআই, ইডি, ইনকাম ট্যাক্সকে বলি শুভেন্দুর ঘরে ঢোকো। মগরাজার ঘরে ঢুকে লাভ নাই, তিন লক্ষ টাকা পেয়েছে। আর যাঁর ঘরে তিন কোটি টাকা আছে তাঁর ঘরে যাচ্ছে না। বিজেপি করে বলে। আর ও তৃণমূল করে বলে ওর ঘরে ঢুকেছে। ...আরে যাঁর ঘরে মাল পাবে সেখানে যাও। শিশির, শুভেন্দুর ঘরে পাবে। আমাদের ঘরে কোনও মালটাল নেই বাবু। আসো, এক কাপ খা চাও, ঘর চলে যাও।’’

পঞ্চায়েত ভোট পিছিয়ে দিতে চেয়ে হাই কোর্টে শুভেন্দু মামলা করেছেন বলেও প্রকাশ্যে সমাবেশে দাবি করেন অখিল। তাঁর খোলা চ্যালেঞ্জ, ১৭টি অঞ্চল নিয়ে রামনগর বিধানসভার সব ক’টি অঞ্চলেই তৃণমূল প্রার্থীরাই জিতবেন। প্রার্থী দিতে পারবেন না বিজেপি। পাল্টা বিজেপির দাবি, যাঁরা তৃণমূলকে ভোট দিয়েছেন, তাঁরা এখন পস্তাচ্ছেন। সুদাম বলেন, ‘‘আমাদের বলতে লজ্জা লাগে উনি এই বাংলার এক জন মন্ত্রী। সাধারণ মানুষ সবটাই দেখছেন। এই মানুষদের যাঁরা ভোট দিয়েছেন, তাঁরা এখন পস্তাচ্ছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE