Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

কলেজে ভর্তির সুপারিশ, ফের নাম জড়াল তৃণমূলের

কলেজে ভর্তির ক্ষেত্রে নাম সুপারিশ করার অভিযোগ উঠল শাসকদলের ছাত্র সংগঠন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের বিরুদ্ধে। সেই সুপারিশে সিলমোহর দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধেও। ঘটনার জেরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুরে। তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন।

এই চিঠি ঘিরেই বিতর্ক।  —নিজস্ব চিত্র।

এই চিঠি ঘিরেই বিতর্ক। —নিজস্ব চিত্র।

বরুণ দে
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০১৫ ০১:০২
Share: Save:

কলেজে ভর্তির ক্ষেত্রে নাম সুপারিশ করার অভিযোগ উঠল শাসকদলের ছাত্র সংগঠন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের বিরুদ্ধে। সেই সুপারিশে সিলমোহর দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধেও। ঘটনার জেরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুরে। তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন।

ঘটনাটি ঠিক কি? অভিযোগ, দিন কয়েক আগে টিএমসিপির কেশপুর কলেজ ইউনিটের প্যাডে কেশপুর কলেজের টিচার ইনচার্জ সুশান্তকুমার দোলুইয়ের কাছে একটি তালিকা পাঠানো হয়। সেই তালিকায় ১২৪ জন উচ্চমাধ্যমিক উত্তীর্ণ ছাত্রছাত্রীর নাম রয়েছে। এঁদের কলেজে ভর্তি করে নিতে সুপারিশ করা হয়। স্থানীয় সূত্রে খবর, ইতিমধ্যে তালিকায় নাম থাকা প্রায় ৪৫ জন কলেজে ভর্তিও হয়ে গিয়েছেন। ওই প্যাডে টিএমসিপি পরিচালিত কেশপুর কলেজ ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক মানস ঘোষের পাশাপাশি সই রয়েছে তৃণমূলের কেশপুর ব্লক সভাপতি সঞ্জয় পানেরও। সঞ্জয়বাবুর সইয়ের ঠিক নীচে কেশপুর ব্লক তৃণমূলের স্ট্যাম্পও দেওয়া রয়েছে। কেন এ ভাবে কলেজে ভর্তির ক্ষেত্রে নাম সুপারিশ? কেশপুর কলেজ ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক মানস বলেন, “আমি কারও নাম সুপারিশ করিনি। ভর্তির ক্ষেত্রে নাম সুপারিশ করতে যাবোই বা কেন? সব চক্রান্ত।” চক্রান্তের গন্ধ পাচ্ছেন তৃণমূলের কেশপুর ব্লক সভাপতি সঞ্জয়বাবুও। তাঁর বক্তব্য, “ওটা আমার সই নয়। সই জাল করা হয়েছে। তাছাড়া, কলেজে অনলাইনে ভর্তি হচ্ছে। নাম সুপারিশ করে হবেই বা কী? ভর্তি তো মেধা- তালিকা ধরেই হবে।” সঞ্জয়বাবু বলেন, “কে কে চক্রান্ত করছে জানি। কলেজ-কর্তৃপক্ষকেই জিজ্ঞেস করে দেখুন না অভিযোগ ঠিক কি না!” সই জাল হলে পুলিশে অভিযোগ জানাননি কেন? এ বার তৃণমূলের কেশপুর ব্লক সভাপতির জবাব, “কলেজ- কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দিয়েছি, আমি এ রকম কোনও প্যাডে সই করিনি। পুলিশকেও জানাচ্ছি।”

অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন কলেজ-কর্তৃপক্ষও। কেশপুর কলেজের টিচার ইনচার্জ সুশান্তবাবু বলেন, “আমি এমন কোনও কাগজপত্র পাইনি। কে কী অভিযোগ করছেন জানি না। মেধা-তালিকা ধরেই কলেজে ভর্তি প্রক্রিয়া চলেছে। সুপারিশে কাউকে ভর্তি করা হয়নি।” কেশপুর কলেজ পরিচালন সমিতির সভাপতি চিত্তরঞ্জন গরাই বলেন, “কারও সুপারিশে কলেজে ভর্তি হয় না। এখন অনলাইন চালু হয়েছে। কেশপুর কলেজেও অনলাইনে ছাত্র ভর্তি প্রক্রিয়া চলেছে। মেধা- তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। সেই তালিকা ধরেই ছাত্রছাত্রীদের ভর্তি নেওয়া হয়েছে।” বিরোধীরা অবশ্য শাসক দলকে বিঁধতে ছাড়ছে না। এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক সৌগত পণ্ডা বলেন, “কলেজে ভর্তির ক্ষেত্রে টিএমসিপির প্রভাব খাটানো নতুন নয়। ওরা যা পারছে তাই করছে।” ছাত্র পরিষদের নেতা মহম্মদ সইফুল বলেন, “টিএমসিপি কারচুপিতে হাত পাকিয়ে নিয়েছে। বাম- আমলে যা দুর্নীতি হত, এখন তার থেকেও বেশি হচ্ছে।” এবিভিপির জেলা সভাপতি স্বরূপ মাইতির বক্তব্য, “সুপারিশ করে কলেজে ভর্তি করানো হলে তো সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের দুশ্চিন্তা আরও বাড়বে। শাসক দলের অনুগতরাই কলেজে ভর্তির সুযোগ পাবে। সেখানে মেধা কোনও মাপকাঠি হবে না। এটা কি হতে পারে?”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

trinamool TMC college barun dey midnapore
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE